আমতলীতে মেয়েকে উত্ত্যক্তে বাধা দেয়ায় প্রাণ গেল বাবার

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ১২:২১ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

এই ছবিটি প্রতীকিবরগুনার আমতলী উপজেলায় মেয়েকে উত্ত্যক্তে বাধা দেয়ায় প্রাণ হারিয়েছেন বাবা আলী হোসেন মোল্লা। উপজেলার দক্ষিণ গাজীপুর গ্রামে সোমবার পরিকল্পিতভাবে মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে তাকে মারাত্মক আহত করে বখাটে হিরন গাজী। তিন দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি বৃহস্পতিবার রাতে মারা গেছেন। এ ঘটনায় আমতলী থানায় মামলা হলেও কেউ গ্রেফতার হয়নি।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার গাজীপুর গ্রামের মাদকাসক্ত হিরন স্কুলছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে আসছে। ৬ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে হোসেন মোল্লার মেয়ে ও ভাগ্নিকে উত্ত্যক্ত করে হিরন। এ ঘটনা শুনে পরের দিন হিরনের কাছে বিষয়টি জানতে চান হোসেন। এ সময় দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গাজীপুর-কাঁঠালিয়া সড়কের লক্ষ্মণ প্যাদার বাড়ির সামনে হোসেনের শরীরের ওপর মোটরসাইকেল উঠিয়ে দেয় বখাটে হিরন। এতে হোসেন সড়কের ওপর পড়ে গেলে আবারও তার শরীরের ওপর মোটরসাইকেল উঠিয়ে দেয় হিরন ও তার বন্ধু আরিফ গাজী।

এতে হোসেন মারাত্মক আহত হন। হোসেনের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে বখাটে হিরন ও আরিফ পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন হোসেনকে উদ্ধার করে গাজীপুর ক্লিনিকে নিয়ে যায়। এরপর তাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। তিন দিন পর বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বুধবার আমতলী থানায় হিরন গাজীকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা মামলা করেন হোসেন মোল্লার স্ত্রী মাজেদা বেগম। এ ঘটনার পর থেকে হিরন ও আরিফসহ পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছে।

দু’জন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, হিরন ও তার বন্ধু দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে সামনের দিক থেকে হোসেন মোল্লাকে চাপা দেয়। হোসেন মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার শরীরের ওপরে আবারও মোটরসাইকেল উঠিয়ে দেয় তারা। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলে হিরন ও আরিফ মোটরসাইকেল চালিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছু কয়েকজন অভিভাবক জানান, মাদকসেবী হিরন ও আরিফের কারণে বিদ্যালয়ে ছাত্রীরা যেতে ভয় পায়। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে মেয়েদের তারা উত্ত্যক্ত করে। এর প্রতিবাদ করলেই বিভিন্ন অজুহাতে মারধর করে তারা। তাদের ভয়ে কেউ কথা বলতেও সাহস পায় না।

হোসেন মোল্লার ভগ্নিপতি মো. ফারুক মৃধা জানান, কিছুদিন আগে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে দুই স্কুল ছাত্রীকে অশ্লীল কথাবার্তা বলে হিরন ও আরিফ। এ ঘটনা সম্পর্কে হিরনের কাছে হোসেন মোল্লা জানতে চাইলে তাকেও গালিগালাজ করা হয় এবং জীবননাশের হুমকি দেয়া হয়। বাজার থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে সোমবার হোসেনকে একা পেয়ে পরিকল্পিতভাবে মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে হিরন।

হোসেনের ভাই হামজা মোল্লা জানান, হিরন ও আরিফ মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে গাজীপুর বাজারে এসে চিৎকার করে বলে ‘শালারে (হোসেন)’ মারতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারলাম না। হত্যাকারী হিরন ও আরিফের বিচার চাই।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আমতলী থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন মিলন বলেন, এ ঘটনায় আগে হত্যা চেষ্টা মামলা হয়েছে। ওই মামলা এখন হত্যা মামলায় পরিণত হবে। শিগগিরই আসামিদেরও গ্রেফতার করা হবে।(সূত্রঃ যুগান্তর)

পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/২৮ সেপ্টেম্বর

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)