পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি জনশক্তি কোম্পানীর প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা আমতলীতে দুই ছিনতাইকারী গ্রেফতার, সারে এগার লক্ষ টাকা উদ্ধার

এ এস এম জসিম
এ এস এম জসিম, বার্তা সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৭:৪৮ পিএম, ১০ মার্চ ২০২০

ছবিঃ সংগ্রহীতআমতলী প্রতিনিধি
গত মাসের ৫ ফেব্রুয়ারী বরগুনার আমতলী- কলাপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কে টিয়াখালী কলেজ সংলগ্ন এলাকায় মাইক্রোবাস আটকিয়ে সন্ত্রাসীরা পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২টি জনশক্তি কোম্পানীর ৫ জনকে মেরে আহত করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত থাকার অপরাধে পৃথক দুটি স্থান থেকে ছিনতাইকারী রাহাত ফকির (২৮) ও সেলিম হাওলাদারকে (৩০) সারে এগারো লক্ষ টাকাসহ আমতলী থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে দুই জনকে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দি দেওয়ার জন্য আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, গত মাসের ৫ ফেব্রুয়ারী বিকেল সারে ৪টার দিকে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩টি জনশক্তি রপ্তানি কারক প্রতিষ্ঠান জেপি ট্রেডার্স, এসইডব্লিউ, আরইডব্লিউ কোম্পাণীতে কর্মরত শ্রমিকদের বেতনের আনুমানিক ৯৭ লক্ষ টাকা প্রিমিয়ার ব্যাংক বরিশাল শাখা থেকে ৪টি চেকের মাধ্যমে তুলে মাইক্রোবাস যোগে কলাপাড়া পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বিকেলে সারে ৪টায় আমতলী- কলাপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কে টিয়াখালী কলেজ সামনে পৌছলে ৭/৮টি মোটর সাইকেল যোগে আসা মুখোশ ও কালো গ্লাস পড়ে সন্ত্রাসীরা একটি বাশ বোঝাই ভ্যানগাড়ী দিয়ে রাস্তা আটকিয়ে মাইক্রোবাসটি ঘিরে ফেলে। সন্ত্রাসীরা মাইক্রোবাসের পিছন ও পাশ দিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে গ্লাস ভেঙ্গে গাড়ী থামাতে বাধ্য করে। এসময় সন্ত্রাসীরা মাইক্রো বাসের ভিতরে ঢুকে গাড়ীর ড্রাইভার আবুবক্করকে পিটিয়ে আহত করে গাড়ীর নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেয়। তারা প্রায় ৩/৪ কিলোমিটার গাড়ী চালিয়ে ভিতরে থাকা জেপি ট্রেডার্সের মালিক জুনু মিয়া (৩৫). তার বড় ভাই জুনায়েদ (৪২), ইপিসি অফিস স্টাফ তানভীর আহম্মেদ (৩৩), আরইডব্লিউ’র মালিক হোসাইন আহম্মেদ তালুকদার (৩৭), তার পার্টনার জুয়েল ফকির (৩২), এসিডব্লিউ কোম্পাণীর সুপার ভাইজার হুমায়ূন আহম্মেদকে (৪০) পিটিয়ে কুপিয়ে আহত করে তাদের সাথে থাকা ২টি ব্যাগে ৪৭ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার অন্যতম পলাতক আসামী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য বাহাদুর হাওলাদারের পুত্র ও চাকামইয়া ইউনিয়নের মনির মেম্বার হত্যা মামলার আসামী সেলিম হাওলাদারকে আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রীর নেতৃত্বে পুলিশ গত রবিবার (৮ মার্চ) সকাল ১১ টার দিকে চট্রগ্রাম জেলার বাইজিদ থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। সেলিমের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার ভোর ৪ টার দিকে আমতলী থানার ওসি আবুল বাশারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম পাশর্^বর্তী কলাপাড়া উপজেলার গামুরতলা থেকে আমতলী উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন ফকিরের ছোট ছেলে পলাতক আসামী রাহাত ফকিরকে গ্রেফতার করেন। এসময় রাহাত ফকিরের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া টাকার মধ্য থেকে সারে ১১ লক্ষ টাকা পুলিশ উদ্ধার করেন।

আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে গ্রেফতারকৃত দু’জনকে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার জন্য উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সাকিব হোসেনের আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদের জবানবন্দি রেকর্ড চলছিল।

এ মামলার তদন্তকারী অফিসার ও আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার বলেন, এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় এখন পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ছিনতাই হওয়া ৪৭ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকার মধ্যে ১২ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। আশাকরি দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকী আসামীদের গ্রেফতার ও টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হবো।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)