সুন্দরবনের খালে আজ থেকে দুই মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০১:০৭ পিএম, ১ জুলাই ২০১৯

ছবিঃ সংগ্রহীতমৎস্য সম্পদ রক্ষায় সোমবার থেকে ( ১ জুলাই) থেকে দুই মাস সুন্দরবনের সব খালে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বন বিভাগ। মাছের ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত ম্যানগ্রোভ এই বনের চারশতাধিক খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করাসহ মৎস্য এবং মৎস্য প্রজাতির অবাধ প্রজনন ও সংরক্ষণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সুন্দরবন বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সুন্দরবনের প্রায় ৬ হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তানের জলভাগের পরিমাণ ১ হাজার ৮৭৪.১ বর্গ কিলোমিটার। যা সমগ্র সুন্দরবনের ৩১.১৫ ভাগ। এই জলভাগে জালের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ১৩টি বড় নদ-নদীসহ ৪৫০টি খাল। জোয়ারের পানিতে সব সময় প্লাবিত হওয়া ম্যানগ্রোভ এই জলভাগে রয়েছে ভেটকী, রূপচাঁদা, দাঁতিনা, চিত্রা, পাংগাস, লইটা, ছরি, মেদ, পাসে, পোয়া, তপসী, লাক্ষা, কৈ, মাগুর, কাইন মাগুর, রূপালী ইলিশসহ ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ।

এছাড়া রয়েছে গলদা, বাগদা, চাঁকা, চালী, চামীসহ ২৪ প্রজাতির চিংড়ি। বিশ্বখ্যাত শিলা কাঁকড়াসহ ১৪ প্রজাতির কাঁকড়াও রয়েছে এখানে। এছাড়াও ৪৩ প্রজাতির মালাস্কা ও এক প্রজাতির লবস্টারসহ রয়েছে। বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ইরাবতীসহ ছয় প্রজাতির ডলফিনও রয়েছে সুন্দরবনের খালে।

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান জানান, সুন্দরবন বিভাগের কাঠ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ রাজস্ব পাশ-পারমিট নিয়ে ও অবৈধ পথে সুন্দরবনের মৎস্য এবং মৎস্য প্রজাতির সম্পদ আহরণ করতে জেলেরা বনে প্রবেশ করে থাকে। সাদা মাছের প্রজনন মৌসুমে মাছের আধিক্য থাকায় এক শ্রেণির জেলে অধিক লাভের জন্য সুন্দরবনের খালগুলোতে বিষ দিয়ে মাছ আহরণ করে। এই বিষ দেওয়ার কারণে খালের ছোট-বড় সব মাছসহ মৎস্য প্রজাতির সকল প্রাণি মারা যায়। খালে বিষ সন্ত্রাসের কারণে মৎস্য এবং মৎস্য প্রজাতির অবাধ প্রজনন ও সংরক্ষণ বিনষ্টের পাশাপাশি সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে।

এই অবস্থা থেকে উত্তরণে আগামী জুলাই-আগস্ট এই দুই মাস সকল খালে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বন বিভাগ। তবে, এই দুই মাস সুন্দরবনের নির্দিষ্ট করে দেওয়া বড়-বড় নদ-নদীগুলো থেকে মাছ আহরণের জন্য জেলেদের সীমিত আকারে পাস-পারমিট দেওয়া হবে। এই সময়ের মধ্যে খালগুলোতে যাতে করে কেউ ঢুকতে বা মাছ আহরণ করতে না পারে সেজন্য কঠোর নজরদারি করবে সুন্দরবন বিভাগ।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)