বৃদ্ধ মালীর হাতে লাগানো গাছের ফল ও মাছ নিয়ে সেই বাড়িতে ইউএনও ইকবাল

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০২:২২ পিএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০২০

ছবিঃ সংগ্রহীতসাতক্ষীরার তালা উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ের বৃদ্ধ ও অসুস্থ মালী তারাপদ দাস। যৌবনের ৩০ বছর পার করছেন তালা উপজেলা পরিষদে। উপজেলা পরিষদ চত্বরে নিজ হাতে লাগিয়েছেন শতাধিক ফলদ ও বনজ গাছগাছালি। সরকারি পুকুরে ছেড়েছেন মাছ। তবে তার ভাগ্যে জোটেনি সেই গাছের কোনো ফল ও পুকুরের মাছ।

২০১২ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চাকরি থেকে অবসরে চলে যান তারাপদ। সেই থেকে তার খোঁজ রাখেনি কেউ। অবশেষে নিজের লাগানো গাছের ফল ও পুকুরের মাছ ভাগ্যে জুটল তার। ইউএনও মো. ইকবাল হোসেনকে বাড়িতে পেয়ে কাঁদলেন তারাপদ দাস।

শনিবার দুপুরে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের মহান্দি গ্রামে তারাপদ দাসের বাড়িতে হাজির হন তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইকবাল হোসেন। সঙ্গে নিয়ে যান উপজেলা পরিষদের সরকারি পুকুরের মাছ, পরিষদ চত্বরে তারাপদ দাসের হাতে লাগানো নারকেল গাছের ফল ও শীতবস্ত্রসহ কম্বল। খোঁজখবর নেন তার শারীরিক অবস্থার।

তারাপদ দাসের ছেলে সাগর দাস জানান, ইউএনও স্যার বাড়িতে এসে বাবার খোঁজখবর নিয়েছেন। সরকারি মাছ, শীতবস্ত্র, নারকেল ও নগদ টাকা সহায়তা করেছেন। ঘোষণা করে গেছেন এখন থেকে বাবাকে প্রতিমাসে সরকারিভাবে সহায়তা করা হবে।

তিনি বলেন, বাবা ৩০ বছর ইউএনও অফিসের মালী পদে চাকরি করেছেন। চাকরি ছেড়ে দেয়ার পর কখনও কেউ খোঁজ নেয়নি। দুর্ঘটনার পর ২০১২ সালে চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন। বয়সও ৮০ বছর পার হয়েছে তার। এখন বাড়িতে অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন।

নিজের হাতে লাগানো নারকেল গাছের ফল পেয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন তারাপদ দাস। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, কেউ খোঁজ নেয় না। স্যার আমার বাড়িতে এসেছেন আমি খুব খুশি হয়েছি।

তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইকবাল হোসেন জানান, শনিবার খুব ভোরে তারপদ দাস আমার সরকারি বাসায় গিয়েছিলেন একটি কম্বলের জন্য। তখন আমি জানতাম না যে এই তারাপদ বাবুই ছিলেন উপজেলা পরিষদের মালী। তিনি ৩০ বছর সেখানে চাকরি করেছেন। নিজ হাতে উপজেলা পরিষদের শতাধিক ফলদ ও বনজ গাছ লাগিয়েছেন। পুকুরে মাছ ছেড়েছেন। তবে সেটি তিনি কখনও ভোগ করতে পারেননি। ঘটনাটি জানার পরই সহমর্মিতা নিয়ে তার বাড়িতে গিয়েছিলাম।

তিনি বলেন, কিছু ফল, মাছ ও নগদ টাকা উপহার দিয়েছি। এছাড়া রেজুলেশন করে এখন থেকে উপজেলা পরিষদ থেকে প্রতিমাসে তার জন্য নগদ কিছু সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে। যেটি তিনি যতদিন জীবিত থাকবেন বাড়িতে বসে পাবেন।

তিনি আরও আমাদের সারাদেশের উপজেলা পরিষদে এমন অনেক মানবিক ও স্পর্শকাতর গল্প রয়েছে। যিনি করেন বা গড়েন তিনি ভোগ করতে পারেন না। তবে সেটি তার প্রাপ্য। আমি চাই সকল কর্মকর্তারা মানবিক হয়ে এসব মানুষদের খোঁজ নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াবেন। (তথ্য সূত্রঃ জাগো নিউজ)

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)