পাথরঘাটায় বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ও ছাত্রীদের ওয়াসরুম দখল করে প্রধান শিক্ষকের সপরিবারে বসবাস

এ এস এম জসিম
এ এস এম জসিম, বার্তা সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৫:১১ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১

ছবিঃ পাথরঘাটা নিউজবরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার জালিয়াঘাটা এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনটি শ্রেণিকক্ষ ও ছাত্রীদের ওয়াসরুম দখল করে সপরিবারে বসবাস করছেন প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌস।

রোববার বিকেলে সাংবাদকর্মীরা সংবাদ সংগ্রহে গেলে তাদেকে চলে যেতে বলেন এবং তিনি দীর্ঘ ৬ বছর ধরে ওই শ্রেণী কক্ষ দখল করে আছেন বলেও তিনি জানা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৩ তালা বিশিষ্ট ওই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তালার পশ্চিম পাশের ৩ টি শ্রেণিকক্ষ ও বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ব্যাবহৃত ওয়াসরুম দখলে নিয়ে পরিবাদের সদস্য স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে দীর্ঘ ৬ বছর ধরে বসবাস করছেন প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌস। ওই ৩টি শ্রেণীর কক্ষের বেঞ্চ একত্রিত করে বানিয়েছেন খাট এবং কিছু বেঞ্চ একত্রিত করে রেখেছেন অন্যান্য মালামাল। রান্নার জন্যে বারান্দার এক কোনে চুলা বসিয়ে তার পাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ মার্চের স্বাধীনতা দিবস ও ১৫ই আগস্টের শোক দিবসের ব্যানার ছিরে বেড়া দিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনী ২ শিক্ষার্থী ও ষষ্ঠ শ্রেণীর ২ শিক্ষার্থী জানান, আমাদের শুরু থেকেই স্যার আমাদের শ্রেণি কক্ষগুলো আটকিয়ে
তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে থাকছেন। ছাত্রীদের ওয়াসরুমটাও দখলে নিয়েছে। ওই ছাত্রীরা ছেলেদের ওয়াসরুম ব্যাবহার করছেন। তাছারা তার নিধারিত ৩ থেকে ৪ জন ছাত্র-ছাত্রী ছারা তাদের রুমে কেউ ডুকতে পারে না। অনেক ছাত্রী ওই ওয়ারুমে গেলে তার সামনেই স্যারের খাট রাখা আছে সেখানে থাকেন তাই লজ্জায় ভিতরে যেতে পরেন না। আমরা কিছু বললে আমাদের মারধর ও ট্রানেসফার সার্টিফিকেট (টিসি) দিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয় তাই ভয়েও কিছু বলেতে পারি না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি শ্রেণী কক্ষগুলো দখল করে বসবাস করছেন। তিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের
ম্যানেজ করেই এগুলো করেছেন। তারা কিছু বললেও হয়রানীর শিকার হতে হয়।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌস শ্রেণি কক্ষ দখলের কথা স্বীকার করে সাংবাদিকদের ধমক দিয়ে বলেন, আমি সব কিছু ম্যানেজ করেই ৬ বছর ধরে থাকছি।
আপনারা নিউজ করে যা করার করেন, দেখি আমার কি হয়। বঙ্গবন্ধুর ছবি ও ব্যানারের বেড়া দিয়ে রান্না করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন এবং সাথে সাথেই ভিতরে গিয়ে সেগুলো সরিয়ে ফেলেন। যার ভিডিও চিত্র সাংবাদিকদের মুঠোফোনে ধারণ করা হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সে বঙ্গবন্ধুর ছবি ছিরে সেগুলো দিয়ে বেড়া দিয়েছে এটা
আমরা জানতে পেরেছি, এটা সে বড় অন্যায় করেছে। আমরা বিষয়টি উপজেলা আওয়ামী লীগকে জানাবো। সে অনেক বছর ধরেই শ্রেনি কক্ষ দখল করে এখানে পরিবার
নিয়ে থাকেন।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমি জানি উনি বাসা নিয়ে থাকেন। উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বলেছি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখতে।

পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মাদ আল মুজাহিদ জানান, বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের শ্রেণী কক্ষ দখল করে পরিবার নিয়ে থাকার কোন সুযোগ নেই। এ বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ডেকে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)