যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে পিছিয়ে নেই বরিশালের ইমরান

আকন মোঃ বসির
আকন মোঃ বসির, প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০২:৩০ এএম, ১০ মে ২০১৮

আরিফুজ্জামান আল ইমরান
যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে গঠন করা হবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও কেন্দ্রীয় কমিটি।’ আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা যখন এই কথা বলছেন, তখন আশায় বুক বাঁধছেন ছাত্রলীগের একাধিক ত্যাগী নেতা। শেষ পর্যন্ত এ দুই কমিটির শীর্ষ পদ থেকে কাদের ঠাঁই হচ্ছে, সে হিসাব মেলানোই এখন মুখ্য ছাত্রলীগের রাজনীতিতে। তবে যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে পিছিয়ে নেই বরিশালের আরিফুজ্জামান আল ইমরান তিনি বর্তমানে উপ-অপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

আগামী ১১ ও ১২ মে অনুষ্ঠিত হবে ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন। এর আগে গত ২৯ এপ্রিল শেষ হয়েছে ঢাবি শাখার সম্মেলন। যদিও এখন পর্যন্ত কমিটি ঘোষণা করা হয়নি ছাত্রলীগের সুপার ইউনিট বলে পরিচিত এই শাখার। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ (সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক) পদ পেতে পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে চলছে নেতৃত্বের দৌড়ে

 

এদিকে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসার যোগ্যতা নিয়ে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। যোগ্য এবং মেধাবীরাই ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসবেন বলে ঢাবির সম্মেলনে এসে বলেছেন ওবায়দুল কাদের। সম্মেলনে তিনি বলেন, ছাত্রলীগে কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না। বহিরাগতরাও ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসতে পারবেন না। শুধু তাই নয়; দুশ্চরিত্রবানদেরও ছাত্রলীগের কমিটিতে আনা হবে না বলেও জানান তিনি।

ওবায়দুল কাদেরের এই ঘোষণার একদিন পর আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতাদের এক বৈঠকে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বে কারা আসবেন, তা নিয়েও কথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সম্মেলনে কোনো প্রার্থীর নাম প্রস্তাব ও সমর্থনের প্রয়োজন নেই। যোগ্যতার ভিত্তিতে পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড ও মেধার বিবেচনায় সিলেকশন পদ্ধতিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের এই কথার ওপর ভিত্তি করে ছাত্রলীগের ঢাবি ও কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ নেতা নির্বাচন করা হবে। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের এমন বক্তব্যের পর যোগ্য ও মেধাবী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। অনেকেই মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের ফলে অনুপ্রবেশকারীরা মাথাচাড়া দিতে পারবে না। দলের মধ্যে অনেক দক্ষ ও যোগ্য নেতাকর্মী রয়েছে, যাদের পরিবার আগে থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তারাই ছাত্রলীগের এই শীর্ষ চার নেতৃত্বে আসতে পারবে।

এদিকে ঐতিহ্য অনুযায়ী, ছাত্রলীগের সম্মেলনে নেতৃত্ব নির্বাচনে কয়েকটি বিষয় দেখা হয়। এর মধ্যে রয়েছে পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড, বয়স, নিয়মিত ছাত্র, সংগঠনের জন্য ত্যাগ এবং এলাকা। এ ছাড়া সংগঠন পরিচালনায় দক্ষতাকে এবারের সম্মেলনে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এ সকল বিষয়ে পিছিয়ে নেই বরিশালের ইমরান

গত কয়েকটি সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরই সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃত্বে (কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাবির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক) রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বরিশাল অঞ্চল থেকে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুজন নেতৃত্বে থাকে। এর বাইরের অন্যান্য অঞ্চল থেকে বাকি দুজন নেতৃত্বে আসছেন। এবারের সম্মেলনকে ঘিরে এই হিসাব ধরেই আশায় বুক বেধেছেন দক্ষিনাঞ্চল বাসী

২৯তম জাতীয় সম্মেলনে (কেন্দ্র ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) নেতৃত্ব নির্বাচনে অন্যান্য যোগ্যতার পাশাপাশি এলাকার বিষয়টি বিশেষ প্রাধান্য পাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বৃহত্তর বরিশাল, চট্টগ্রাম অঞ্চল, উত্তরবঙ্গ ও ফরিদপুর অঞ্চল আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। এ ছাড়া বৃহত্তর খুলনা, সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চল থেকেওনেতৃত্ব নির্বাচন হতে পারে।

ছাত্রলীগের ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, সর্বশেষ ১৯৯৪ সালে বরিশাল অঞ্চল থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ নেতৃত্ব আসে। সে বছর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগে এ কে এম এনামুল হক শামীমকে সভাপতি (ফরিদপুর অঞ্চল) এবং ইসহাক আলী খান পান্নাকে (বরিশাল অঞ্চল) সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এরপর দীর্ঘ ২৪ বছর বরিশাল অঞ্চল থেকে সংগঠনটিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসেনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে প্রায় নিয়মিত এই অঞ্চল থেকে নেতৃত্বে এলেও এ বছর কেন্দ্রের নেতৃত্বে এ অঞ্চলটিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।

ছাত্রলীগের সর্বশেষ সম্মেলন ২৮তম অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালের ২৫ ও ২৬ জুলাই। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে সাইফুর রহমান সোহাগকে সভাপতি ও এস এম জাকির হোসাইনকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর আগে ১১ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সম্মেলন শেষে ১৮ জুন আবিদ আল হাসানকে সভাপতি এবং মোতাহার হোসেন প্রিন্সকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়।

২৯তম সম্মেলনে বরিশাল অঞ্চল থেকে নেতৃত্বের আলোচনায় আছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির , আপ্যায়ন বিষয়ক উপসম্পাদক আরিফুজ্জামান আল ইমরান, ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবিদ আল হাসান, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মো. রুহুল আমিন, আইন বিষয়ক সম্পাদক আল-নাহিয়ান খান জয়, কৃষি শিক্ষা সম্পাদক বরকত হোসেন হাওলাদার, প্রচার বিষয়ক উপ-সম্পাদক সাইফুর রহমান সাইফ, সহ-সম্পাদক খাদেমুল বাশার জয়, ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক ইয়াজ আল রিয়াদ, উপ-কৃষি শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আরিফ আলী।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন পাথরঘাটার কৃতি সন্তান আরিফুজ্জামান আল ইমরান। ইতিমধ্যেই বরগুনা জেলাসহ বরিশালের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে ছাত্রলীগের নেতারা ঢাকায় অবস্থান করছনে এবং তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে কাঙ্খিত পদে আসিন করার জন্য জোর দাবি চালাচ্ছেন। ছাত্রলীগ নেতাদের দাবি শুধু পাথরঘাটাই নয়। বরিশাল বিভেিগর সকল নেতাকর্মীই আরিফুজ্জামান আল ইমরানকে সাধারন সম্পাদক হিসেবে দেখতে চায়

আরিফুজ্জামান আল ইমরান এর জীবনী

আরিফুজ্জামান আল ইমরান ছাত্রজীবনে পাথরঘাটা কলেজে অধ্যায়ন কালে (২০০৮-১১সাল) পর্যন্ত পাথরঘাটা কলেজ শাখার সহ-সভাপতি, ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে অধ্যায়ন কালে (২০১৩-২০১৮ সাল) হাজী মহসিন হলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-অপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

আরিফুজ্জামান আল ইমরানের ভাই মো. আসাদুজ্জামান নাদিম ছাত্রজীবনের শুরুর দিকে (২০০৪ থেকে ২০…) পাথরঘাটা কলেজের সহ-সভাপতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ১নম্বর যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক।

আরিফুজ্জামান আল ইমরানের বাবা মো. মতিউর রহমান, ১৯৮৮ সাল থেকে ২০০৪ পর্যন্ত ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি, ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত কালমেঘা ইউনিয়নর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
এ এম বি। পি এন

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)