আমতলীতে মৃত ব্যাক্তির নামে চাল উঠিয়ে ডিলারের আত্মসাত!

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০১:০৬ পিএম, ১৬ মে ২০২০

ছবিঃ ইন্টারনেট থেকে নেয়াবরগুনার আমতলীতে মো. জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার নামে এক ডিলারের বিরুদ্ধে মৃত ব্যক্তি ও কার্ডধারীদের নামে চাল উঠিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ওজনে কম দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ইতোমধ্যেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ডিলার জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে আবুল কালাম, ইলিয়াস হোসেন ও আসমা বেগম।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ১, ২, ৩ ও ৪ নং ওয়ার্ডে সরকার ১০ টাকা কেজি মূল্যের চাল বিতরণের জন্য মো. জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদারকে গরীব, অসহায় ও দুস্থ পরিবারের মাঝে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণের জন্য ডিলার হিসেবে নিয়োগ দেয়। কিন্তু তিনি শুরু থেকেই চাল বিতরণে অনিয়ম করে আসছেন। জনপ্রতি ৩০ কেজি চালের বিপরীতে তিনি ২২ থেকে ২৫ কেজির বেশি চাল কখনোই দেন না। আবার কেউ ওজনে কম দেওয়ার প্রতিবাদ করলে তার চাল রেখে খালি হাতে পাঠিয়ে দেন এই ডিলার।

এ ছাড়া অনেক মৃত ব্যক্তি ও বৈধ কার্ডধারী পরিবারকে চাল না দিয়ে তিনি তা আত্মসাৎ করে ভূয়া মাস্টাররোল জমা দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। অনেক সময় কার্ডধারী মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়েও তাদের নামে চাল আত্মসাৎ করেন এই ডিলার।

লিখিত অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ১০ টাকা কেজি মূল্যের চাল বিতরণ তালিকায় নাম থাকা ক্রমিক নং ৩৮৪ ঘোপখালী গ্রামের মৃত জাহাঙ্গীর হাওলাদার, ক্রমিক নং ৩৭৯ মৃত মো. মোনসের আলী হাওলাদার ও ক্রমিক নং ২১২ চরকগাছিয়া গ্রামের মৃত লাল মিয়া মাঝিসহ অসংখ্য মৃত ব্যক্তির চাল তার পরিবারের কাউকে না দিয়ে আত্মসাৎ করেন মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।

অপরদিকে, কার্ডধারী ক্রমিক নং ৩৭৮ ঘোপখালী গ্রামের মো. নিজাম উদ্দিন হাওলাদার, ক্রমিক নং ৫৪ খলিল গাজী ও ক্রমিক নং ৩১২ নূর মোহাম্মদসহ অনেক কার্ডধারীকে চাল না দিয়ে তিনি নিজেই তা আত্মসাৎ করেন।

অভিযোগকারী আবুল কালাম বলেন, ‘তালিকায় নাম থাকা আমার বোন জামাই জাহাঙ্গীর গত এক বছর আগে মারা যায়। সেই থেকে আমার বোন নাজমা বেগম খুবই অসহায় অবস্থায় দিনযাপন করছেন। যত বার আমার বোন চাল আনতে গেছেন ততবার তাকে চাল না দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন ডিলার জাহাঙ্গীর। অথচ জমা দেওয়া মাস্টাররোলে দেখা গেছে মৃত জাহাঙ্গীর চাল উত্তোলন করেছেন। মৃত ব্যক্তির চাল তার পরিবারের কাউকে না দিয়ে তিনি তা আত্মসাৎ করেছেন।’

তালিকায় নাম থাকা নিজাম ও আব্বাস বলেন, ‘ডিলার জাহাঙ্গীর একবার আমাদের চাল দিয়ে আমাদের নামের সুলভ মূল্য কার্ডটি (বই) তিনি রেখে দিয়েছেন। জমা দেওয়া মাস্টাররোলে দেখা গেছে প্রতি মাসে আমাদের তিনি চাল দিয়েছেন। তিনি আমাদের চাল উঠিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিলার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো মিথ্যা। আমি সঠিকভাবেই তালিকায় অর্ন্তভূক্ত সবার মধ্যে চাল বিতরণ করেছি। দুই একবার চাল বিতরণে নির্দ্দিষ্ট পরিমাণ চালের চেয়ে ওজনে কিছুটা চাল কমবেশি হতে পারে।’

সুলভ মূল্য কার্ডে দেখা যায় তালিকায় নাম থাকা মৃত ও জীবিত ব্যক্তিদের পরিবারকে এক বছর ধরে কোনো চাল দেননি, অথচ তাদের চাল দিয়েছেন মর্মে মাস্টাররোল জমা দিয়েছেন কীভাবে- জানতে চাইলে এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি এই ডিলার।

বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন মুঠোফোনে বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। এর তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে ডিলারের বিরদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)