সবার প্রিয় ঈশিতা এখন কেমন আছেন ?

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০২:৫০ এএম, ২ জুন ২০১৮

ঈশিতা
চার বছর পর অভিনেত্রী ঈশিতা কলকাতায় ‘কাঠপেন্সিল’ নামের একটি টেলিছবির শুটিংয়ে অংশ নিয়ে চমকে দেন। এতে তিনি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনয় করছেন। এখনো এর শুটিং শেষ হয়নি। সম্প্রতি মুখোমুখি হয়েছিলেন গণমাধ্যমের। অনেক প্রশ্নের উত্তর দিলেন সাবলীলভাবে।

* প্রায় চার বছর ধরে টানা অভিনয় করেননি। যে কারণে অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, আপনি বোধহয় অভিনয়ে আর ফিরবেন না। তারপরও সম্প্রতি কাঠপেন্সিল নামের একটি নাটকের অভিনয়ে যুক্ত হয়েছেন।
** হ্যাঁ, অনেকটা দিনই অভিনয়ের বাইরে ছিলাম। কিন্তু ফিরে আসা কিংবা অভিনয়ে যুক্ত হওয়া— এগুলো নিয়ে তেমন কিছু বলার নেই। বলতে পারেন, হঠাৎ করে একটি স্ক্রিপ্ট হাতে এল, তা ভালো লাগল। এরপর দেখলাম, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো শক্তিমান অভিনেতা এ নাটকে কাজ করছেন। তাই নাটকটিতে অভিনয় করছি।
ঈশিতা
* কত দূর এগোল ওই নাটকের কাজ?
** ঈদসহ নানা কারণে এ নাটকের শুটিং এখন বন্ধ। ঈদের পরই বাকি শুটিং শেষ হবে। আর আগামী কোরবানির ঈদে আশা করছি প্রচার হবে।

* আপনাকে নিয়ে এখনো দর্শকের বেশ আগ্রহ। তাদের প্রত্যাশা পূরণে নিয়মিত কাজ করবেন কিনা?
** আসলে দীর্ঘ সময় ধরে অভিনয়ে না থাকার তো একটাই কারণ— আমার সন্তান, পরিবার। ওরা এখনো ছোট, তাই ওদের পেছনেই পুরো সময় দিতে হচ্ছে। তাছাড়া ভালো কাজ তো অবশ্যই করতে চাই। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা, সবকিছু একহাতে সামলে নেয়া। আশা করছি, আমার সন্তানরা আরেকটু বড় হলে হয়তো একটু বেশি অভিনয়ে যুক্ত থাকতে পারব।

* কখনো কখনো বলতে শোনা যায়, মিডিয়ায় আপনাদের মতো শিল্পীরা অনিয়মিত হওয়ার কারণেই বর্তমান সংকটের অন্যতম কারণ। আপনার কী অভিমত?
** এখানে আমার একটি কথা বলার আছে, আগে যখন ১০টা কাজ হতো, তখন সর্বোচ্চ ভালো হলে ১০টিই হতো, আর খারাপ হলেও ওই ১০টি। কিন্তু এখন কাজ হয় হাজার হাজার। তো স্বাভাবিকভাবেই যখন কাজের পরিধিটা বড় হয়, তখন ভালোর সংখ্যাটাও বেশি হয়; খারাপের সংখ্যাটাও বেশি হয়। আমি যতটুকু টেলিভিশন দেখি, তাতে আমার ব্যক্তিগত ধারণা— এখনকার নির্মাতা, অভিনেতারা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি প্রস্তুতি নিয়ে মিডিয়ায় আসেন। তারা বেশ ভালোও করছেন, এগিয়ে যাচ্ছেন। আমি তো মিডিয়া নিয়ে আশাবাদী।

* বিটিভির অন্যতম জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘নতুন কুঁড়ি’র মাধ্যমে বের হওয়া শিল্পীদের অনেকেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আপনিও এ নতুন কুঁড়ির সৃষ্টি। এখন এ রকম প্লাটফর্ম নেই বললেই চলে। শিশুদের তৈরি করতে কী করা উচিত বলে মনে করছেন?
** এখন শিশুদের নিয়ে অনেক ধরনের প্রতিযোগিতা হচ্ছে। কিন্তু তারা নিজেদের প্রস্তুত করতে সময় পাচ্ছে না; তার আগেই তাদেরকে প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হচ্ছে। একজন মানুষকে প্রস্তুতি নেয়ার সময় তো দিতে হবে। আমার মনে হয়, তাড়াহুড়ো না করে যদি সময় নিয়ে এ প্রতিযোগিতাগুলোর আয়োজন করা হয়, তাহলে শিশুরা নিজেকে প্রস্তুত করার সুযোগ পাবে, ভুল শোধরানোর সময় পাবে। আমরা কিন্তু ফি বছর নতুন কুঁড়ি করিনি। মাঝখানে বিরতি দিয়ে নিজেদের প্রস্তুত করেই সামনে এসেছি।

* নতুন করে নতুন কুঁড়ির মতো প্লাটফর্ম তৈরির জায়গাটা কেমন হতে পারে?
** নতুন কুঁড়ির আদলেই যদি কিছু করা হয়, তাহলে খুব একটা উপকার হবে কিনা, এ নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। কারণ এখন সবকিছুর পরিধি অনেক বড়। আমাদের সময় নতুন কুঁড়ি যদি খারাপ কিছু করত, তবুও করার কিছু ছিল না। কারণ চ্যানেল ছিল একমাত্র বিটিভি; বিটিভিই দেখতে হতো। এখন যেহেতু অজস্র সুযোগ, তাই এ চ্যানেলের চেয়ে ওই চ্যানেলে সামান্য ভালো কিছু হলেই চ্যানেল বদলে দেয়া যায়। মোটকথা, টিভি পর্দায় মনোযোগ ধরে রাখাটাই বিরাট চ্যালেঞ্জের। তাই নতুন করেই ভাবতে হবে।

* দীর্ঘ সময় ধরে মিডিয়ায় আপনি কাজ করেছেন। কতটুকু তৃপ্ত বলে মনে করেন?
** আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে, দর্শক আমাকে হয়তো ভালোবাসত। এখনো সবাই যেভাবে মনে করেন, পছন্দ করেন, তা আমার ভাগ্য। কারণ আমি অনেক আগে বিয়ে করে ফেলেছি, এরপর লেখাপড়ার পেছনে সময় দিয়েছি এবং আমার ধারণা, আমার সমসাময়িক সবার চেয়ে আমিই সবচেয়ে কম কাজ করেছি। তারপরও দর্শকের ভালোবাসায় আমি সন্তুষ্ট। এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। তাই আমার কোনো দুঃখ নেই।
ঈশিতা
* আপনার মিডিয়ায় নিয়মিত থাকা কতটুকু জরুরি ছিল বলে মনে করেন?
** আমার মনে হয়, জীবনের সব ক্ষেত্রেই কোন জিনিসটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা আগে ঠিক করতে হবে। যেহেতু আমি এখন একজন মা, সেহেতু আমার সত্তাজুড়ে সেটাই থাকতে হবে, তারপর অন্য কিছু। আবার যখন দীর্ঘসময় সাংস্কৃতিক জগতে কাজ করেছি, তখন তো শুধু তা-ই করেছি। এখনো যতটুকু সম্ভব, গানের চর্চা, কবিতা আবৃত্তি, সবই করে যাচ্ছি। তবে যে কাজগুলো অনেকে মিলে করতে হয়, সেগুলোই কেবল করছি না।

* আপনি আপনার সন্তানদের আপনার মিডিয়া জগৎ সম্পর্কে ধারণা দিতে কতটুকু ইচ্ছুক? আপনি কি চান আপনার সন্তান মিডিয়ায় আসুক?
** ওভাবে এখনো ভেবে দেখিনি। তাই এ নিয়ে কিছু বলাও সম্ভব নয়। তবে আমার মনে হয়, ওরা যতটুকু জানার, তা এমনিতেই জেনে যাবে। কারণ ওদের সবচেয়ে বড় পরিচয় আমি ওদের মা। এর চেয়ে বড় পরিচয় আর কিছু হতে পারে!

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)