ইন্টারনেটব্যাধিতে ভুগছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান! পরিত্রাণের উপায় কী? হুসাইন মুহাঃ বাকিবিল্লাহ

কাজী রাকিব
কাজী রাকিব, নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:০৪ পিএম, ৫ এপ্রিল ২০১৯

হুসাইন মুহাঃ বাকিবিল্লাহ
স্বল্প মূল্যে ইন্টারনেট সুবিধা এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে অধিকাংশ স্কুল, কলেজ মাদরাসায়। রুটিন মাফিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে ইন্টারনেট সেবা।

সারা বিশ্বের ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষাক্ষেত্রে যতটা নতুনত্ব ও অগ্রগতি সৃষ্টি করছে। ঠিক ততটাই পিছিয়ে দিচ্ছে মুসলমানদের ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করার একমাত্র শিক্ষাব্যস্থাকে।

বিভিন্ন শিক্ষকগণ ক্লাসের ছাত্র ছাত্রিদের পড়া শোনানোর সময়ও মোবাইল হাতে ইন্টারনেটে ব্যস্ত থাকেন। ফলে তাদের জরুরি বিষয়ে অসংখ্য ত্রুটি রয়ে যাচ্ছে। নির্ভুল পড়াশুনাতে শিক্ষকদের অলসতায় শিক্ষার্থীদের কাঙ্খিত উন্নতি হচ্ছে না।

এছাড়া শিক্ষক কর্তৃক নিরবিচ্ছন্ন তদারকিতেও ঘাটতি হচ্ছে । দিনে ও রাতে বিশ্রামের নির্ধারিত সময়ের একটি বড় অংশ জুড়ে মোবাইলে ফেসবুক ও ইউটিউব ঘাঁটাঘাটিতে ব্যস্ত সময় পার করেন অনেক শিক্ষক। ফলে ঘুমের ঘাটতি থাকায় ক্লাসে মেজাজ খিটখিটে ভাব দেখান তারা। চুন থেকে পান খসলেই সর্বনাশ বেঁধে যায়।

এ সংক্রান্ত অভিযোগ ও তথ্য যাচাই করলে, অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের সময় মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা ও শর্ত উল্লেখ করে নিয়োগ দেয়া উচিৎ।

এছাড়া ক্লাসে পূর্ণ আন্তরিকতা ও রুটিন মাফিক ক্লাস করানোর মানসিকতা থাকা সাপেক্ষে শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে বেতন নির্ধারণ করা উচিৎ। শিক্ষকদের রুটিন না মানা, যখন তখন মোবাইল ব্যবহার করা যেন তাদের আরেকটা পেষা হয়ে দাড়িয়েছে।

এক্ষেত্রে উপায় পাওয়ার মাধ্যম হলো, শিক্ষকদের বোঝাতে হবে। নিয়োগের সময় কড়া হুশিয়ারী দিয়ে নিয়োগ দিতে হবে। কাজ না হলে, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নেটওয়ার্কিং জ্যামার লাগিয়ে শিক্ষকদের শিক্ষাদানে মনোনিবেশ করাতে হবে। নেট ব্যবহারে শিক্ষকদের মানসিক প্রশান্তি হ্রাস পায় ও স্থিরতা হারিয়ে যায়।

ক্লাসে মোবাইল ও নেট ব্যবহার বন্ধ করতে জাতীয় পর্যায় থেকে প্রচার ও করণীয় নির্ধারণ করতে খুব শিগগির উদ্যোগ নেয়া দরকার।

দ্বিতীয়তো অধিকাংশ ক্ষেত্রে হিফজ মাদরাসা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে কড়াকড়ি করা হলে না বলেই হুট করে চলে যাওয়ার মানসিকতা অনেক হাফেজ শিক্ষকের রয়েছে। আবার মোবাইল বা নেট ব্যবহারে শর্ত জুড়ে দিলে তারা থাকতে চান না। বিশেষ করে এখনো প্রতিষ্ঠিত নয় বা খ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম হয়নি এমন মাদরাসাগুলোতে হিফজ শিক্ষকদের রুটিনওয়ার্কের মধ্যে অনেক কাজই প্রশ্নবিদ্ধ ও অগ্রহণযোগ্য।

হিফজ বিভাগে নূরানী ট্রেনিং , বেফাক ও সংশ্লিষ্টদের আরো ভাবতে হবে। নতুবা অদূর ভবিষ্যতে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় হিফজুল কুরআন শিক্ষা ব্যবস্থা হুমকির মধ্যে পড়বে।

নির্ভুল পড়া ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্বার বিষয়ে তারা অমনোযোগী থাকেন। অথচ হিফজের শিক্ষক যাবতীয় শর্ত মেনে তার জন্য নির্ধারিত বেতনে চাকরি করতে রাজি হয়েই শিক্ষকতা করছেন। তাহলে তিনি কেন নিয়ম ভেঙ্গে নিজস্ব আঙ্গিকে হিফজ বিভাগে শিক্ষকতা করবেন?

শিক্ষা ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যবহার সংক্রান্ত এত সমস্যা হওয়ার পরও জাতীয় পর্যায় থেকে ক্লাসে মোবাইল ব্যবহারের বিধি নিষেধ সম্পর্কে সজাগ করা হচ্ছে না কেন? আমরা এসব সমস্যায় চরমভাবে ভোগান্তির শিকার হওয়ার পরও কেউ উদ্যোগ নিচ্ছি না। এটার জন্য আমাদের কর্তা ব্যক্তিদের অলস মানসিকতা দায়ী

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)