জাওয়াদের প্রভাবে বৃষ্টি, আলু চাষীদের দেড় কোটি টাকার ক্ষতি

কাজী রাকিব
কাজী রাকিব, নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:২১ পিএম, ৭ ডিসেম্বর ২০২১

পাথরঘাটা বরগুনা প্রতিনিধি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে উপকূলীয় বরগুনার পাথরঘাটায় টানা চারদিনের বৃষ্টিতে আলু চাষীদের সার ও বীজসহ প্রায় দেড়কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এতে হতাশা গ্রস্থ হয়ে পড়েছে এলাকার শতাধিক চাষী। চাষীরা বিভিন্ন মাহাজন এবং এনজিওর কাছ থেকে লোন নিয়ে আলু চাষ করে। টানা বৃষ্টিতে তাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় আলুর বীজ বপন করা ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। জানা যায় পাথরঘাটা উপজেলার ১৪ টি ক্ষেতে আলু সবচেয়ে বেশি চাষ হয়। এছাড়াও ছোট বড় মিলিয়ে আরো ২৫ টির মতো আলুর ক্ষেত রয়েছে এ উপজেলায়। চলতি মৌসুমের আলুর বীজ বপনের উপযুক্ত সময় এলে এ এলাকার অধিকাংশ চাষীরা ক্ষেতে আলুর বীজ বপন করে। যা ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা চারদিনের বৃষ্টিতে আলুর অঙ্কুরেই নষ্ট হয়ে গেছে।  আজিমপুর, রুপধন, কুপধন, কালমেঘা এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুলাল পহলান এক একর জমিতে, খলিল চৌকিদার ৮০ শতাংশ, আবুল কালাম দেড় একর জমিতে আলুর বীজ বপন করেছে। এলাকার সব বীজতলাই বর্তমানে পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে।


আলু চাষের সাথে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় একাধিক ডিলারের থেকে জানা যায়, এ মৌসুমে স্থানীয় ২শো চাষীদের চাহিদা অনুযায়ী ৩শো ৯৬ মেট্রিক টন আলুর বীজ সরবরাহ করা হয়েছিলো। যা চাষীরা ইতিমধ্যে নিয়ে গেছে। কামায়হাট এলাকার স্থানীয় মনির ডিলার জানান, তিনি একাই ২শো ৫৫ মেট্রিক টন আলু বিক্রি করেছেন। তিনি জানান ইতিমধ্যে ৫০% আলুর বীজ চাষীরা বপন করে ফেলেছে। বপন করা সব বীজ অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে গেছে। এতে গ্রেডিং অনুযায়ী প্রায় ৮০ লাখ টাকার লোকসান হয়েছে চাষীদের।


চাষী নেকবার ফকির জানান, এক একর জমিতে তিনি ১টন আলুর বীজ বপন করেছেন। যার বাজার মূল্য ৪০ হাজার টাকা। এছাড়াও আলুর ফলন ভালো পেতে নিয়ম অনুযায়ী সমপরিমাণ টাকার সার কিটনাশক দিতে হয়েছে জমিতে। যার পুরোটাই লোকসান হয়েছে। একাধিক চাষীরা জানান তারা এনজিও থেকে লোন নিয়ে প্রতিবছর আলু চাষ করে। উৎপাদিত আলু বিক্রি করে এনজিও লোন পরিশোধ করে। কিন্তু এবার অঙ্কুরেই আলুর বীজ নষ্ট হওয়ার তারা দুশ্চিন্তা এবং হতাশাগ্রস্ত হয়ে পরেছে।


বিষয়টি নিশ্চিত করে পাথরঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিশির কুমার বড়াল জানান, অসময়ে বৃষ্টি হওয়াতে ক্ষেতে পানি জমে বীজ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে সরজমিনে ঘুরে দেখেছি। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি হচ্ছে। যাতে করে চাষীরা তাদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারে সেজন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)