বিশ্বনবীর (সঃ) মি’রাজ স্বশরীরে না স্বপ্নে?

কাজী রাকিব
কাজী রাকিব, নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:০৩ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০১৮

মুফতি মুহা. হাবিবুর রহমান মোহেব্বী,
মি’রাজ (معراج) শব্দটি আরবী যার অর্থ হলো উর্ধ্বে উঠার সিঁড়ি বা বাহন ৷ ইসলামী পরিভাষায় ইসলামের নবী, নবীকুল সর্দার নিখিল বিশ্বের রহমত মুক্তির দূত সৃষ্টিকুলের মূল সরওয়ারে কায়েনাত হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একই রাত্রে পবিত্র মক্কা নগরী হতে বায়তুল মুকাদ্দাসে উপনীত হয়ে সেখান হতে সপ্তাকাশ অতিক্রম করতঃ মহান আল্লাহর সাক্ষাতে হাজির হওয়ার ঐতিহাসিক অনন্য সাধারণ ঘটনাকে মি’রাজ নামে অভিহিত করা হয় ৷ এ বিস্ময়কর ঘটনা সম্পর্কে বিশ্ববাসী ওয়াকেফহাল ৷ যে রাতে এ ঘটনা সংঘটিত হয় ঐ রাত বিশ্বের মুসলিম সমাজে “ লাইলাতুল মি’রাজ” বা শবে মি’রাজ নামে সুপরিচিত ৷ বিশ্বনবী( সঃ) এর মি’রাজ দৈহিক ও শারীরিক ছিল ৷ যা রাসূলে আকরাম (সঃ) স্বশরীরে সম্পন্ন করেছেন৷
মহান আল্লাহ এরশাদ করেন -

سبحان الذى اسرى بعبده ليلا من المسجد الحرام ا المسجد الاقصا الذى بركنا حوله لنريه من ايتنا انه هو السميع البصير-

পবিত্র ও মহিমাময় সেই সত্তা যিনি তাঁর বান্দাকে রাত্রের একাংশে মসজিদে হারাম হতে মসজিদে আকসা পর্যন্ত পরিভ্রমন করালেন, যার চতুর্দিক আমি বরকতময় করেছি যাতে করে আমি তাঁকে আমার নিদর্শনাবলী দেখিয়ে দেই৷ নিশ্চই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা৷( বনী ইসরাইল-১)
উক্ত আয়াতে কারিমায় ব্যবহৃত ‘আবদ’ শব্দটি একাধিক দিক হতে তাৎপর্যপূর্ণ৷
*প্রথমতঃ আবদিহী অর্থাৎ তাঁর বান্দা বলায় বিশ্বনবী (সঃ) যে মহান আল্লাহর প্রিয়তম বান্দা এ কথা সস্পষ্ট ৷
*দ্বিতীয়তঃ তাঁর এ প্রিয়তম হাবীব মি’রাজের অধিকারী হলেও তিনি বান্দা হিসেবে গণ্য, তাকে মাবুদ গণ্য করার প্রশ্নই হতে পারেনা ৷
*তৃতীয়তঃ কেবল রুহকে আবদ বলা হয় না বরং রুহ এবং শরীরের সমষ্টিকে আবদ বলা হয় ৷ সুতরাং মহানবী(সঃ) এর মি’রাজ তাঁর রুহ এবং শরীরের সমন্বয়ে অর্থাৎ শারীরিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে- এ “শব্দ দ্বারা প্রমাণিত হয় ৷
*চতুর্থতঃ রুহানী বা আত্নীক বা স্বাপ্নিক মেরাজ মহানবীর মহৎ জীবনে একাধিক পর্যায়ে হয়েছে যে গুলো স্বাভাবিক পর্যায়ের ৷ কিন্তু উক্ত আয়াতে কারীমায় سبحان শব্দ ব্যবহারে বুঝা যায় যে, বিশ্বনবীর ঐতিহাসিক মেরাজ ছিল শারীরিক যা অতি আশ্চর্যের বিষয় ৷ আর এ আশ্চর্যের বিষয় সম্পর্কে বিস্মিত হওয়ার জন্যই মহান আল্লাহ বিশ্ববাসীর প্রতি ইঙ্গিত করেছেন
*পঞ্চমতঃ এটাও আশ্চর্যের বিষয় যে، ليلا শব্দটি অনির্দিষ্ট ৷ যদ্বারা বুঝা যায় যে, মি’রাজ রাতের কিছু অংশে সংঘটিত হয়েছে, গোটা রাতের প্রয়োজন হয়নি এটা খুবই আশ্চর্যের বিষয় ৷
উল্লেখ্য যে, স্বাপ্নিক মি’রাজের জন্য দিবা রাত্রির কোন বিশেষত্ব নেই বরং উহা যে কোন মুহুর্তে হতে পারে ৷ বুঝা গেল যে তাঁর এ মি’রাজ রাতের বিশেষ অংশে শারীরিকভাবে সংঘটিত হয়েছে যা মহান আল্লাহর অসীম কুদরতের বহিঃপ্রকাশ মাত্র ৷
*ষষ্ঠতঃ রুহানী মি’রাজের জন্য বোরাক বা রফরফের প্রয়োজন হয় না ৷ এতে প্রমাণিত হল যে, তাঁর মি’রাজ শারীরিক ছিল, যার জন্য আল্লাহ প্রদত্ত বাহনের প্রয়োজন দেখা দেয় ৷
*সপ্তমতঃ উক্ত আয়াতে কারীমায় মহান আল্লাহর এরশাদ-
لنريه من ايتنا

মি’রাজ এজন্য যে, যাতে আমি তাঁকে আমার কুদরতের নিদর্শনাবলি দেখিয়ে দেই৷
একথা সর্বজনবিদিত যে, কোন বস্তু বা বিষয় সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান লাভ করতে হলে কানে শ্রবন করতে হয় এবং চোখে দেখতে হয় ৷ আরবী ভাষায় اراءة শব্দের অর্থ কাউকে কোন কিছু পদর্শন করান ৷ তাই, মহান আল্লাহ পাক তাঁর প্রিয়তম বন্ধুকে কুদরতী বাহন যোগে বায়তুল্লাহ শরীফ হতে বায়তুল মোকাদ্দাস হয়ে সপ্তাকাশ অতিক্রম করায়ে তথা হতে আরশে আজীম পর্যন্ত পরিভ্রমন করাতে গিয়ে তাঁর কুদরতের অসংখ্য নিদর্শন দেখায়েছেন যা ছহীহ বুখারী, ছহীহ মুসলিম ও সিহাহ সেত্তার অন্যান্য হাদীস গ্রন্থের হাদীস দ্বারা প্রমাণিত৷ এটা তাঁর শারীরিক মি’রাজ ব্যতীত আর কিছুই হতে পারেনা ৷
মিশকাত শরীফের ব্যাখ্যা মিরকাত গ্রন্থে লিখিত আছে, কাজী আয়াজ বলেন, রাসুল পাক (সঃ) এর মি’রাজ সম্পর্কে ওলামায়ে কেরাম মতভেদ করেছেন ৷ কারো মতে তাঁর মি’রাজ স্বাপ্নিক বা রুহানী ৷ কিন্তু বিশুদ্ধ মত হল এই যে, তার মেরাজ স্বশরীরে হয়েছে ৷ অধিকাংশ ওলামায়ে কেরাম ছলফে ছালেহীন, ফোকাহা, মুহাদ্দিসীন ও মুতাকাল্লেমীন এমত সমর্থন করেছেন ৷ ( মিরকাত ১১/১৩৮ পৃঃ)
আকায়েদে নাসাফীতে উল্লেখ আছে, হযরত রাসূল পাক (সঃ) এর মি’রাজ স্বশরীরে জাগ্রত অবস্থায় আকাশ পর্যন্ত এবং তথা হতে মহান আল্লাহ পাকের ইচ্ছা অনুযায়ী উর্ধ্বজগত পর্যন্ত সংঘটিত হয়েছে- একথা বাস্তব সত্য যা খবরে মাশহুর দ্বারা সাব্যস্ত৷ যারা এ মতের বিরুধী তারা বেদআতী ৷
উল্লেখ্য যে, বায়তুল্লাহ শরীফ হতে বায়তুল আকসা পর্যন্ত মহানবী (সঃ) এর ইসরা তথা স্বশরীরে রাত্রী ভ্রমন পবিত্র কোরআন দ্বারা সাব্যস্ত যার বিরোধীতা কুফর হিসেবে গণ্য ৷ এখানে আরো উল্লেখ্য যে, আঁ- হযরত (সঃ) এর মি’রাজ তথা উর্ধ্বাকাশে ভ্রমন করার বিষয়টা অসম্ভব হওয়া দার্শনিকদের উসূল তথা মূলনীতির উপর নির্ভরশীল৷ তাদের মূলনীতি হলো আকাশ বিদীর্ণ হওয়া অতঃপর উহাতে জোড়া স্থাপিত হওয়া অসম্ভব ৷ কিন্তু তাদের এ দর্শন গ্রহনযোগ্য নয় ৷ কেননা, আসমান যমীন, গ্রহ, নক্ষত্র ইত্যাদী সব কিছুই নশ্বর বস্তু ৷ এগুলোর প্রত্যেকটি বিভিন্ন সম্ভাবনাময় অবস্থা থেকে বিশেষ বিশেষ অবস্থায় অস্তিত্ব লাভ করেছে মহান আল্লাহর ইচ্ছা মাফিক ৷ সুতরাং তাঁরই ইচ্ছায় এগুলো যে কোন অবস্থায় পরিবর্তন হতে পারে ৷ আবার তাঁরই ইচ্ছায় পূর্বাবস্থায় রুপান্তরিত হতে পারে ৷ সব কিছুই তাঁরই ক্ষমতার অন্তর্ভুক্ত৷ সুতরাং মি’রাজের সময় আকাশ বিদীর্ণ হওয়ার প্রয়োজন দেখা দিলে তা আবার পূর্বাবস্থায় রুপান্তরিত করা মহান আল্লাহর কুন শব্দই যথেষ্ট ৷ এ ক্ষেত্রে মানবীয় বিজ্ঞান সম্পূর্ণ অকেজো ও বেকার ৷

وهو بكل شئ محيط-

তিনি (আল্লাহ) প্রত্যেক বস্তুকে পরিবেষ্টন করে আছেন ৷

যারা দাবী করেন যে, মি’রাজ স্বাপ্নিক হয়েছে তাঁরা হযরত আমিরে মুয়াবিয়া (রাঃ)- এর হাদীছ পেশ করে থাকেন ৷ সেখানে বলা হয়েছে-

كانت رؤية صالحة.

অর্থাৎ তাঁর মি’রাজ ছিল একটা ভাল স্বপ্ন মাত্র
কিন্তু জমুহুর ওলামার নিকট আলোচ্য
মি’রাজ বলতে ঐ মি’রাজ যা নবুয়্যতের দ্বাদশ সালে ২৭শে রজবে সংঘটিত হয়েছে ৷ ঐ সময় হযরত আমীরে মুয়াবিয়া (রাঃ) ইসলাম কবুল করেননি ৷
বিরোধী পক্ষের দ্বিতীয় প্রমান হলো হযরত আয়েশা (রাঃ) এর হাদীছ -

ما فقد جسد رسول الله صلى الله عليه و سلم ليلة المعراج-

অর্থাৎ, শবে মি’রাজে হযরত রাসূল করীম (সঃ) এর শরীর মুবারক নিখোঁজ হয়নি বা হারিয়ে যায়নি ৷
অর্থাৎ, তাঁর শরীর মুবারক বিছানায় বিদ্যমান ছিল ৷ আমরা তাঁর এ কথা অস্বীকার করিনা ৷ কেননা, মদীনা শরীফে যে কয়বার মি’রাজ হযেছে তাতে তাঁর শরীর শয্যা হতে হারিয়ে যায়নি ৷ কেননা, উহা ছিল রুহানী কিন্তু ঐতিহাসিক মি’রাজ সংঘটিত হয় মক্কায় থাকাকালীন যা ছিল শারীরিক ৷ উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রাঃ) এর তখন আঁ-হযরতের সংগীনী হওয়ার সৌভাগ্য নছীব হয়নি ৷
ঐতিহাসিক শবে মি’রাজে মহানবী (সঃ) মক্কা শরীফ হতে হারিয়ে গিয়েছিলেন- একথা হযরত উম্মেহানী (রাঃ) এবং হযরত আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে-
হযরত রাসূলে পাক (সঃ) হযরত উম্মেহানী (রাঃ)- এর গৃহে ঘুমন্ত অরস্থায় ছিলেন ৷ উম্মেহানী বলেন, আমি রাতে তাকে দেখতে না পেয়ে আমার নিদ্রা চলে যায় এ আশংকায় যে, হয়তো কোন কুরাইশী শত্রু তাকে পাকড়াও করেছে ৷ ইবনে সা’দ বলেন, ঐ রাতে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান ৷ তাঁর সন্ধানে আব্দুল মুত্তালিবের বংশীয় লোকজন বিভিন্ন দিক প্রান্তে বেরিয়ে পড়েন ৷ চাচা হযরত আব্বাস (রাঃ) সন্ধান করতে গিয়ে জিতুওয়া নামক স্থানে পৌঁছলেন এবং চিৎকার করে আওয়াজ দিলেন, হে মুহাম্মদ ! তিনি তাঁর ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে বললেন, লাব্বাইকা, লাব্বাইকা, অর্থাৎ আমি আপনার খেদমতে হাজির ! হযরত আব্বাস (রাঃ) বললেন, হে ভাতিজা ! তুমি তোমার বংশীয় লোকজনকে ভীষন চিন্তায় ফেলে দিয়েছ ৷ তুমি ছিলে কোথায়? উত্তরে ভাতিজা বললেন, আমি অদ্যরাতে বায়তুল মুকাদ্দাসে গিয়েছিলাম ৷ চাচা জিজ্ঞেস করলেন, অদ্যরাতে? তিনি বললেন, জি, হ্যাঁ ৷ তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, ভালো অবস্থা ব্যতীত অমঙ্গল কিছু ঘটেছে কি? তিনি উত্তর দিলেন, না, শুভ অবস্থা ছাড়া অমঙ্গল কিছুই ঘটেনি ৷ ( সীরাতে হালাবিয়া ১/৪০৫ পৃঃ)
শারীরিক মি’রাজের বিরোধী তৃতীয় দলীলঃ

قوله تعالى - وما جعلنا الرؤيا التى ارينك الافتنة للناس— قال ابن عباس رضى الله عنه هى رؤيا عين اريها رسول الله صلى الله عليه و سلم - ليلة اسرى به الى بيت المقدس- رواه البخارى ج٢

আল্লাহ পাকের বাণীঃ আমি আপনাকে যে স্বপ্ন দেখালাম তা কেবলমাত্র মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, এখানে رؤيا শব্দের অর্থ চক্ষু দর্শন, স্বপ্ন দর্শন নয় পবিত্র মক্কা নগরী হতে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত পথিমধ্যের যাবতীয় নিদর্শনাবলী আঁ-হযরত (সঃ) কে মহান আল্লাহ প্রতক্ষ করায়েছেন স্বপ্নযোগে নয় বরং স্বচক্ষে ৷ (ছহীহ বুখারী ২/৯৭৯)
একথা সকলে জানে যে, কেহ কারো স্বপ্নের কাহিনী শুনে অস্বীকার করেনা, অথচ মি’রাজের ঘটনা শুনে কোরাইশ কাফেররা তেলেবেগুনে জ্বলে উঠছিল ৷ এতেও মহানবী(সঃ) এক শারীরিক মি’রাজের সত্যটিই প্রতিভাত হয় ৷
মুসলিম শরীফে বর্ণিত আছে, কুরাইশী সর্দারগন মি’রাজের সংবাদ শুনে মহানবী (সঃ) কে বায়তুল মোকাদ্দাসের বিভিন্ন বস্তু সম্পর্কে প্রশ্ন করতে থাকে ৷ মহান আল্লাহ হযরত জিবরাঈল আমীনের মারফত বায়তুল মোকাদ্দাসের নকশা হযরত রাসূলে পাক (সঃ) এর সামনে তুলে ধরেন ৷ তিনি স্বচক্ষে বায়তুল মুকাদ্দাসের যাবতীয় বস্তু দেখে দেখে কাফেরদের প্রশ্নের উত্তর দিতে ছিলেন ৷ এটা তাঁর দৈহিক মি’রাজের প্রকৃত প্রমাণ ৷
বিরোদ্ধবাদীদের চতুর্থ দলীল হলো- মধ্যাকাশের অগ্নিস্তর ও শীতের স্তর রয়েছে ৷ মি’রাজ যদি দৈহিক হয় তাহলে এসব স্তর অতিক্রম করা তাঁর পক্ষে কি করে সম্ভব হলো? এ প্রশ্নের উত্তরে আমরা বলবো, হযরত ইব্রাহীম (আঃ)- এর যে প্রতিপালক নমরুদের অগ্নিকুন্ডকে নিমিষের মধ্যে ঠান্ডা ও শান্তিময় করে দিয়েছেন, যে মহান আল্লাহ মুহূর্তের মধ্যে ফেরাউনের সতের লক্ষ ফৌজকে পানিতে ডুবায়ে ধ্বংস করতঃ তাঁর প্রিয় রাসূল হযরত মূসা (আঃ) কে বনী ইসরাঈল সহ নদীর কূলে উঠালেন সেই আল্লাহ নিখিল সৃষ্টির মূল মহানবী সাইয়্যেদুল মুুুুরসালীন হুযুর পাক (সঃ) কে সালাম ও অভিনন্দন জানাবার জন্য স্বীয় আলীশান দরবরে পদার্পনের আহবান জানালেন ৷ সুতরাং তাঁর ভ্রমন পথে জ্বলন পোড়নের কোন প্রশ্নই হতে পারেনা ৷
এ সম্পর্কে ছহীহ বুখারী শরীফের হাদীছখানি প্রনিধানযোগ্য যা ১/৫৪৮ পৃষ্ঠায় বর্ণিত ৷
হুজুরে আকরাম (সঃ) বলেছেন, অতঃপর আমার নিকট গাধার চেয়ে উঁচু এবং খচ্চরের নীচু আকৃতির একটি বাহন যার নাম বোরাক আনয়ন করা হলো ৷ যা এতই দ্রুতগতি সম্পন্ন যে, সে এক কদমে তার চক্ষুদৃষ্টির শেষ প্রান্তে পৌঁছে যায় ৷
সুতরাং যিনি এতো দ্রুতগতি সম্পন্ন বাহনের আরোহী তার শরীরকে কোন বিদ্যুৎতে বা শৈত্যপ্রবাহ কোন প্রকার ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে না ৷ বস্তুতঃ তিনি হলেন মহিয়ান গড়িয়ান আল্লাহ তা’য়ালার আমন্ত্রিত বিশেষ সম্মানিত মেহমান ৷ মহান আল্লাহ যিনি হলেন রাজাধিরাজ তাঁর আলীশান দরবারে এহেন সম্মানিত মেহমানের পদার্পনে কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা থাকতে পারেনা বরং যাতায়াত পথের সর্বত্র সর্বস্তরের শাহী খাদেম ও কর্মীবৃন্দ সেই মেহমানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করতে থাকেন ৷ যাতায়াত পথের অগ্নিস্তর, শীতের স্তর ও মধ্যাকর্ষন শক্তি ইত্যাদি প্রতিবন্ধক গুলে, তাঁর ক্ষেত্রে অকার্যকর হিসেবে সাব্যস্ত, যেহেতু তিনি মহান স্রষ্টার বিশেষ মেহমান ৷
অতএব, প্রমাণিত হলো রাসূল (সঃ) এর পবিত্র মি’রাজ স্বশরীরে সংঘটিত হয়েছে যা কোরআন হাদীস দ্বারা প্রমাণিত৷ আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার তাওফীক দান করুক ৷ আমিন৷

লেখকঃ‌ মুফতি মুহা. হাবিবুর রহমান মোহেব্বী,
( ইসলামী লেখক ও গবেষক, সদস্য মুহেব্বি প্লাটফর্ম)

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)