এমপি রিমনের বিরুদ্ধে মামলা করায় বাদীর উপর হামলা

আকন মোঃ বসির
আকন মোঃ বসির, প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১১:০৮ এএম, ১০ অক্টোবর ২০১৮

ছবিঃ সংগ্রহীতবরগুনা-০২ (পাথরঘাটা-বামনা-বেতাগী) আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বাবা রাজাকার কমান্ডার ও পিস কমিটির চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানের অবৈধ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ চেয়ে মামলা দায়ের করায় বাদী মো. ইউনুছ খানের উপর হামলা করেছে এমপি সমর্থকরা।

সোমবার (৮ অক্টোবর) বিকাল পাঁচটায় ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্য স্বস্ত্রীক ইউনুছ খান পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া লঞ্চঘাটে পৌছালে এমপি রিমনের সমর্থক রুবেল ও পলাশের নেতৃত্বে ৮ থেকে১০ জনের একটি দুবৃত্তের দল তার উপর হামলা চালায়। এসময় তাকে মারধর করে নদীতে ফেলে দেয়। এসময় বাধা দিতে গেলে ঘাট শ্রমিক হারুনকেও মারধর করে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।

এসময় কাকচিড়া বাজারে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধা মোহন শিকদার ও স্থানীয়রা লঞ্চঘাটে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকাগামী লঞ্চে তুলে দেয়।

এবিষয়ে ইউনুছ খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রিমনের সমর্থকরা এমপির নির্দেশে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যই এ হামলা করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা আজকে আমাকে উদ্ধার না করলে হয়তো ওরা আমাকে মেরে ফেলতো। এসময় আমার কাছে থাকা মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে দুবৃত্তরা।

তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় খলিলুর রহমান ও তার বড় ভাই শাহ্জাহান মিয়া পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগীতায় রাজাকার, আল বদর, আল সামস বাহিনী গঠন করে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী সক্রিয় অবস্থান নেন। তারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের নাগরিক মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সমর্থনকারীদের নির্যাতন, হত্যা, নারী ধর্ষণ, সম্পদ লুট ও বাড়ি ঘরে অগ্নি সংযোগ করে বিভিষীকাময় কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় বাদীর প্রতিবেশী মাদারতলী গ্রামের আ: মোতালেব কেরানীকে নির্যাতন শেষে গুলি করে হত্যা করে লাশ ক্ষত বিক্ষত করে। এছাড়া আসামীরা বিভিন্ন বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ করে টাকা, স্বর্ণলাংকার ও অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। মামলার ২ নং আসামী খলিলুর রহমান পাকিস্তানের স্বপক্ষে সক্রিয় অবস্থান নেওয়ায় তৎকালীন পাকিস্তানজান্তারা তাকে বরগুনা মহাকুমা পিস কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করেন।

এবিষয়ে বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

প্রসঙ্গত, ৭ অক্টোবর রোববার বরগুনা-০২(পারঘাটা-বামনা-বেতাগী) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বরগুনা মহাকুমা রাজাকার কমান্ডার খলিলুর রহমানের ছেলে শওকতা হাচানুর রহমান রিমনের পৈতৃক সুত্রে পাওয়া মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার দাবীতে মামলা পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করেন ইউনুছ খান। মামলায় সাংসদ রিমন ছাড়াও তার পিতা রাজাকার কমান্ডার ও পিস কমিটির সভাপতি মৃত খলিলুর রহমান ও তার চাচা মো. শাহজাহান মিয়াকে আসামী করা হয়। আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্বাস উদ্দিন বাদীর আর্জি শোনার পর রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন। ৮ অক্টোবর মামলাটিকে খারিজ করে দেন আদালতের বিচারক।(সূত্রঃ সংযোগ২৪.কম)

পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/১০ অক্টোবর

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)