মোংলা ও পায়রায় ৭, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০৬:৩৪ পিএম, ১৮ মে ২০২০

ছবিঃ সংগ্রহীতপ্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে সাগর বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এদিক ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা, দ্বীপ ও চরগুলোতে জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সোমবার (১৮ মে) দুপুর ২টায় আবহাওয়া অধিদফতরের অনলাইনে এসে আবহাওয়াবিদ রাশেদুজ্জামান এসব তথ্য জানান।

রাশেদুজ্জামান জানান, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আরও কিছুটা ঘনীভূত হয়েছে। এটি সামান্য উত্তর দিকে সরে এসেছে। এটি বিকাল ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৭৫ কিলোমিটার, কক্সবাজার, মংলা এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে প্রায় ৯০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে। পরবর্তীতে এটি কিছুটা দিক পরিবর্তন করে উত্তর, উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। সেক্ষেত্রে এটি ১৯ মে শেষ রাত থেকে ২০ মে বিকাল—এই মধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে খুলনা ও চট্টগ্রাম উপকূলের মধ্যবর্তী অংশ দিয়ে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল অতিক্রম করার আশংকা রয়েছে। এ কারণে মোংলা ও পায়রা বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আম্ফানের প্রভাবে স্থানীয় উপকূলবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে স্বাভাবিক জোয়ারের ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসের আশংকা রয়েছে। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় যখন অতিক্রম করবে সেখানে বিশেষ করে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর,বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল জেলা এবং আরও যে দ্বীপ ও চরগুলো আছে সেখানে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

তিনি জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আম্ফান আজ বিকাল ৩ টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৯৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

এখন ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকার সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। এর প্রভাবে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর,বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোও ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চলে জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

এদিকে আবহাওয়ার ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, আম্ফানের প্রভাবে ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ এবং বিজলি চমকানো সহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)