পাথরঘাটার উপকুলে বলেশ্বরের বুকে জেগে ওঠা ‘বিহঙ্গ দ্বীপ’

এ এস এম জসিম
এ এস এম জসিম, বার্তা সম্পাদক
প্রকাশিত: ১২:২৯ পিএম, ১৯ জুন ২০১৮ | আপডেট: ১১:২৪ এএম, ২০ জুন ২০১৮

‘বিহঙ্গ দ্বীপ’উপরে নীল আকাশ, নিচে চারদিকে জলরাশি, মাঝখানে প্রকৃতি সাজিয়েছে অপরূপে একটি দ্বীপ যার নাম ‘বিহঙ্গ দ্বীপ’। দ্বীপটির চারপাশে অথৈ জলরাশি আর সবুজ বেস্টুনি দিয়ে ঘেরা।

একদিকে রয়েছে ধু-ধু বালুচর, অন্যদিকে রয়েছে শিতল বালু, যেখানে প্রকৃতি অপরূপে একে রাখে বিভিন্ন ধরনের ফুল। অন্যদিকে, ঢেউয়ের গর্জন আর সুর্যাস্ত। পাখির কিচির-মিচির আর হরিণের ছোটাছুটিতো আছেই। কাঁকড়া, শামুকের অবাধ ছোটাছুটিতো আর বিভিন্ন পাখির কলকাকলী মুহুর্তেই মুগ্ধ করে দেয় যে কাউকে।
জেগে ওঠা ‘বিহঙ্গ দ্বীপ’
এতো গল্প, এতো প্রশংসা আর এতো গুনগান যার নাম ‘বিহঙ্গ দ্বীপ’। পাথরঘাটার কয়েকজন সংবাদকর্মী আর কয়েকজন সমাজকর্মী পর্যটক দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর আবিষ্কার করেছেন হরেক গুনের সৌন্দর্যে ভরা এই দ্বীপের সন্ধান। তারাই নাম রেখেছেন ‘বিহঙ্গ দ্বীপ’। নাম আর বাস্তবে যেন পুরো মিল। যেখানে বিহঙ্গের সঙ্গে বিহঙ্গের মিলন। বিহঙ্গরা উড়ে এসে জুড়ে বসে বিহঙ্গ দ্বীপে। দূর থেকে দেখলে মনে হবে সাগরের মাঝে বড় কোনো সবুজ পাহাড়। সাদা বালুচরের লাল কাঁকড়া লাল গালিচা দূরে সাদা গাংচিল, বক, চেগা পাখি। বনের মধ্যে পায়ে হাঁটা পথে কিছু দূর গেলে পাখির কলোরব আর চোখের সামনে দৌঁড় দিয়ে যাবে মায়া হরিনের পাল।
য়েকজন সংবাদকর্মী আর কয়েকজন সমাজকর্মী
সুন্দরবন সংলগ্ন বলেশ্বর নদ। যে নদের পূর্বে রয়েছে পাথরঘাটা আর পশ্চিমে রয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্য ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন। বলেশ্বর নদের মধ্যবর্তী জলরাশির মাঝে জেগে ওঠে দ্বীপটি। পার্শবর্তী রুহিতা গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দাদের তথ্যমতে ওই দ্বীপটি জেগে ওঠেছে অন্তত ২০ থেকে ২৫ বছর আগে। আস্তে আস্তে প্রকৃতি নিজের সাজেই সজ্জিত হয়েছে এ দ্বীপটি। এক সময় এ দ্বীপটিকে স্থানীয় জেলেরা ধানসির চর বলেই জানতো। কারণ প্রথমে এ চরটি জেগে ওঠার সময় প্রচুর ধানসি ছিল। যা কালের পরিক্রমায় এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
বিহঙ্গ দ্বীপের ভিতরের দৃশ্য
সুন্দরবন সংলগ্ন বলেশ্বর নদের উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিম গোলাকার প্রায় ১৫০ একর জেগে উঠেছে বিশাল এই চর। এ চরে স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলেদের আনাগোনা ছিল অনেক আগেই। এ চরের সঙ্গে অনেক আগ থেকেই স্থানীয় সংবাদকর্মীরা পরিচিত ছিলেন। অনেক আগ থেকেই এ চরটি নাম করণসহ পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য নানা কৌশল অবল্বন করেছেন সংবাদকর্মীরা।
কয়েকজন সংবাদকর্মী আর কয়েকজন সমাজকর্মী পর্যটক
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর প্রবীণ সাংবাদিক মির্জা শহিদুল ইসলাম খালেদ, পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী, স্বেচ্ছায় সেবাদান সংগঠন ‘আস্থা’র সভাপতি সাংবাদিক ও গবেষক শফিকুল ইসলাম খোকন, পর্যটনপ্রেমী আলোকচিত্রী সাংবাদিক আরিফুর রহমান, প্রত্যয়ের সভাপতি চিত্রশিল্পী মেহেদি শিকদার, সাংবাদিক এএসএস জসিম, আবুজর ইবতে রাফি, সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. বাইজিদ, জেলে মোস্তফা মুন্সী চরটিতে গিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে বিহঙ্গ দ্বীপের সূচনা করেন। স্থাপন করেন ‘বিহঙ্গ দ্বীপ’ লেখা নাম ফলক। তাদের সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করেন, উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, বনবিভাগ, স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।
বিহঙ্গ দ্বীপের বিস্তৃর্ন এলাকা
মির্জা শহিদুল ইসলাম খালেদ ও রহমান আরিফুর বলেন, এ দ্বীপ যে কাউকে মুগ্ধ করবে। প্রকৃতি যেন নিজ হাতে অপরূপে সাজিয়ে রেখেছেন। দ্বীপটির চারপাশে অথৈ জলরাশি ও সবুজে ঘেরা। ঢেউয়ের গর্জন আর সুর্যাস্ত। পাখির কিচির-মিচির তো আছেই। এছাড়াও কাঁকড়া, শামুকের অবাধ ছোটাছুটি আর বিভিন্ন পাখির কলকাকলী মুহুর্তেই মুগ্ধ করবে পর্যটকদের।

পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রিপন বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত ‘বিহঙ্গ দ্বীপ’ নামটি শুনে। আমরা আরও আনন্দিত এ রকমের একটি দ্বীপ আমাদের এলাকায় আবিষ্কার হয়েছে। আমাদের উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য যা করা দরকার তাই করবো।

পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/১৯ জুন

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)