দ্বীনের প্রাণশক্তিই তাক্বওয়া অবলম্বনঃ ছারছীনার পীর ছাহেব

কাজী রাকিব
কাজী রাকিব, নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:০৪ পিএম, ৪ জুন ২০১৮

ছারছীনা পীর সাহেব
পাথরঘাটা নিউজঃ আমীরে হিযবুল্লাহ, মুজাদ্দিদে যামান ছারছীনা শরীফের পীর ছাহেব আলহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ (মা. জি. আ) বলেছেন- রমজান মাস। এ মাস তাকওয়া অর্জনের মাস, আত্মশুদ্ধির মাস, লাইলাতুল ক্বদরের মাস। রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস। জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের মাস। এ মাস কুরআন নাজিলের মাস। এ মাসে সিয়াম বা রোজা রাখা মুসলমানদের জন্য ফরজ।
ইসলামে তাক্বওয়ার চেয়ে অধিক মর্যাদাবান কোনো কাজ নেই। দ্বীনের প্রাণশক্তিই তাক্বওয়া। বান্দার মধ্যে তাক্বওয়ার গুণাবলি সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ তায়ালা সুরা বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াতে ঘোষণা করেন, ‘হে মুমিনগণ তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর; যেন তোমরা তাক্বওয়া অর্জন করতে পার।’ প্রতিটি কাজের জন্য সর্বদ্রষ্টা ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে জবাবদিহির অনুভূতি তাক্বওয়ার দাবি। আর এটাই রোজার উদ্দেশ্য। বান্দা সারাদিন রোজা রাখে কেবল আল্লহকে ভয় করে বলেই। যে কেউ চাইলে গোপনে কিছু খেতে পারে কিন্তু আল্লাহর ভয়ে তা করে না। তাক্বওয়ার উত্তম শিক্ষা আমরা রোজার মাধ্যমেই পাই।
রাসুলুল্লাহ (সা.) যা করতে বলেছেন তাক্বওয়াবান ব্যক্তি তা করেন এবং যা করতে নিষেধ করেছেন তা বর্জন করেন। তাই কোনো রোজাদার মুমিন মুত্তাকি কখনও তিরস্কার, ব্যঙ্গোক্তি, অবজ্ঞা, দাম্ভিকতা, গর্ব-অহঙ্কার, কটূক্তি, দম্ভোক্তি, কুৎসা রটনা, হিংসা-বিদ্বেষ, ঘৃণা তুচ্ছজ্ঞান করতে পারে না। সে কখনও দুরাচার, পাপিষ্ঠ, কদাচার, দুশ্চরিত্র, দুস্কর্ম ইত্যাদির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হতে পারে না।
অতএব প্রত্যেক মু’মিন মুসলমানের জন্যে তাক্বওয়ার সাথে সদা-সর্বদা জীবন পরিচালনা করাই হলো ইসলামের শিক্ষা। আমরা মানুষ, আমাদেরকে শয়তান ওয়াসওয়াসা তথা কুমন্ত্রণা দিয়ে থাকে। এর কারণেই আমরা বিভিন্ন অন্যায় কাজের দিকে ধাবিত হয়ে থাকি। এজন্য আমাদের উচিত একটি মাস সিয়াম তথা রোজা পালনের দ্বারা তাক্বওয়ার গুন হাসিল করে, তাক্বওয়ার শক্তি নিয়ে বছরের অন্যান্য সময় অতিবাহিত করা।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের চীপ হুইপ আ.স.ম ফিরোজ এমপি বলেন- ছারছীনা দরবার একটি হক্ক দরবার। এ দরবারের সাথে আমার পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। এ দরবার ইসলামের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ইসলাম ধর্মের নামে যারা নাশকতামূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য তিনি উপস্থিত সকলকে আহ্বান জানান।
গত ৩ জুন রোজ রবিবার বাদ আসর ঢাকার বনানিস্থ খানকায়ে নেছারীয়া ছালেহিয়ায় ইফতার ও দোয়ার মাহফিলের পূর্ব মূহুর্তে পীর ছাহেব কেবলা একথা বলেন।
ইফতার ও দোয়ার মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের চীপ হুইপ আ.স.ম ফিরোজ এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব মাওলানা বজলুল হক হারুন এমপি, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু এমপি, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান হাফিজ আহমেদ মজুমদার, দৈনিক ইনকিলাবের নির্বাহী সম্পাদক আলহাজ্ব এ. এম. এম বাহাউদ্দিন, অপসোনিন এর চেয়ারম্যান ক্যাপটেন (অবঃ) আবদুস সবুর খান, বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ্ব মোঃ সাঈদুর রহমান, আলহাজ্ব মজিবুর রহমান হাওলাদার, ছারছীনা দারুচ্ছুন্নাত আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. সাইয়্যেদ মুহাঃ শরাফত আলী, বাংলাদেশ জমইয়তে হিযবুল্লাহর সিনিয়র নায়েবে আমীর ও হযরত পীর সাহেব কেবলার বড় সাহেবজাদা আলহাজ্ব শাহ্ আবু নছর নেছারুদ্দীন আহমদ হুসাইন, বাংলাদেশ জমইয়তে হিযবুল্লাহর নাজেমে আ’লা আলহাজ্ব মির্জা নূরুর রহমান বেগ, অতিরিক্ত নাজেমে আ’লা মাওলানা আলী আকবর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহকারী অধ্যপক ড. হাফেজ মাওলানা রুহুল আমিন, হযরত পীর ছাহেব কেবলার ছোট ছাহেবজাদা আলহাজ্ব শাহ্ আবু বকর মোহাম্মদ ছালেহ নেছারুল্লাহ, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আলহাজ্ব ইসমাঈল মিয়া প্রমূখ।
পরিশেষে হযরত পীর ছাহেব কেবলা দেশ-জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সার্বিক কল্যাণ কামনা ও মুর্দেগানদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)