আজ অমর একুশে

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০৮:৪৪ এএম, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২১

ছবিঃ সংগ্রহীত‘আমি বাংলায় কথা কই, আমি বাংলায় ভাসি, বাংলায় হাসি, বাংলায় জেগে রই…’। মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়ের দিন আজ।

আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, অমর একুশে ফেব্রুয়ারি। সারা বিশ্বের মানুষের নিজ নিজ মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার অঙ্গীকারের দিন, মহান শহীদ দিবস আজ।

একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বে মাতৃভাষার জন্য নির্ভয়ে বুকের রক্ত ঢেলে দেওয়ার প্রথম ইতিহাস সৃষ্টির দিন। বাঙালিরভাষা আন্দোলনের গৌরবময় শোকের দিন। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি’। এ দেশের মানুষ প্রথম ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল ১৯৫২ সালে। এ ঐক্যের ভিত্তিমূল ছিল মাতৃভাষার অধিকার রক্ষা। বাঙালির বুকের রক্ত সৃষ্টি করেছে অমর একুশে। ’৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে আত্মোৎসর্গের নজির সৃষ্টি করে বাংলাদেশের মানুষ।

মাতৃভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে ঢাকার রাজপথে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সালাম, জব্বার, রফিক, বরকত, শফিউরসহ বীর সন্তানেরা। এ অমর বীরগাথা আজ কেবল এ ভূখণ্ডের সীমানায় আবদ্ধ নেই, বাঙালির আত্মত্যাগ স্মরণে একুশে ফেব্রুয়ারি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মর্যাদায় অভিষিক্ত।

এ গৌরব বাঙালির, বাংলাদেশের। একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের অহংকার। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামের বীজ বপন হয়েছিল ভাষা আন্দোলনে। একুশের আত্মত্যাগের মাধ্যমে উন্মেষ ঘটে বাঙালি জাতীয়তাবাদের। সেই জাতীয়তাবাদী চেতনার পথ ধরে ১৯৭১-এর গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়। এখনো জাতির প্রতিটি সংকট মুহূর্তের অনুপ্রেরণা একুশের চেতনা। আজও অমর একুশে অন্যায়-অসত্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে, ন্যায় ও সত্যের পক্ষে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর অন্তর্নিহিত শক্তি আর অদম্য সাহস হয়ে আছে। একুশ মানে মাথা নত না করা। আজ একুশ এসেছে উন্নয়ন ও অগ্রগতির মাধ্যমে জাতি হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়ে। অপরিণামদর্শী রাজনৈতিক সহিংসতায় গত বছর এই সময়ে যেখানে জিম্মি ছিল পুরো জাতি, রাজনৈতিক দলের টানা অবরোধ-হরতালে বিপর্যস্ত ছিল জনজীবন।

পেট্রলবোমায় দগ্ধ মানুষের আহাজারিতে ভারী হয়েছিল হাসপাতালের বার্ন ইউনিটগুলো; সেই দুঃসহ আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তার অপরাজনীতি পেছনে ফেলে জাতি এবার স্বস্তির সঙ্গে পালন করছে একুশে ফেব্রুয়ারি।

অমর একুশে উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা পৃথক বাণীতে ভাষাশহীদদের অমর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। আজ সরকারি ছুটির দিন। দেশের সর্বত্রই আজ প্রভাতফেরি করে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হবে শহীদদের স্মৃতির প্রতি। সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। এ ছাড়াও রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থান ও অন্যান্য স্থানে ভাষাশহীদদের কবরে ফাতিহা পাঠ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)