দেহ ব্যবসায় জড়ানোর কারন হিসেবে যা বললেন অভিনেত্রী !

মুনা জাহান
মুনা জাহান, বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:২৯ এএম, ৭ জুন ২০১৮

দেহ ব্যবসায় জড়ানোর কারন হিসেবে যা বললেন অভিনেত্রী
তামিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির তিনি জনপ্রিয় মুখ। ‘বাণীরানি’ নামের একটা ডেলি সোপেও রোজ দেখা মিলছিল তাঁর। কিন্তু হঠাৎই যেন দমকা এক হাওয়ায় সব কিছু ওলটপালট হয়ে গেল তামিল অভিনেত্রী সঙ্গীতা বালনের।

অভিযোগ, অভিনয়ের পাশাপাশি দিনের পর দিন মধুচক্র চালিয়ে এসেছেন সঙ্গীতা। আর তারই জেরে তামিল অভিনেত্রী সঙ্গীতা বালনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিশেষ সূত্রের খবর অনুযায়ী, চেন্নাইয়ের পানায়ূড়ের একটি রিসর্টে অভিযান চালানোর পরেই ভিন রাজ্যের বহু মহিলাকে উদ্ধার করে পুলিশ। আর তাঁরা সকলেই সঙ্গীতা পরিচালিত ওই মধুচক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলেই অভিযোগ। সঙ্গীতার সঙ্গে পুলিশ তাঁর ছায়াসঙ্গী সুরেশকেও গ্রেফতার করেছে। সুরেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নানা বয়সের মহিলাদের টেলিভিশন আর সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ করিয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে তাঁদের এই পেশায় নিয়ে আসতেন।

তবে এই প্রথম বার নয়। নানা সময়ে গোটা দেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি কেঁপে উঠেছে এমনই সব গুরুতর অভিযোগে। কখনও মধুচক্র তো কখনও আবার মাদকচক্র। কখনও খুব জনপ্রিয় মুখ বেরিয়ে আসে পর্দার আড়াল থেকে, তো কখনও আবার উঠতি কোনও অভিনেতা-অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে ওঠে অভিযোগ।

যেমন ধরুন, শার্লিন চোপড়া। বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ে না অভিনেত্রী শার্লিনের। তাঁর হালফিলের ছবি ‘কামসূত্র থ্রি ডি’ রিলিজের আগেই ভাইরাল হয়ে যায়। ভাইরাল হয় শার্লিনের অন্তরঙ্গ দৃশ্যগুলির ভিডিয়ো। এ হেন শার্লিনের বিরুদ্ধেই এক বার অভিযোগ উঠেছিল মধুচক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার। বিষয়টি নিয়ে বিশেষ জলঘোলা হওয়ার আগেই মধুচক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন শার্লিন। অকপটে এও স্বীকার করে নিয়েছিলেন, যে পয়সার কারণেই তাঁকে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে বেডরুম অবধি ছুটতে হত।

‘মকড়ি’ আর ‘ইকবাল’ ছবিটির সেই ছোট্ট অভিনেত্রী শ্বেতা বসু প্রসাদকে বোধ হয় সকলেরই মনে আছে। বিয়ের পিঁড়িতেও যে বসতে চলেছেন সে কথাও জানিয়েছেন শ্বেতা নিজেই। এই শ্বেতার নামেই এক বার অভিযোগ উঠেছিল মধুচক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরের গোড়ায় হায়দরাবাদের একটি হোটেল থেকে যৌন ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে শ্বেতাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সে সময় সংবাদমাধ্যমে হায়দরাবাদ পুলিশের তরফেই শ্বেতার একটি বিবৃতি পাওয়া গিয়েছিল।

সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছিল যে, অভাবে পড়েই যৌনপেশায় জড়িয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে। পরবর্তীকালে হায়দরাবাদের আদালত শ্বেতাকে ক্লিন চিট দেওয়ার পরক্ষণেই সংবাদমাধ্যমকে খোলা চিঠি লিখেছিলেন শ্বেতা বসু প্রসাদ। চিঠিতে তিনি দাবি করেছিলেন, যে ধরা পড়ার পরে তাঁর যে ‘স্বীকারোক্তি’র কথা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল, তার আদ্যোপান্ত ভুয়ো।

‘গোয়া পুণে কাণ্ড’ বললেই সকলের সামনে বিগ বস হাউসের ছবিটা ভেসে উঠবে। হাউসের ভিতরে পাক অভিনেত্রী আরশি খানকে ‘গোয়া পুণে কাণ্ড’ বললেই তেলে বেগুণে জ্বলে উঠতেন। কিন্তু কী এই ‘গোয়া পুণে কাণ্ড’?

বলি সূত্রের দাবি এই ‘গোয়া পুণে কাণ্ড’ আদতে যৌন ব্যবসা। আর পাক অভিনেত্রী আরশি খানই এই যৌন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে সূত্রের আরও দাবি। তবে আরশি বরাবরই দাবি করে এসেছেন যে এই অভিযোগের পুরোটাই মিথ্যা। সংবাদমাধ্যমকে এক বার আরশি বলেছিলেন, “পুণেতে শো করতে এসে একটি হোটেলে আমি উঠেছিলাম। রাত পৌনে একটা নাগাদ হঠাৎই সেই হোটেলে আমার রুমের দরজা নক করতে থাকেন ক্রাইম ব্রাঞ্চের জনা দশেক অফিসার। আমি পাকিস্তানি মুসলিম বলেই ওই অফিসাররা আমাকে গ্রেফতার করতে আসেন। আমার সমস্ত ডকুমেন্টস কেড়ে নেন অফিসারেরা। কিন্তু ততক্ষণে যে আমার ফোনের রেকর্ডার অন করে ফেলেছি, তার বিন্দুবিসর্গও টের পাননি ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসারেরা। পরে এই মিথ্যা কেসটা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আমার কাছেই উল্টে ১৫ লক্ষ টাকা দাবি করে বসেন তাঁরা।” যদিও পুণে পুলিশ আরশির এই অভিযোগকে মিথ্যা বলে দাবি করে। সঙ্গে এও দাবি করে যে, তাঁদের কাছে আরশি এবং তাঁর এজেন্টের কথাবার্তার সম্পূর্ণ কল রেকর্ড রয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে স্বঘোষিত বিতর্কিত ধর্মগুরু রাধে মা জড়িয়ে আছেন বলেও দাবি করেন তাঁরা। গোয়াতেও একবার মধুচক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে আরশি খানকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।

অভিনেত্রী দীপ্তি নাভালও নাকি যৌন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে গুজব রটেছিল বলিউডে। পরে দীপ্তি নিজে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন যে, এটা একটা বানানো গল্প ছাড়া আর কিছুই নয়। আর সংবাদমাধ্যমই নাকি এই গুজব ছড়িয়েছে বলেও দাবি করেছিলেন দীপ্তি।

তবে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির এ হেন কেচ্ছা যে শুধু যে মধুচক্রেই সীমাবদ্ধ তাই নয়। মমতা কুলকার্নির মতো জনপ্রিয় অভিনেত্রীর নাম জড়িয়েছে মাদকচক্রের সঙ্গে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল আন্তর্জাতিক মাদক-পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার। তাঁর হেফাজত থেকে মাদক উদ্ধার হওয়ার অভিযোগও করেছিল পুলিশ। প্রথম থেকে নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও ঠাণের এক জেলা আদালত অভিনেত্রী মমতা কুলকার্নি এবং তাঁর স্বামী ভিকি গোস্বামীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল। যদিও পরে মমতা জানিয়েছিলেন যে, এই ড্রাগ মাফিয়া ভিকি নাকি তাঁর স্বামীই নন। দাবি করেছিলেন, “আমি যোগিনী! আমার বিরুদ্ধে ড্রাগ পাচারের সব অভিযোগই মিথ্যা।”

কেরিয়ারের স্বার্থে কখনও উঠতি অভিনেত্রীর ‘কম্প্রোমাইজ’। কখনও আবার জনপ্রিয় অভিনেত্রীর আজীবন পুরনো লাইফস্টাইল ধরে রাখার চেষ্টা। তাতেই কি এই ধরনের ফাঁদে পা দিচ্ছে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি? এই ধরনের ফাঁদ কি অনন্তকাল ধরে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সামনে পাতা থাকবে? যতবারই এই ধরনের ঘটনা সামনে আসে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। আর যেই না সেখান থেকে প্রচারের আলো নিভতে থাকে, আবার সেই যা কার তাই

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)