ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন পাথরঘাটার হরিণঘাটা-বিহঙ্গ দ্বীপে

এ এস এম জসিম
এ এস এম জসিম, বার্তা সম্পাদক
প্রকাশিত: ০২:৫৬ পিএম, ৪ জুন ২০১৯

বিহঙ্গ দ্বীপে পর্যটকরাঈদের ছুটিতে সবাই পরিবার-পরিজন নিয়ে যেমন সময় কাটাতে পছন্দ করেন, তেমনই প্রকৃতির টানে ছুটেও যান অনেকে। ঈদের ছুটিতে তাই পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে দেখা যায় সৌন্দর্য প্রেমী মানুষের উপচেপড়া ভিড়।

বেড়ানোর জায়গা হিসেবে কারোর পছন্দ নদী-সমুদ্র, কারোর বা আবার পাহাড়। আবার অনেকেই ছুটে যান প্রাকৃতিক কোনো বনাঞ্চলেও। এই ছুটিতে নদী-সমুদ্র-বনাঞ্চল-অরণ্যের আপনি কোথায় যাচ্ছেন।

হরিণঘাটা পর্যটন অঞ্চল
চিরসবুজের মধ্যদিয়ে বয়ে গেছে বনের প্রবেশ করার রাস্তাটি। যার দুই পাশে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে বিশাল আকৃতির বনজ বৃক্ষ। এই বনকে বলা হয় সুন্দরবনের এক অংশ। কারণ এই দুই বনকে আলাদা করেছে একটি মাত্র নদী। বনের আরেক পাশে বলেশ্বর ও বিষখালি নদী গিয়ে মিশেছে বঙ্গোপসাগরে। নদী আর সাগরের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করার সঙ্গে দেখতে পাবেন বিশাল ঝাউবন। এ যেন একের ভিতর দুই। বন দেখার পাশাপাশি সাগরও দেখা হবে। বিশাল এই জায়গাজুড়ে রয়েছে শুধু নীরবতা ও পাখিদের কলরব। নীরবতার মাঝে পাখিদের ডাক ক্ষণিকের জন্য ভুলিয়ে দেয় সব ধরনের যান্ত্রিক কোলাহল ও কর্ম ব্যস্ততা। এখানে দেখা হতে পারে বনের প্রধান আকর্ষণ হরিণ, শূকর ও সাপের সঙ্গে। আনন্দের মাত্রা বাড়াতে দেখা মিলবে দুষ্ট প্রকৃতির বানরেরও। আরো দেখতে পাবেন বিভিন্ন ধরনে পশুপাখি।
বিহঙ্গ দ্বীপে
বিহঙ্গ দ্বীপ
বলেশ্বর নদের মোহনায় নতুন দুর থেকে দেখলে মনে হবে সাগরের মাঝে বড় কোন সবুজ পাহাড়, সাদা বালুচরের লাল কাকড়া লাল গালিচা, দুরে সাদা ধুসর রঙের গাংচিল, বকের সারী, চেগা পাখি। বনের মধ্যে পায়ে হাঁটা পথে কিছুদুর গেলেই পাখির কলোরব আর চোখের সামনেই দৌড়ে পালাবে মায়া হরিনের পাল। এই দ্বীপের চরে বিকালটা বেশি ভালো লাগে, বিকেলের গৌধুলীবেলায় যখন সূর্য সাগরের মাঝে ডুব দেয়, তখন পশ্চিমের আকাশটা সোনালি আভায় কি অদ্ভুত রঙ্গিন আলোয় মাখামাখি করে, চরের পাশে জেলেরা জাল দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশসহ নানা প্রজাতির মাছ ধরে, ইচ্ছা করলে আপনিও খুব অল্প টাকায় মাছ কিনে খেতে পারেন। বিহঙ্গ দ্বীপের চারপাশে অনেক ডুবচর আছে আপনি ইচ্ছা করলে মাইলের পর মাইল সাগরের মাঝে হাঁটুপানির মধ্যে হাঁটতে পারেন।

যেভাবে আসবেন
হরিণঘাটা : ঢাকা খেকে খুব সহজেই আপনি পৌঁছে যেতে পারবেন হরিণঘাটায়। সেক্ষেত্রে ঢাকার প্রধান দুই বাস টার্মিনাল সায়েদাবাদ ও গাবতলী থেকে সরাসরি বাসে করে পাথরঘাটায় পৌঁছাতে হবে অথবা লঞ্চে নৌপথে যেতে হলে সদরঘাট থেকে সরাসরি বরগুনার লঞ্চে উঠে কাকচিড়ায় গিয়ে নামতে হবে। কাকচিড়া থেকে মোটরবাইক অথবা মাহিন্দ্রতে করে আধা ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে পাথরঘাটায় আসতে হবে।
বিহঙ্গ দ্বীপ
বিহঙ্গ দ্বীপ: ঢাকা থেকে লঞ্চে ও গাড়িতে আসতে হবে পাথরঘাটায়, ঢাকা সদরঘাট থেকে বরগুনার লঞ্চেও কাকচিঁড়া ঘাটে নেমে গাড়িতে যেতে হবে পাথরঘাটা সদরে তারপর রূইতা গ্রামে, রূইতা বটতলা থেকে ট্রলার ও নৌকা ভাড়া করে বিহঙ্গ দ্বীপে।

থাকা ও খাওয়ার জায়গা
খুব বেশি উন্নত না হওয়ায় হরিণঘাটায় তেমন কোনো থাকার ব্যবস্থা নেই। রাত্রি যাপন করতে হবে পাথারঘাটায় এসে সরকারি ডাকবাংলো অথবা কোনো আবাসিক হোটেলে। খাবারের জন্য পাথরঘাটায় পর্যাপ্ত পরিমানে রেস্টুরেন্ট আছে। পাথারঘাটা বঙ্গোপসাগরের খুব হওয়ায় এ অঞ্চলের খাবার হোটেল গুলোতে পাবেন সব ধরনের সামুদ্রিক মাছও।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)