চার বছর মর্গে থাকার পর লাইজুর লাশ দাফন

সাকিব আল-আরজু
সাকিব আল-আরজু, প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:০৫ পিএম, ৬ মে ২০১৮

---
সাকিব আল আরজুঃ হোসনে আরা বেগম লাইজু মারা গিয়েছেন ২০১৪ সালের ১০মার্চ। এত দিন লাশ সংরক্ষিত ছিল রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে। শেষকৃত্য কোন ধর্মমতে হবে, তা নিয়ে এত দিন মামলা চলমান ছিল।

হাইকোর্টের নির্দেশ শেষে আজ শুক্রবার লাইজুর লাশ তাঁর শ্বশুরের কাছে ইসলামি রীতি অনুযায়ী সমাহিত করার জন্য হস্তান্তর হয়। গত ১২ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরীর একক বেঞ্চ এ নির্দেশ দিয়েছিলেন।

রংপুর হাসপাতালের মর্গ থেকে আজ লাশ হস্তান্তরের পর বিকেলে নীলফামারীর ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) উপস্থিতিতে স্বামীর কবরের পাশে লাইজুর লাশ দাফন করা হয়।হোসনে আরা বেগম লাইজুর আগের নাম নীপা রানী রায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তিনি নীলফামারীর ডোমার উপজেলার খামার বামুনিয়া গ্রামের অক্ষয় কুমার রায়ের মেয়ে। কিন্তু ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর একই উপজেলার পূর্ব বোড়াগাড়ী গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে হুমায়ুন ফরিদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের জেরে পালিয়ে বিয়ে করেন নীপা। এ জন্য তিনি ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হন এবং হোসনে আরা বেগম লাইজু নাম ধারণ করেন।

পুলিশ সূত্র আরও জানায়, ধর্মান্তরিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে নীপা রানীর বাবা অক্ষয় কুমার রায় ২০১৩ সালের ২৮ অক্টোবর নীলফামারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলার পর স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ের সকল কাগজপত্রসহ আদালতে জমা দেন লাইজু। পরে আদালত অপহরণ মামলাটি খারিজ করে দেন।

এরপর ২০১৪ সালের ১৫ জানুয়ারি হ‌ুমায়ূন ফরিদ বিষপান করে আত্মহত্যা করেন। একই বছর ১০ মার্চ কীটনাশক পানে মৃত্যু হয় লাইজুর। লাইজুর মৃত্যুর পর শ্বশুর জহুরুল ইসলাম ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক তাঁকে দাফন ও বাবা অক্ষয় কুমার রায় হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে মেয়ের সৎকারের জন্য নীলফামারী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে লাইজুর মরদেহ তার শ্বশুরের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন। এদিকে এই আদেশের বিরুদ্ধে লাইজুর বাবা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরেই থেকে যায়।

আজ বেলা সাড়ে ১১টায় হাসপাতালের পরিচালক অজয় কুমার রায় শ্বশুর জহুরুল ইসলামের কাছে লাইজুর লাশ হস্তান্তর করে। এ সময় ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে ফাতেমা, ডোমার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইবব্রাহীম খলিল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জহুরুল ইসলাম তাঁর পুত্রবধূর মরদেহ নেওয়া সময় সাংবাদিকদের বলেন, পারিবারিক কবরস্থানে ছেলের কবরের পাশে লাইজুকে দাফন করা হবে।

সুত্রঃ প্রথম আলো।

---

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)