নবীজির শাফায়াত মিলবে যাদের ভাগ্যে

কাজী রাকিব
কাজী রাকিব, নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:১৯ এএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

---

হাশরের ময়দান। হিসাব নিকাশের পালা শেষ। কারও জন্য জান্নাতের ফয়সালা কারও জন্য জাহান্নাম। কেউ অল্পকিছু আমলের জন্য আটকে আছেন। কারওবা রহমতের প্রত্যাশা। একটুখানি সুপারিশের জন্য বান্দারা দৌড়াদৌড়ি করবেন নবীদের দ্বারে দ্বারে। সেদিন কারও সাহস হবে না আল্লাহর দরবারে সুপারিশের হাত বাড়াতে। একমাত্র নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছাড়া।

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি তখন আল্লাহর আরশের নিচে এসে সিজদায় পড়ে কান্নাকাটি করতে থাকব। অতপর আল্লাহর তরফ থেকে বলা হবে, আপনি মাথা উঠান, আপনার প্রার্থনা কবুল করা হবে। হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথা উঠাবেন এবং বলবেন, হে প্রভু! তুমি আমার উম্মতদের ক্ষমা কর। আল্লাহ তায়ালা বলবেন, হে আমার প্রিয়নবী! আমার নিরাপরাধ বান্দাদের বেহেশতের ডান দিকের দরজা দিয়ে প্রবেশ করান। অন্য দরজা দিয়েও ইচ্ছে করলে প্রবেশ করাতে পারেন।
হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, আমি এক দাওয়াতে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ছিলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি কিয়ামতের দিন সকলের সর্দার হব। সে কঠিন দিনে কষ্ট সইতে না পেরে মানুষ অস্থির হয়ে যাবে এবং কার দ্বারা সুপারিশ করলে আল্লাহ কবুল করবেন এমন খোঁজ করতে থাকবে। তারা অন্যান্য নবীগণের নিকট থেকে ব্যর্থ হয়ে সর্বশেষে সমস্ত লোক হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলবে আপনি সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী, আমাদের কষ্ট তো আপনি দেখেছেন, এখন দরবারে এলাহীতে আমাদের জন্য সুপারিশ করুণ যাতে আমাদেরকে পরিত্রাণ দেওয়া হয়।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালার কাছে থেকে এক দূত এসে জানালেন যে, আল্লাহ তায়ালা আমাকে দুটি প্রস্তাব দিয়ে পাঠিয়েছেন। এ দুটির মধ্যে থেকে যেকোনো একটি গ্রহণ করতে হবে। প্রস্তাব দুটি হলো, আমার অর্ধেক উম্মতকে বিনা হিসেবে বেহেশত দেওয়া হবে অথবা আমি যেকোনো উম্মতের জন্য আমার ইচ্ছেমত সুপারিশ করতে পারব। আমি সুপারিশ করার ক্ষমতাটাকেই গ্রহণ করেছি। কাজেই আমি মুশরিক ব্যতীত সকলের জন্য শাফায়াত করব।

হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বলেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা সকল নবীদেরকেই একটি বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছেন। তা এটাই যে, তাদের একটি দোয়া অবশ্যই কবুল করা হবে। সকল নবীই প্রয়োজন মোতাবেক এক একটি জিনিস চেয়ে নিয়েছেন এবং তারা সকলেই পার্থিব জিনিস চেয়েছেন। কিন্তু আমাদের নবীজি বলেন, ‘আমি এ সুযোগ পৃথিবীতে গ্রহণ করিনি। রোজ হাশরে আমি আমার প্রাপ্য আদায় করব এবং তা হবে আমার উম্মতের নাজাতের জন্য সুপারিশ করা।’

যাদের জন্য হবে সুপারিশ:

হাশরের ময়দানে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে অতি শিগগিরই হিসাব-নিকাশের কাজ শুরু করার জন্য সকল নবীদের কাছে যেতে শুরু করবে। কিন্তু সকলেই অপরাগতা প্রকাশ করার পর বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত হবে এবং তিনি পৃথিবীর সকল মানবজাতির জন্য সুপারিশ করবেন।

দ্বিতীয় সুপারিশ হবে, প্রথম পর্যায়ের মুমিনদের হিসাব-নিকাশ ছাড়াই বেহেশতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য। এটাও শেষ নবীই করবেন।

তৃতীয় সুপারিশ হবে, যারা নিজ অপকর্মের জন্য জাহান্নামে যাওয়ার উপযুক্ত হয়ে পড়েছে তাদেরকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য। এ সুপারিশ নবীজি করবেন এবং ওলামা, শুহাদা এবং অন্যান্য মুমুমিনরাও করবেন।

চতুর্থ সুপারিশ হবে, ওই সকল গোনাহগারদের জন্য যাদেরকে জাহান্নামে দাখিল করা হয়েছে তাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য প্রার্থণা করা হবে। আম্বিয়ায়ে কেরাম এবং ফেরেশতারা এজন্য সুপারিশ করবেন।

পঞ্চম সুপারিশ করা হবে, যাদেরকে বেহেশতে দাখিল করা হয়েছে তাদের মর্যাদা আরও বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য।

PN#saa_16919

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)