বরগুনায় স্কুল ছাত্রীর ইজ্জতের মূল্য এক লাখ পচিশ হাজার টাকা নির্ধারণ করলেন জনপ্রতিনিধি!

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০৬:০৮ পিএম, ৯ ডিসেম্বর ২০২০

এই ছবিটি প্রতিকীনবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের বিচার এক লাখ পচিশ হাজার টাকা। স্কুল ছাত্রীর বাবা মামলা করতে এসেও স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান মামলা করতে দেয়নি। গত বৃহস্পতিবার রাতে ধর্ষক হৃদয়ের বাবার নিকট থেকে চেয়ারম্যান জরিমানার অর্ধেক টাকা আদায় করে নিজের কাছে রাখার অভিযোগ রয়েছে।

স্কুল ছাত্রীর বাবা যাদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা হল, বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ইটবাড়ীয়া গ্রামের মজিদ সিকদারের ছেলে হৃদয় (২৭) হেউলিবুনিয়া গ্রামের সুলতান গাজীর ছেলে রাসেল ও (৩০) হৃদয়ের বন্ধু জলিল মাঝির ছেলে রাব্বি (২০)।

জানা যায়, বরগুনা সদর উপজেলার নলী চরকগাছিয়া গ্রামের স্কুল ছাত্রীর বাবা বশির সিকদার গত ৩০ নভেম্বর বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে এসে অভিযোগ করেন, তার নাবালিকা মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। গত ২৭ নভেম্বর সকাল অনুমান নয়টার সময় তাঁর মেয়ে প্রতিবেশী লিজার নিকট প্রাইভেট পড়ার জন্য রাস্তার উপর দাড়ায়। এমন সময় হৃদয়ের নেতৃত্বে অন্যান্যরা দুইটি মোটরসাইকেলে এসে স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ করে গলায় চাকু ধরে খুনের ভয় দেখিয়ে অপহরণ করে তালতলী উপজেলার লাউপাড়া গ্রামে হৃদয়ের মামাত বোন খাদিজার বাড়ীতে নিয়ে যায়। স্কুল ছাত্রীকে খাদিজার বাড়ীতে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরের দিন স্কুল ছাত্রী হৃদয়ের ফোন দিয়ে তার ফুফু মাকসুদাকে ফোন দিয়ে জানায়। মাকসুদা ফোন পেয়ে ২৮ নভেম্বর স্কুল ছাত্রীকে হৃদয়ের দখল থেকে উদ্ধার করে।

স্কুল ছাত্রীর বাবা বশির খলিফা জানান, আমি ৩০ নভেম্বর অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে উকিলের চেম্বারে যাই। বিচারক ছুটিতে থাকার কারনে মামলা লেখা সম্পন্ন করেও মামলা করতে পারিনি। বাড়ী যাবার পরে স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক আমাকে ডেকে আপোস করে দেয়। চেয়ারম্যান বলেছে আমাকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা অপরাধীরা দিবে এবং হৃদয়কে বিচার করবে। আমি রাজি না হলেও আমার মেয়ের নানা রাজি হয়েছে। হৃদয় আমার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। অন্যরাও আমার মেয়েকে অপহরণ করেছে। চেয়ারম্যান আজিজুল হক বলেন, হৃদয়ের অভিভাবক ও অন্যান্যরা আমার কাছে বৃহস্পতিবার অর্ধেক টাকা জমা দিয়েছে। বাকি টাকা জমা দিলে আমি মেয়ের বাবাকে দিয়ে দেব। আমি ওদের বিচারও করব। হৃদয়ের ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি।

এ বিষয়ে বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেএম তারিকুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে আমার কোন তথ্য জানা নেই। মামলা হলে আমি আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারতাম। তবে এটি জঘন্য অপরাধ।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)