আবারো বেপরোয়া বরগুনা-২ সাংসদপাথরঘাটায় তাতীলীগ সভাপতিকে থাপ্পর মারলেন রিমন

আকন মোঃ বসির
আকন মোঃ বসির, প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১০:০৪ পিএম, ১৯ আগস্ট ২০১৮

ছবিঃ সংগ্রহীতআবারো বেপরোয়া বরগুনা ২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন। বিভিন্ন কারনে বার বার সমালোচিত এই সাংসদের বিরুদ্ধে এবার বরগুনা জেলা তাতী লীগের সভাপতি মো. ইদ্রিস চৌধুরিকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এসময় তার কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

রোববার (১৯ আগস্ট) বিকালে বরগুনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বরগুনা জেলা তাতী লীগ সভাপতি ও রায়হানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মো. ইদ্রিস চৌধুরি।

তিনি জানান, শনিবার সন্ধ্যায় পাথরঘাটা উপজেলার চরদোয়ানী বাজারে স্থানীয় সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন তাকে সন্ত্রাসী স্টাইলে মারধর করেন। এসময় তার কাছ থেকে নগদ ৯৬ হাজার টাকা, ১ ভরি ২ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন, একটি স্যামস্যাং গ্যলাক্সি মোবাইল ফোন ও একটি হাতঘড়ি নিয়ে যায় এমপি ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বঙ্গবন্ধুর ৪৩ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে মাস ব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার পাথরঘাটা চরদুয়ানী বাজার সংলগ্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে বিকাল ৩টার সময় শওকত হাসানুর রহমান রিমন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরগুনা-২ আসনে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী সুভাষ চন্দ্র হাওলাদারসহ পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সকল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হয়।

সন্ধ্যা ৬টার দিকে অনুষ্ঠান শেষ হলে নেতারা অনুষ্ঠান থেকে বের হয়ে স্কুল গেটের সামনে বেরিবাধের ওপর গাড়িতে অপেক্ষা করে। এ সময় আমি এমপির গাড়ি পাশ দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় এমপি হাসানুর রহমান রিমন গাড়ি থেকে বের হয়ে আমার শার্টের কলার ধরে এলোপাথারী মারতে থাকে। সাথে থাকা পুলিশ প্রশাসন মারধর থামাতে চাইলেও এমপি ওসিকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়ে আমাকে মারধর করেন। এসময় এমপির সাথে থাকা বশির মিয়াসহ কিছু আ’লীগ নেতারা মারধরে অংশ নিয়ে আমার কাছ থেকে গরু কেনার ৯৬ হাজার ৫শ টাকা, ১ ভরি ২ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন, একটি স্যামসাং গ্যালাক্সি মোবাইল ফোন ও একটি ঘড়ি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

ইদ্রিস চৌধুরী জানান, শওকত হাসানুর রহমান রিমন এবং তিনি একই এলাকার বাসিন্দা। এমপি রিমন উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় পুর্ব শক্রতার জের ধরে ইদ্রিস চৌধুরীর বোন হোসনে আরা বেগমকে হাত/পা বেধে নির্যাতন করে। এ ব্যাপারে তিনি আইনি ব্যাবস্থা নিলে এমপিকে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। এর জের ধরেই তাকে মারধর করা হতে পারে বলে তিনি জানান।

এবিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক অ্যাড. জাবির হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এরকম ঘটনা ন্যাক্কারজনক। এঘটনায় উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।

এ ব্যাপারে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা মোঃ খবির আহম্মেদ জানান, এ ব্যাপারে আমার বলার কিছু নাই। তবে অনুষ্ঠানটির শৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা যা পরিশ্রম করেছি শেষ পর্যন্ত তার কোন ফল পেলাম না। যারা আইন তৈরী করে তারা আইন লঙ্গন করলে আমাদের কিছু করার থাকে না।

এবিষয়ে বরগুনা-২(বামনা-পাথরঘাটা-বেতগাী) আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাসানুর রহমান রিমন বলেন, ইদ্রিস আমার এলাকার একজন নাম করা চোর। আমি উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তাকে পিটিয়ে এলাকা ছাড়া করেছি। এখন আমাকে ক্ষতি করার জন্য আমার চারপাশে ঘোরাফেরা করছে। মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওখানে কোন মারধরের ঘটনা ঘটেনি আমি তাকে শুধু শাসিয়েছি।

পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/১৯ আগস্ট

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)