ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার গতিবৃদ্ধি

আবু জর রফি
আবু জর রফি, সাব-এডিটর
প্রকাশিত: ০৪:২০ পিএম, ২ মার্চ ২০১৮

Dijelaডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার গতি বৃৃদ্ধি বর্তমান সরকারের ‘রূপকল্প ২০২১’ বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। আশা করা হচ্ছে, ২০২১ সালে আমরা উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবো। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত দেশ। এই রূপকল্প পরিকল্পনা নিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বিগত বছরে জাতিসংঘের বার্তা অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ। আমাদের দেশে এখন অর্থনৈতিক আইটি বিপ্লব চলতে শুরু হয়েছে। শিল্প-বাণিজ্য, সমাজ-সংস্কৃতি, সেবামূলক খাতসমূহে বিগত কয়েক বছর ধরে আমাদের প্রবৃদ্ধির হার ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে চলেছে। বিগত অর্থ বছরে আমাদের প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। বর্তমান অর্থ বছরে প্রবৃদ্ধি অর্জনের টার্গেট ৭ শতাংশের অধিক ধরা হয়েছে।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও এটা সত্যি যে, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে না সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্প বাস্তবায়নের কাজ। এ রূপকল্পের লক্ষ্য অর্জনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বিত নীতিকৌশল না থাকাটাই এ ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে। এমন মতামত উঠে এসেছে মুঠোফোন অপারেটরদের বৈশ্বিক সংগঠন জিএসএমএর ‘এশিয়ায় ডিজিটাল সমাজ নির্মাণ’ শীর্ষক এক গবেষণায়। এতে বাংলাদেশসহ সাতটি দেশের ডিজিটাল সমাজ গঠনে প্রণীত রূপকল্প ও তা বাস্তবায়নের তুলনামূলক অগ্রগতি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত অন্য দেশগুলো হলো জাপান, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তান। দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করে ডিজিটাল সমাজ নির্মাণে সাতটি দেশের বিভিন্ন পদক্ষেপের বিশ্লেষণ করা হয়েছে গবেষণায়। প্রথম বিষয়টি হলো রূপকল্পের লক্ষ্যগুলো কতটুকু বাস্তবসম্মত ও অর্জনযোগ্য। দ্বিতীয়টি হলো বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় এসব লক্ষ্যের প্রাসঙ্গিকতা। বাংলাদেশ সম্পর্কে জিএসএমএর গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০০৯ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প যখন প্রকাশ করা হয় তখন তা তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। এরপর ২০১৬-২০ সাল মেয়াদি সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হলেও লক্ষ্য অর্জনে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা ও প্রতিষ্ঠানভিত্তিক দায়িত্ব বণ্টন করা হয়নি। বিশেষ করে ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে নেওয়া অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পের মূল্যায়ন করা হয়েছে জিএসএমএর গবেষণায়। এতে এটুআই সম্পর্কে বলা হয়েছে, ইন্টারনেট সংযোগের উন্নয়ন ও ডিজিটাল কার্যক্রমের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে এই প্রকল্প খুব বেশি সফলতা পায়নি।
দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতা, বেসরকারি খাতের কম অংশীদারত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্নভাবে প্রকল্প গ্রহণ এ তিনটি বিষয়কে এটুআইয়ের সাফল্যের ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণায়। তবে জিএসএমএর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে এটুআইয়ের জনপ্রেক্ষিত বিশেষজ্ঞ নাইমুজ্জামান মুক্তা বলেন, ‘এটুআই সবসময় সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে। বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য সরকার ছাড়াও দুটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হয়। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এটুআই পরপর তিনবার আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের পুরস্কারও পেয়েছে। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ছাড়া কাজ করলে এটি সম্ভব হতো না।’ গবেষণায় বাংলাদেশ সম্পর্কে আরও বলা হয়েছে, সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল সমাজব্যবস্থার সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হলেও কীভাবে ও কত সময়ের মধ্যে তা নিশ্চিত করা হবে, সেটি পরিকল্পনায় উল্লেখ নেই। এ ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার উদাহরণ দিয়ে বলা হয়েছে, দেশটির পাঁচ বছরমেয়াদি ডিজিটাল অর্থনীতি পরিকল্পনায় লক্ষ্য অর্জনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। আবার জাপানের ডিজিটাল রূপকল্প লক্ষ্য অর্জন ও অগ্রগতি মূল্যায়নে বেশ কিছু সংখ্যাগত প্রধান পারদর্শিতা সূচক (কি পারফরম্যান্স ইন্ডিকেটর) রাখা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপকল্প এমন সময়ভিত্তিক লক্ষ্য অর্জন ও মূল্যায়নের সূচক নেই।
ডিজিটাল সমাজ তৈরিতে কোন দেশ কতটুকু এগিয়েছে, তা তুলে ধরে দেশভিত্তিক ‘কান্ট্রি ইনডেক্সও’ তৈরি করেছে জিএসএমএ। এই সূচকে ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে সাতটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ আছে ষষ্ঠ স্থানে। ২৭ পয়েন্ট নিয়ে সবার নিচে পাকিস্তান। আর ৭৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে অস্ট্রেলিয়া। ইন্টারনেট সংযোগের প্রাপ্যতা বা কানেকটিভিটির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে গবেষণায়। এতে বলা হয়, বর্তমানে এ দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৩০ শতাংশ ইন্টারনেট সুবিধা পাচ্ছেন। এরমধ্যে ২৯ শতাংশ মুঠোফোনভিত্তিক ও মাত্র ১ শতাংশ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। ইন্টারনেট সংযোগ সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ৩৩। এর পেছনে থাকা পাকিস্তানের স্কোর ২৩। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়েছে, দেশটিতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এখনো সহজলভ্য না হওয়ায় তা ডিজিটাল সমাজের প্রকৃত সুফল সবার কাছে পৌঁছাতে পারছে না। ফাইবার অপটিকের দুর্বল অবকাঠামো, সব জ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)