পাথরঘাটায় দীঘির পেটে রাস্তা ও বাড়ির উঠান

কাজী রাকিব
কাজী রাকিব, নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:২০ এএম, ৮ নভেম্বর ২০২১

বরগুনার পাথরঘাটা পৌর শহরের একটি সরকারি দীঘির পেটে চলে গেছে চলাচলের রাস্তা ও বাড়ির উঠান সহ প্রায় কোটি টাকার সম্পত্তি। এতে করে জনদুর্ভোগের পাশাপাশি ঝুঁকিতে রয়েছে দীঘি সংলগ্ন অর্ধশতাধিক পরিবার।


সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পাথরঘাটা থানার সামনে মসজিদ সংলগ্ন দীঘির পাড়, রাস্তা সহ অর্ধশতাধিক বাড়ির উঠান দীঘিতে ভেঙ্গে গেছে। এতে এ এলাকার বাসিন্দাদের চালাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। পুকুরের পাড়ে গাইড ওয়াল না থাকায় প্রতিদিন ব্যাক্তগত মালিকানা জমি পুকুরে ভেঙ্গে যাচ্ছে। স্থানীয়দের চলাচলের ভোগান্তি লাঘবে পৌর নির্বাচনের আগে মেয়র প্রার্থী ও সাবেক কাউন্সিলর মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল নিজ খরচে একটি এক’শ ফুট লম্বা কাঠের সাঁকো করে দিয়েছিলেন। যা বর্তমানে মেরামতের অভাবে নরেবরে হয়ে গেছে। এই সাঁকো দিয়ে চলতে গিয়ে অনেক শিশুদের পা পিছলে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।


স্থানীয় সিহাব সিকদার, আব্দুল হালিম হাওলাদার, ইউসুফ আলী, নাসরিন আক্তার, মিজানুর রহমান, সাহানা, সালাম মাস্টার সহ অর্ধশতাধিক বাসিন্দারা অভিযোগ করে জানান, গত একযুগে দীঘিটি সংস্কারে কেউ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। প্রায়াত মেয়র মল্লিক  মোহাম্মদ আইয়ুব তার প্রতিষ্ঠিত তাসলিমা মেমোরিয়াল একডেমির স্কুলের পাশ থেকে ঘুরিয়ে কিছু অংশ স্থায়ী গাইডওয়াল করে দিলেও পরবর্তী কেউ সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি। এ কারণে দিন দিন তাদের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। অতিশীঘ্রই পুকুরটি সংস্কার করে গাইড ওয়াল না দিলে তাদের বাড়িঘর ভেঙ্গে দীঘিতে বিলিন হয়ে যাবে বলেও জানান তারা।


ইউসুফ আলী জানান, বিশাল দৈত্যাকার এই দীঘির চতুর্পাশে প্রায় কোটি টাকার জমি দীঘিতে ভেঙে গেছে। কর্তৃপক্ষের এতে কোন মাথা ব্যাথা নেই। যদি এই দীঘিটি সংস্কার করে না দেয়া হয় তাহলে পৈতৃক বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোন উপায় নেই।


সিহাব সিকদার জানান, তাঁর বাড়ির ১৫ ফুট জমি দীঘিতে ভেঙ্গে গেছে। আর চার ফুট গেলেই ঘরও ভাঙ্গা শুরু করবে। একটি স্থায়ী গাইড ওয়াল না দিলে বাকিটুকু দীঘির পেটে চলে যাবে।


স্থানীয় কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম কাকন জানান গত দু’বছর আগে দীঘিটি সংস্কারের জন্য এলাকাবাসীর মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়েছিল। কিন্তু কেউ কোন সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি।


পাথরঘাটা পৌরমেয়র আনোয়ার হোসেন আকন জানান পর্যাপ্ত বাজেট না থাকার কারণে দীঘিটির সংস্কার কাজে হাত দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে অতি শীঘ্রই সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।


এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ জানান, পাথরঘাটা পৌর শহরে বেশ কয়েকটি সরকারি জলধার (দীঘি) রয়েছে। এগুলো সরকারের পক্ষ থেকে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অতি শীঘ্রই এসকল জলধার গুলো সংস্কার করে আধুনিকতায় রূপান্তর করা হবে।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)