বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুর হামলায় নিখোঁজ ৫ জেলের মধ্যে দুজনের লাশ উদ্ধার, এখনো নিখোঁজ ৩

কাজী রাকিব
কাজী রাকিব, নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৩৫ পিএম, ১ মার্চ ২০২৩

ছবিঃ পাথরঘাটা নিউজবঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে যাওয়ার পথে ডাকাতির কবলে পরা এফবি ভাই ভাই ট্রলারে নিখোঁজ পাঁচ জেলের মধ্যে দুই জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

বুধবার সন্ধার পরে বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

উদ্ধারকৃতরা হলো ট্রলারের মাঝি কাইয়ুম জোয়াদ্দার ও বাবুর্চি আবুল কালাম। কাইয়ুম জোয়াদ্দার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের চামুপাড়া এলাকার মানিক জোমাদ্দারের ছেলে ও আবুল কালাম বরগুনা সদর উপজেলার রায়েরভোগ ইউনিয়নের মৃত্যু নাজেম হাওলাদারের ছেলে। এঘটনায় এখনো নিখোঁজ জেলেরা হলো আব্দুল আলিম (২২), ফরিদ মিয়া (৩০), খায়রুল (২৮)। এদের বাড়ি বরগুনা ও তালতলীতে।

বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ ধরে ফিরে আসা জেলেরা জানান, গভীর সাগরের সোনার চর এলাকায় পাঁচজনের লাশ ভাসতে দেখা গেছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে গত তিনদিন ধরে সোনার চর ও তার আশপাশের এলাকা খুঁজতে থাকি। মঙ্গলবার দুপুরে সোনার চর থেকে গভীরে কাইয়ুম জোয়াদ্দারের লাশ পাওয়া যায়। এর পর আজ বুধবার সোনার চর থেকে চার ঘণ্টা গভীরের বাইজদ্দার বয়া এলাকায় আমার বাবা আবুল কালামের লাশ ভাসতে দেখে উদ্ধার করি।

১২ দিন পর কিভাবে লাশের পরিচয় সনাক্ত করলেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে এক জেলের ছেলে রুবেল জানান, এঘটনায় ফিরে আসা জেলে ইয়াসিন জোমাদ্দার জানিয়েছেন আমার বাবার ডান হাতে ডাকাতরা কোপ দিয়েছিল। গভীর সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায় ইয়াসিন জোমাদ্দার সেই ক্ষত স্থান বেঁধে দিয়েছিল।

জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, বঙ্গোপসাগরে ডাকাতির ঘটনায় ৯ জেলেকে পিটিয়ে সাগরে ফেলে দেওয়া জেলেদের মধ্যে চার জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও এদের মধ্যে একজন মারা গেছে। নিখোঁজ অপর পাঁচ জেলের মধ্যে ১২ দিন পর দুই জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের নিয়ে ঘাটে পৌঁছতে রাত দশটা নাগাদ বাজতে পারে।

পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ শাহ আলম হাওলাদার জানান, উদ্ধার হওয়া দুই জেলের মরদেহ গভীর বঙ্গোপসাগর থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে। মালিক সমিতির নেতাদের মাধ্যমে মরদেহ দুটি বরগুনা মর্গে নিয়ে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

উল্লেখ্য গত ১৭ ফেরুয়ারি দিবাগত রাত দুইটার দিকে বরগুনার পাথরঘাটা থেকে ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে পায়রাবন্দর থেকে পশ্চিমে বয়া এলাকায় এফবি ভাই ভাই ট্রলারে থাকা ১৮ জেলের মধ্যে ৯ জেলেকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেয়। এছাড়াও বাকি ৯ জেলেকে জিম্মি করে মালামাল লুটে নেয় দস্যুরা। এর তিনদিন পর নিখোঁজ ৯ জেলের মধ্যে ৪ জেলেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করলেও চিকিৎসাধীন এক জেলের মৃত্যু হয়। এখন বাকি ৫ জেলের মধ্যে দুই জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)