পাথরঘাটায় সেই নবজাতক ‘দূর্জয়’র দায়িত্ব নিলেন ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত মল্লিক

কাজী রাকিব
কাজী রাকিব, নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৪২ পিএম, ২৩ অক্টোবর ২০১৯ | আপডেট: ০৯:৩০ পিএম, ২৩ অক্টোবর ২০১৯

ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত মল্লিকবরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় ধর্ষিত এক স্কুলছাত্রীর ফুটফুটে শিশু দুর্জয়ের পরিচর্যা ও ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিয়েছেন পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত মল্লিক। এ নিয়ে তিনি তার ফেসবুক ওয়ালে একটি স্ট্যাটাস ও দিয়েছেন।

গত রবিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশুটির জন্ম হয়েছে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে নবজাতকের জন্য নতুন পোশাক নিয়ে সেই হাসপাতালে ছুটে যান সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত মল্লিক।

এরপরপরই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পাথরঘাটা সার্কেল) বি এম আশরাফ উল্লাহ তাহের ও পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন, তদন্ত ওসি সাঈদুল ইসলাম কিশোরী মা ও তার সন্তানের খোঁজখবর নেন। এ ছাড়া বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেনের পক্ষে নগদ ৫ হাজার টাকা তুলে দেন ওই কিশোরীর হাতে। তারা সবাই মিলে নবজাতকটির নাম রাখেন ‘দুর্জয়’।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পাথরঘাটা উপজেলা সম্পাদক মুনিরা ইয়াসমিন খুশি জানান, স্কুলছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর প্রেমিক গাঢাকা দেওয়ার বিষয়টি অভিযোগের ভিত্তিতে আদালতের নজরে আসলে পাথরঘাটার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত মল্লিক সে থেকেই আমার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক স্কুলছাত্রীর খোঁজ খবর করে নেন। নবজাতক ‘দুর্জয়’র পিতৃপরিচয় নিশ্চিত না হয় ততদিন শিশু ‘দুর্জয’ ও তার মায়ের সকল দায়িত্ব ম্যাজিস্ট্রেট স্যার বহন করবে বলেও জানান তিনি।

পাথরঘাটা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন জানান, অভিযুক্ত রাজুকে আটকের জন্য অভিযান চলছে। আদালতের সিদ্ধান্ত নিয়ে শিশু দুর্জয়ের ডিএনএ পরীক্ষা করে পিতৃপরিচয় নিশ্চিত করতে প্রয়োাজনীয় প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তিনি আরও জানান, শিশু ও তার মায়ের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য পুলিশ প্রহরায় আছে।

উল্লেখ্য, কিশোরী মা স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবা দিনমজুর। ছাত্রীর অভিযোগ, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে মাসের পর মাস শারীরিক সম্পর্ক করেন একই এলাকার কলেজছাত্র রাজু আহমেদ। একপর্যায়ে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এর মধ্যেই তাদের সম্পর্কে ভাঙন ধরে। এরপর রাজু চলে যান নিজ ক্যাম্পাস বরিশাল অমৃত লাল দে কলেজে। তিনি ওই কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন। এবার অনার্স শ্রেণিতে ভর্তির চেষ্টা করছে। তার বাবা পাথরঘাটা উপজেলার কাঠালতলী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল জলিল।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)