চিকিৎসার নামে প্রতারণাবিড়ি ফকির-এর আস্তানা ভাঙচুর

আকন মোঃ বসির
আকন মোঃ বসির, প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৩:৩২ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ | আপডেট: ০৩:৩৭ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

অনলাইন ডেস্কঃ বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় কথিত এক নারী ফকিরের বিরুদ্ধে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ক্ষুব্ধ লোকজন গত শুক্রবার রাতে হামলা চালিয়ে তাঁর আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। এ সময় ওই নারীকে পিটিয়ে আহত করা হয়।

ওই নারী হলেন উত্তর পালরদী গ্রামের হাসি বেগম (৪৮) ওরফে বিড়ি ফকির। খবর পেয়ে শুক্রবার রাতেই পুলিশ গিয়ে মো. মতিয়ার নামের এক সহযোগীসহ তাঁকে আটক করেছে।
গৌরনদী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাজাহারুল ইসলাম বলেন, প্রতারণার শিকার স্থানীয় লোকজন শুক্রবার রাতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে হাসি বেগমের আস্তানা গুঁড়িয়ে দেন। এ সময় তাঁরা হাসি বেগমকে মারধর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে হাসি বেগম ও মতিয়ারকে আটক করে। এ সময় আস্তানা থেকে দুটি বাঘের মূর্তি, গরুর হাড়সহ প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত উপকরণ জব্দ করে পুলিশ।
স্থানীয় লোকজন বলেন, হাসি বেগম ২০০৭ সাল থেকে স্বপ্নে সৃষ্টিকর্তার অলৌকিক আশীর্বাদ পেয়েছেন বলে কয়েকজন সহযোগী দিয়ে প্রচারণা চালান। হাসি বেগম যেকোনো মানুষের অতীত ও ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারেন বলে প্রচারণা চালানো হয়। বলা হয়, তিনি সব রোগমুক্তির চিকিৎসাও করতে পারেন। এ প্রচারণা চালানোর পর গৌরনদীসহ আশপাশের উপজেলা থেকে হাসি বেগমের কাছে রোগী আসা শুরু করে। এ সুবাদে তিনি দাস বাড়ির সেতুর গোড়ায় আস্তানা গড়ে তোলেন। তিনি এ আস্তানায় বসে একের পর এক বিড়ি
ফুঁকতে থাকেন। এ কারণে তাঁর নাম হয় বিড়ি
ফকির।
স্থানীয় মো. জামাল উদ্দিন, জাহাঙ্গীর হোসেন, আবদুর রবসহ কয়েকজন বলেন, হাসি বেগমের আস্তানায় চিকিৎসার নামে প্রতারণার পাশাপাশি অসামাজিক কর্মকাণ্ড ও মাদকের আড্ডা বসে। প্রতারণা টিকিয়ে রাখতে হাসি বেগম ক্ষমতাসীন দলের কিছু উঠতি নেতাকে নিয়মিত মাসোহারা দেন। এ কারণে ভয়ে কেউ কিছু বলেন না।
উজিরপুর উপজেলার বামরাইল গ্রামের গৃহবধূ আলেয়া বেগম বলেন, ‘আমি চিকিৎসার জন্য বিড়ি ফকিরের কাছে যাই। তিনি প্রথমে ১০১ টাকা ফি নেন। পরে তেল ও পানি পড়া দিয়ে ১ হাজার ১০০ টাকা নেন। এতে সুফল না পেয়ে আবার গেলে গোসল দেওয়ার নামে ৮ হাজার ৬০০ টাকা হাতিয়ে নেন।’
আগৈলঝাড়া উপজেলার রাংতা গ্রামের মফসের আলী বলেন, ‘পেটে ব্যথা হওয়ায় বিড়ি ফকিরের কাছে যাই। চিকিৎসা দেওয়ার নাম করে তিনি আমার কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।’
একই ধরনের অভিযোগ করেন গৌরনদীর বাটাজোর গ্রামের রাবেয়া বেগম, নলচিড়া গ্রামের মমতাজ বেগম ও খাঞ্জাপুর গ্রামের সাফিয়া বেগম।
গৌরনদী পৌর এলাকার মিজান সরদার ও ফারুক হোসেন বলেন, তাঁরা গত শুক্রবার সকালে বিড়ি ফকিরের আস্তানায় গিয়ে ১০১ টাকা দিয়ে নাম তালিকাভুক্ত করেন। ফকির তাঁদের অতীত সম্পর্কে যা বলেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও মনগড়া। তাঁরা বিষয়টি থানায় জানান।
এসব বিষয়ে থানায় আটক থাকা অবস্থায় হাসি বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি স্বপ্নে একজনের নির্দেশে সেবা দিই। এতে প্রতারণা নেই।

সুত্রঃ প্রথম আলো/ এ এম বি/ পাথরঘাটা নিউজ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)