আমতলীতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের গাফলতিতে ৫৫ জন পরীক্ষার্থী ভালো ফলাফল অনিশ্চিত

asraful islam
asraful islam,
প্রকাশিত: ০৭:৪৯ পিএম, ১৮ মে ২০২৩

আমতলীতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের গাফলতিতে ৫৫ জন পরীক্ষার্থী ভালো ফলাফল অনিশ্চিতআমতলী (বরগুনা) সংবাদদাতা:
আমতলী বন্দর হোসাইনিয়া ফাজিল মাদ্রসার অধ্যক্ষ ইউনুচ আলীর গাফলতিতে মাদ্রাসার ৫৫ জন দাখিল পরীক্ষার্থীর ভালো ফলাফল অনিশ্চিত হয়ে পরেছে। এ ঘটনায় অধ্যক্ষের শাস্তি দাবীতে বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটার দিকে মাদ্রাসার সামনের সড়কে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধনে তারা দ্রুত অধ্যক্ষের কঠোর শাস্তি দাবী করেছেন।

জানাগেছে, উপজেলার আমতলী বন্দর হোসাইনিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে এ বছর ৫৫ জন শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছে। ওই পরীক্ষার্থীরা রেজিষ্ট্রেশনে চতুর্থ বিষয় হিসেবে কৃষি শিক্ষা পছন্দ করেন। ওই অনুসারে তারা গত দুই বছর লেখাপড়া করে আসছে।

গতকাল বুধবার ছিল ওই সকল পরীক্ষার্থীদের চতুর্থ বিষয় অর্থ্যাৎ কৃষি শিক্ষা পরীক্ষা। পরীক্ষা পরিচালনা কমিটি কৃষি শিক্ষা বিষয়ের পরিবর্তে বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ের প্রশ্নপত্র দেন। পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র দেখে বিচলিত হয়ে যান। তারা জানতে পারে অধ্যক্ষ নিজের ইচ্ছায় চতুর্থ বিষয়ে কৃষি শিক্ষার পরিবর্তে বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয় দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করেছেন। এতে বিপাকে পড়ে ওই মাদ্রাসার ৫৫ জন পরীক্ষার্থী। পরে তারা পরীক্ষা দিবে না বলে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে আসেন। কিন্তু পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির অনুরোধে তারা ওই বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নেন।

পরীক্ষার্থী তাসনিম, ফাতেমা, মহিউদ্দিন ও আশরাফুল অভিযোগ করেন অধ্যক্ষ ইউনুস আলী ইচ্ছা করেই আমাদের চতুর্থ বিষয়ে কৃষি শিক্ষার পরিবর্তে বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয় রেখে রেজিষ্ট্রেশন করেছেন। অধ্যক্ষ তাদের শিক্ষা জীবনকে নষ্ট করতে গত দুই বছর লুকোচুরি করেছেন যাতে তারা ভালো ফলাফল করতে না পারে। অধ্যক্ষ জেনেই তাদের চতুর্থ বিষয়ে এমন কর্মকান্ড করেছেন।

তারা আরো বলেন, ফরম পুরনের সময় অধ্যক্ষের কাছে রেজিষ্ট্রেশন কার্ড চেয়েছিলাম কিন্তু অধ্যক্ষ কার্ড না দিয়ে খারাপ আচরণ করে আমাদের তাড়িয়ে দিয়েছেন। অধ্যক্ষ ইউনুস আলীর এমন কর্মকান্ডের শাস্তি দাবী করে ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী ও তার অভিভাবকরা বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটার দিকে মাদ্রাসার সামনের সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে।

পরীক্ষার্থী মাহমুদ, হাবিুল্লাহ ও আবু তাহের বলেন, মাদ্রাসার অধ্যক্ষের গাফলতিতে আমরা ও পরিবার খুবই দুশ্চিন্তায় আছি। অধ্যক্ষের এমন ঘটনায় কঠোর শাস্তি দাবী করছি।

মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা ইউছুফ আলী ভুল স্বীকার করে বলেন, পরীক্ষার্থীদের জন্য দোয়া ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই।

মাদ্রসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ ইউনুচ আলীর মুঠোফোনে বলেন, শিক্ষার্থীদের পছন্দ মতই নবম শ্রেনীতে রেজিষ্ট্রেশনের সময় চতুর্থ বিষয়ে বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় দেয়া হয়েছে। সে অনুসারে গত দুই বছর পাঠদান করানো হয়। এখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনছে। এখানে আমার কোন ভুল ও দায় নেই।

আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হক মিলন বলেন, অধ্যক্ষের দুরদর্শীতার কারনে ৫৫ জন পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ জীবনে অন্ধকার নেম এলো। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, পরীক্ষার্থীরা আমার কাছে এসেছিল। তারা অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)