“পাথরঘাটা পৌর এলাকায় তীব্র পানি সংকট” বেড়েছে বোতলজাত পানির বিক্রি (ভিডিও)

কাজী রাকিব
কাজী রাকিব, নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১৬ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ | আপডেট: ০৫:৩৮ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

---
মোহাম্মদ কাজী রাকিব পাথরঘাটা নিউজঃ
গত সোমবার সকালের আকস্মিক ঝড়ের কারণে দোকান, বসতবাড়ি, গাছপালার সাথে বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পাথরঘাটা উপজেলা বাসীর।

গত তিন দিন ধরে দৈনন্দিন জীবনের নিত্য প্রয়োজনীয় পানি ও খাবার পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় হাহাকার শুরু হয়েছে পাথরঘাটা পৌর এলাকায়। খাবার পানির সংকট নিরসনে বোতলজাত পানির চাহিদা বেড়েছে পাথরঘাটা পৌর এলাকায়। বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থায় পৌরসভার পানির সংগ্রহ করতে না পারায় এ সংকটময় অবস্থায় পরতে হয়েছে পাথরঘাটা পৌরবাসীর।

পৌরসভার সুত্রে জানা যায়, ডানিডার সহযোগিতায় পৌর এলাকা থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে কাকচিড়া ইউনিয়নে গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। সেখান থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি সংগ্রহ করে পৌর এলাকায় পানি সরবরাহ করা হয়। সম্প্রতি ঝড়ের কারণে তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় পানি সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। তবে বিদ্যুৎ এলে স্বাভাবিক হবে বলে জানায় সুত্র।

তবে বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা করে পানি সরবরাহ করা দীর্ঘ দিনের দাবি পৌরবাসীর। মাস শেষে দেশের সর্বোচ্চ পানি বিল পরিশোধ করতে হয় পাথরঘাটা পৌর এলাকায় বাসিন্দাদের। পৌরসভা কর্তৃক সরবরাহকৃত পানি প্রতি ঘনমিটার ২৫ টাকা দরে মাসে সর্বনিম্ন ১০ ঘনমিটার পানির মূল্য সর্বনিম্ন ২৫০ টাকা পরিশোধ করতে হয় গ্রাহকদের।

পৌর এলাকার বাসিন্দা সমাজ সেবক রফিকুল ইসলাম কাকন মোল্লা বলেন, পাথরঘাটা পৌরসভাটি দ্বিতীয় শ্রেণীর
পৌরসভার হলেও এর কার্যক্রম নিম্ন মানের। তিনি আরো জানান পৌরসভার সরবরাহকৃত পানি ব্যবহার করতে পারি আর না পারি মিনিমাম চার্জ মাসে ২৫০ টাকা দিতেই হয়। কিন্তু বিদ্যুৎ যখন থাকেনা তখন পানিও থাকেনা। কিন্তু মাস শেষে সর্বনিম্ন ২৫০ টাকা খাড়া।

আরেক বাসিন্দা সুলতান মাহমুদ জানান, খাবার পানির জন্য সাপ্লাইয়ের পানির বিকল্প হিসেবে পৌরসভার যে রিজার্ভ পুকুরের পানি নিয়ে পান করবো তারো কোনো উপায় নেই। একমাত্র রিজার্ভ পুকুরটি ও অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে। পুকুরটির নেই কোন সীমানার প্রাচীর। চতুর্দিকের ময়লা আবর্জনা পড়ছে পুকুরের পানিতে। আর অনেক দখলদারির কবলে পড়ে পুকুরটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে।

ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন


এছাড়াও একধিক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, পাথরঘাটা পৌর এলাকার একাধিক পুকুরই ব্যাবহারের অযোগ্য। এর মধ্যে কালি মন্দিরের পিছনের পুকুর, পুরাতন সোনালী ব্যাংকের পিছনের পুকুর, খোদ পৌরসভার পিছনের পুকুরটিও ব্যাবহারের অযোগ্য হয়ে আছে।

অপরদিকে সুপেয় পানির অভাবে দোকান থেকে বোতলজাত পানি কিনে পানির চাহিদা মেটাতে হচ্ছে সচেতন বাসিন্দাদের। পাথরঘাটা পৌর এলাকার ব্যবসায়ী মোঃ জাহিদ হোসেন জানান, গত তিনদিন ধরে বোতলজাত পানির বিক্রি বেড়েছে।

এদিকে পাথরঘাটা পল্লী বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের যোগাযোগ করলে তারা জানান, সম্প্রতি ঝড়ের কারণে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে যাওয়া ও তার ছিঁড়ে যাওয়ার কারণে উপজেলায় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুতের সরবরাহ স্বাভাবিক করতে তিনদিন থেকে দ্রুতগতিতে কাজ চলছে।

তবে এই সংকট নিরসনে পৌর পরিষদকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলে মনে করেন স্থানীয় সুশিলসমাজ। আর পৌরবাসীর দাবি বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করে পৌর পানি সরবরাহ করার ব্যবস্থা গ্রহণ অথবা রিজার্ভ ট্যাংকির মাধ্যমে পানি সংরক্ষণ করা যায় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)