শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীকে মাদার অব এডুকেশন উপাধি দিল

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০১:১০ পিএম, ১২ এপ্রিল ২০১৮

শিক্ষার্থীরা
অনলাইন ডেস্কঃ কোটা বাতিল করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া ঘোষণা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশের আগ পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। একই সঙ্গে কোটা বাতিল করায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দনও জানান তারা।

বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক ব্রিফিংয়ে এ সিদ্ধান্তের কথা জানায় সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।

এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব এডুকেশন’ উপাধিতেও ভূষিত করে তাকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানানোর কথা বলেন তারা।

এছাড়াও ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতেও শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের কথাও জানান আন্দোলনকারীরা।

কয়েকদিন ধরে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাহাঙ্গীর কবির নানকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েক দিন ধরে ইউনিভার্সিটিগুলোতে ক্লাস বন্ধ। পড়াশোনা বন্ধ। এরপর আবার ভিসির বাড়ি আক্রমণ। রাস্তাঘাটে যানজট। মানুষের কষ্ট। সাধারণ মানুষের কষ্ট। সাধারণ মানুষ বারবার কষ্ট পাবে কেন? এই বারবার কষ্ট বন্ধ করার জন্য, আর বারবার এই আন্দোলনের ঝামেলা মেটাবার জন্য কোটাপদ্ধতি বাতিল। পরিষ্কার কথা। আমি এটাই মনে করি, সেটা হলো বাতিল।

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধীসহ অনগ্রসর শ্রেণির মানুষের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটাপদ্ধতিরই দরকার নেই। যারা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী, তাদের অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পারব। এই আন্দোলন যারা করেছে, যথেষ্ট হয়েছে, এখন তারা ক্লাসে ফিরে যাক।

প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণ শেষে আন্দোলন স্থগিত করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ও সংবিধান পর্যালোচনা শেষে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ঘোষণা করার কথা জানানো হয়।

গত রোববার পাঁচ দফা দাবিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাকর্মীরা রাজধানীর শাহবাগে পূর্ব ঘোষিত অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা।

সেদিন রাতভর সংঘর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চলে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের তাণ্ডব। আক্রান্ত উপাচার্যের বাসভবনও। প্রতিটি কক্ষে ঢুকে সবকিছু তছনছ করে একদল মুখোশধারী।

পরেরদিন সোমবার তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে সরকারের প্রতিনিধি দলের সাথে আলোচনার পর ১ মাসের জন্য চলমান অান্দোলন স্থগিত ঘোষণা করে আন্দোলনকারীরা।

তবে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে সোমবার রাতেই রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেয় কোটা সংস্কার দাবি করা সাধারণ আন্দোলনকারীরা।

এ সময় তারা সরকারের সাথে আলোচনায় বসা কমিটিকে ‘অবাঞ্ছিত ঘোষণা’ করে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

আগামী ১৫ এপ্রিলের মধ্যে কোটা সংস্কারের দাবি না মানলে পরদিন ১৬ এপ্রিল সারাদেশের শিক্ষার্থীরা ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচির মাধ্যমে রাজধানীতে এসে আন্দোলন করবে বলেও জানানো হয়।

নতুন করে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা নিয়ে সংসদে বক্তব্য দেন।
এ এম বি । পি এন

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)