অভিনব কৌশলে ৪র্থ শ্রেনির ছাত্রদের অর্থ হাতিয়ে নিল ৭ম শ্রেনির ছাত্ররা: আটক ৩

নোমান আল সাকিব
নোমান আল সাকিব, ফিচার লেখক
প্রকাশিত: ১০:০৩ এএম, ২৬ এপ্রিল ২০১৮

---
পিরোজপুর: পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর কয়েকজন শিক্ষার্থীর নামে ৪র্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান অর্থ আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বুধবার (২৫ এপ্রিল) সকালে ৩ জনকে আসামী করে পিরোজপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর দিবা শাখার ছাত্র মো: তামিম, দিগন্ত মৃধা ও তানভীর আহমেদ হৃদয় সহ বিদ্যালয়ের কয়েক জন ছাত্র ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রদেরকে বিভিন্ন ঘটনায় ফাঁদে ফেলে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমানে অর্থ আত্মসাত করেছে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে দিগন্ত মৃধা পিরোজপুর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার মৃধার ছেলে।

অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয় যে, ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র মাহিম মল্লিক কে নানা ভাবে ভয় দেখিয়ে তার মায়ের কাছে রাখা প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা তারা আত্মসাত করেছে। এছাড়া একই শ্রেণীর আরেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে একই ভাবে ৩০ হাজার টাকা আত্মাসাত করেছে অভিযুক্তরা।

৭ম শ্রেণীর পড়ুয়া অভিযুক্তরা তাদের বাইসাইকেলের ভাঙ্গা অংশ নিয়ে ৪র্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের স্কুলের ব্যাগের ভিতরে দিয়ে তাদের চোর বলে তাদের ব্লাকমেইল করা হতো। এছাড়া ৪র্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা বাথরুমে গেলে কৌশলে অভিযুক্তরা তাদের ছবি বা ভিডিও করে তাদের ভয়ভীতি দিয়ে বিপুল অংকের অর্থ নিতো।

পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জিসি হালদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি যথাযথভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিয়েছেন পিরোজপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক।

পিরোজপুর ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কিশোর আইনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এছাড়া শিক্ষকদের যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন না করা এবং নিয়মিত পাঠদান না করায় বিগত কয়েক বছর ধরে ভেঙে পড়েছে শহরের ঐতিহ্যবাহী পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও পিরোজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা। এছাড়া শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট ক্লাসে অংশ নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করার অভিযোগ আছে ওই দুই বিদ্যালয়ের এক ডজনেরও বেশি শিক্ষকের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি একটি বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস দখল করে কেউ কেউ আবাসিকভাবে বসবাস করছেন।

পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাম কবির বলেন, যে তিন জন গ্রেফতার হয়েছে তারা সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র। তারা মূলত কিশোর অপরাধী। বুধবার সকালে সালমা মল্লিক বাদী হয়ে ৩ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।

এন এ এস/পি এন

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)