বেতাগীতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অনিয়মই নিয়ম : বিদ্যালয় বন্ধের উপক্রম

এ এস এম জসিম
এ এস এম জসিম, বার্তা সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৬:৩১ পিএম, ৮ ডিসেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ০৭:১৬ পিএম, ৮ ডিসেম্বর ২০১৯

৯৪ নং পূর্ব গাবতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (ইনসেটে) ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেনসাইফুল ইসলাম (রাফিন), বরগুনা :
বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার ৯৪ নং পূর্ব গাবতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়টি প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন অনিয়ম দূর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতার কারনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বন্ধের উপক্রম হয়েছে ।

বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় ১মও২য় শ্রেণিতে মোট ৮ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়েছে।

২য় শিফটে ৩য় শ্রেণিতে কোন শিক্ষার্থী আসেনি। ৪র্থ শ্রেণিতে ১ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়েছে ।

৫ম শ্রেণি সমাপনি পরীক্ষায় ৫ জন শিক্ষার্থী অংশ গ্রহন করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক ।

তার দাবী বিদ্যালয়ে মোট ৪৬ জন শিক্ষার্থী আছে। প্রাক প্রাথমিক শ্রেণিতে ১২ জনের কথা বললেও কোন শিক্ষার্থী উপস্থিত পাওয়া যায়নি এবং শিক্ষার্থী হাজিরা খাতাও নেই । প্রথম ও তৃতীয় শ্রেণির হাজিরা খাতায় ১৩ নভেম্বরের পরে কোন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নেই । দ্বিতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির হাজিরা খাতায় ৩০ আগষ্ঠের পরে কোন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নেই ।

বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষকের পদ থাকলেও বর্তমানে ৩ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন । শিক্ষক হাজিরা খাতারও একই অবস্থা সহকারী শিক্ষক কামরুন্নাহার সাথী ১২ নভেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত অনুপস্থিত । তবে কি কারনে অনুপস্থিত প্রধান শিক্ষক তা জানাতে পারেন নি ।

স্থানীয় অভিভাবকদের অভিযোগ প্রধান শিক্ষক নিজেও নিয়মিত স্কুলে আসেন না । ফুলঝুড়ি বাজারে তার একটি বই লাইব্রেরি আছে । তিনি নিয়মিত সেখানেই বসেন । মাঝে মাঝে এসে খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যান।

তার বড় ভাই ইউপি সদস্য ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হওয়ায় স্থানীয়রা কোন প্রতিবাদ না করে তাদের সন্তানদের দূরবর্তী স্কুলে ভর্তি করেছেন ।

শুধু পাঠদানে অনিয়মই নয়, আর্থিক দূর্নীতিতেও প্রধান শিক্ষক বেশ পটু। বিদ্যালয়ের নামে বরাদ্ধকৃত ২,০০,০০০ (দুই লক্ষ ) টাকার তিনি প্রায় সবটুকুই আতসাৎ করেছেন ।

তার দাবী তিনি ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ করার সময় বাড়িয়ে এনেছেন, তবে একথার কোন প্রমান দেখাতে পারেননি । বিদ্যালয়ের তিনটি শ্রেনি কক্ষের দুটিতে কোন বেঞ্জ বা শিক্ষা সরঞ্জাম নেই । মাত্র একটি কক্ষে কয়েকটি বেঞ্জ ও দুটি করে চেয়ের টেবিল দেখা গেছে ।

কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দার সাথে কথা বললে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারি স্কুলের এই অবস্থার জন্য দায়ি উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার । তাদের কে নিয়মিত মাসহারা দিয়ে তারা বছরের পর বছর এই অনিয়ম করে আসছে ।

এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো : মিজানুর রহমানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

বেতাগী উপজেলা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)