আমতলীতে চাঁদা না পেয়ে সড়ক কেটে দিল চেয়ারম্যানের বাহিনী, বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ বন্ধ

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০৫:৫০ পিএম, ১৯ জুন ২০২০

ছবিঃ ইন্টারনেট থেকে নেয়াআমতলী প্রতিনিধি
দুই লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে সরকারি সড়ক কেটে দিল বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম মৃধার সন্ত্রাসী বাহিনী। এতে গুরুদল বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক কাম সাইক্লোন শেল্টারের পাঁচতলা ভবনের নির্মাণ সামগ্রী পরিবহন করতে না পারায় নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। ভোগান্তিতে পড়েছে ওই ইউনিয়নের সাত গ্রামের ২০ হাজার মানুষ।

ওই ভবন নির্মাণের কাজ পায় পটুয়াখালীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাজী অ্যান্ড কহিনুর এন্টারপ্রাইজ। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে ঠিকাদার জাহাঙ্গীর বিশ্বাস নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ঠিকাদারের সহযোগী আফজাল মিয়া, জাকারিয়া ও হামিম এবং স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, শুরুতেই মালামাল পরিবহনে বাধা দেয় শহীদুল মৃধার সন্ত্রাসী বাহিনী (৮-১০ জনের এ দলের নেতৃত্বে জুয়েল রাঢ়ী ও রেজাউল মোল্লা)। ওই সময় তারা চেয়ারম্যানের নির্দেশে দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া সড়কে বেড়া দিয়ে মালামাল পরিবহনে বাধা দেয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পরশিয়া বেগম বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি সেখানে এসে সড়কের বেড়া তুলে দেন। আফজাল মিয়া ও জাকারিয়া বলেন, চার মাস ধরে নির্মাণ কাজ ভালোই চলছিল। শুক্রবার আরও নির্মাণ সামগ্রী আনা হয়। সামগ্রী বোঝাই জাহাজ বাঁশবাড়িয়া খালে নোঙর করা রয়েছে। খবর পেয়ে জুয়েল রাঢ়ী ও রেজাউল মোল্লা দুই লাখ টাকা চাঁদা চায়। না দিলে সড়ক দিয়ে মালামাল পরিবহন করতে দেবে না বলে জানিয়ে দেয়। বুধবার জুয়েল ও রেজাউলসহ ৮-১০ জন সন্ত্রাসী সড়ক কেটে দেয়। ঠিকাদার জাহাঙ্গীর বিশ্বাস বলেন, নির্মাণ সামগ্রী পরিবহন করতে না পেরে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। ৭ দিন ধরে জাহাজ খালে নোঙর করা।

বৃহস্পতিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া সড়কটি কাটা। কাটা স্থানে গাছের গুঁড়ি ফেলে স্থানীয় লোকজন চলাচল করছে। বিকল্প সড়ক না থাকায় যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। নির্মাণ সামগ্রী বোঝাই জাহাজ খালে নোঙর করা। ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ।

স্থানীয়রা জানান, সড়ক কাটতে নিষেধ করলে তাদের সন্ত্রাসীরা জীবননাশের হুমকি দিয়েছে। বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালেও তিনি কর্ণপাত করেননি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পরশিয়া বেগম বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) এ বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

জানতে চাইলে জুয়েল রাঢ়ী চাঁদা দাবির কথা অস্বীকার করেন। তিনি মুঠোফোনে বলেন, নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনে বাধা দেয়ার জন্য সড়ক কাটা হয়নি। বক্স কালভার্ট নির্মাণের জন্য সড়ক কাটা হয়েছে। তবে কালভার্ট নির্মাণ সামগ্রী না এনে সড়ক কেটে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জবাব দেননি।

হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শহীদুল ইসলাম মৃধা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বক্স কালভার্ট নির্মাণের জন্য সড়ক কাটার সময় আমার সহযোগী জুয়েল রাঢ়ীকে ঠিকাদারের লোকজন মারধর করেছে। জুয়েল বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আমতলী থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।

তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভীন বলেন, বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ কাজে বাধা মেনে নেয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, ওই সড়কে বক্স কালভার্ট নির্মাণের কথা রয়েছে। তবে বিদ্যালয় ভবনের মালামাল পরিবহনের জন্য বিকল্প সড়ক না করে সড়ক কেটে দিলে তা অন্যায়।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)