তাহিরার একটি বছর ফিরিয়ে দিবে কে?

কাজী রাকিব
কাজী রাকিব, নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:০৫ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯

তারিকুল ইসলাম কাজী রাকিব পাথরঘাটা প্রতিনিধি: বরিশাল বিভাগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বরগুনার পাথরঘাটা তাছলিমা মেমেরিয়াল একাডেমি থেকে এসএসসি’তে বিজ্ঞান বিভাগে ৪.৮২ পেয়ে বরগুনা সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন পাথরঘাটা পৌর শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জাকির হোসেন তরু খানের মেয়ে ও জমুনা টেলিভিশন বরগুনা জেলা প্রতিনিধি ফেরদাউস খান ইমনের ছোট বোন মেধাবী ছাত্রী তাহিরা।

এর আগে এইচএসসিতে ঢাকা মাইলস্টোন কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে চাঞ্চ পেয়ে ক্লাস শুরু করে তিনি। এরপর শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে ভারত নিয়ে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হওয়ার পর ঢাকা থেকে ট্রান্সফার করে বরগুনা সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০১৯ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। গত ১৭ জুলাই এইচএসসি’র ফলাফল প্রকাশিত হয়।

ফল প্রকাশের দিন দুপুরে সরকারি মুঠোফোন অপারেটর কোম্পানি টেলিটকে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে তাহিরা জানতে পারেন তিনি জীববিজ্ঞান, রসায়ন ও উচ্চতর গণিতসহ ৩টি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে।

এর প্রায় ৪ মাস পর ২০২০ সালের জন্য ফরম পূরণের জন্য মায়ের কথা মতো শিওর হওয়ার জন্য মনে মনে লজ্জা নিয়ে এইচএসসি’র মার্কশিট উত্তোলন করে তাহিরা। দেখতে পান তিনি কোনো বিষয়েই অকৃতকার্য হননি। বরং তিনি জিপিএ-৩.৮৩ (এ-) পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তবে তাহিরার রোল নম্বর দিয়ে এখন ও টেলিটক এর মধ্যে খুদেবার্তা দিলে তিন বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে বলে দেখাচ্ছে।

ভুক্তভোগী তাহিরা খানম জানান, বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ফল বিভ্রাটের কারণে শিক্ষা জীবন থেকে হারিয়ে গেছে মূল্যবান একটি বছর। আমার বিশ্বাস হয় না এতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এমন ভুল হতে পারে।

তাহিরা আরো জানান, এইচএসসি ফলাফল প্রকাশের কিছুদিন আগে বাবা-মা তাদের পছন্দের পাত্রের কাছে আমাকে বিয়ে দেন। পরিক্ষার ফলাফলে শ্বশুর বাড়িসহ নিজের পাড়া মহল্লা এবং সহপাঠী মহলে নানা তিরস্কারের শিকার হতে হয়েছে আমাকে। তিনি বলেন, আমি যে রেজাল্ট পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি তাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারতাম। কিন্তু বোর্ডের ভুলের কারণে এখন আর তারও সুযোগ নেই।

তাহিরার বড় ভাই ইমন জানান, এইচএসসি’তে ভালো ফল করার জন্য বিজ্ঞান বিভাগের সবগুলো এবং ইংরেজী বিষয়ে প্রাইভেট পড়েন তিনি। গত এপ্রিলে অনুষ্ঠিত এইচএসসি’র সবগুলো বিষয় ভালোভাবেই পরীক্ষা দেন তাহিরা। আশা ছিল ভালো ফলাফল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার। এজন্য তাহিরা ঢাকায় বাসা রেখে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং ও করিয়েছি তাহিরাকে।

তাহিরার মা সেলিনা খানম জানান, তার মেয়ের সবগুলো পরীক্ষা ভালো হয়েছিলো। সে এ প্লাস পাওয়ার আশা করেছিলাম। কিন্তু ফল দেখে পুরো পরিবার খুবই হতাশ হই। এই অপূরণীয় ক্ষতির জন্য যারা দায়ী তাদের কঠোর শাস্তি চান তাহিরার মা। এজন্য তারা আইনের সহায়তা চাইবেন বলেও জানান তিনি।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)