দাফনে সন্তানদের বাধা, বাবার লাশ রাতভর পাহারা দিল কুকুর!

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ১১:০১ পিএম, ৫ জানুয়ারী ২০২০

---

বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি,
বাবার মৃত্যুর পর লাশ দাফন না করেই বিবাদে জড়িয়ে পড়েন সন্তানরা। জমিজমার বণ্টন ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত লাশ দাফন করতে দেবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন তারা। পরে রাতভর দাফন না করেই মসজিদের সামনে পরে ছিল লাশ। মরদেহ পাহারা দিয়েছে বাড়ির কুকুর। 

৩০ ডিসেম্বর বরিশাল বাকেরগঞ্জের দাড়িয়াল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ওই ওয়ার্ডের বিত্তবান আবুল হাসেম খান মারা যাওয়ার পর ছেলেমেয়েরা জমি সংক্রান্ত ভাগাভাগি নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। জমি বণ্টনের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত লাশ দাফন করতে দেবেন না বলে এক ছেলে বলে উঠেন। অন্যরা লাশ দাফন করতে গেলে বাধা দেন ওই ছেলে। 

একপর্যায় স্থানীয় সমজিদের সামনের সড়কের ধারে বাবার মরদেহ ফেলে সব ছেলেরা চলে যান। কিছুক্ষণ এলাকাবাসী লাশ পাহারা দেন। কিন্তু রাত গভীর হলে তারাও যে যার মত চলে যান। পরে আবুল হোসেন খানের লাশ পড়ে ছিল একা।  

এরপর সেখানে আসে একটি বেওয়ারিশ কুকুর। গভীর রাতে মরদেহের পাশে ওই কুকুর ছাড়া আর কেউ ছিল না। পাহারাদারের মতো কুকুরটি সারা রাত মরদেহের পাশেই বসে থাকে। 

এ ঘটনার একটি ছবি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যা বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। 

এদিকে সারারাত সন্তানরা সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারার কোনো সুরাহা করতে না পেরে বাবার মরদেহ দাফন করা থেকে বিরত থাকে। এ খবর পেয়ে এগিয়ে আসেন স্থানীয় চেয়ারম্যান। অবশেষে পুলিশের মধ্যস্থতায় আবুল হাসেম খানের দাফন সম্পূর্ণ করেন ওই চেয়ারম্যান।

এ বিষয় দাড়িয়াল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এমএ জব্বার বাবুল এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ‘ঘটনা যা ঘটছে তা সত্যি। আমি ঢাকায় ছিলাম আমি শুনেছি যে মরদেহের জানাজার জন্য সবাই একত্রিত হয়েছে। এসময় তার ওয়ারিশরা বাবার মরদেহের জানাজা দিতে বাধা দেয়।  তারা জানান, জামাজমি বন্টন না করে মরদেহ জানাজা দেয়া যাবে না। স্থানীয়রা এর সমাধান করতে না পারায় পরদিন আমার লোকজন দিয়ে জানাজা ও মরদেহ দাফনের কাজ সম্পন্ন করি।

বাকেরগঞ্জ থানার ইন্সেপেক্টর মো. জুবাইর জানান, ছোট ছেলে মরদেহ দাফনে বাধা দেয়। পরে খবর পেয়ে আমরা গিয়ে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করি।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)