পাথরঘাটায় ৩ চিকিৎসকে ভরসা ৩ লাখ মানুষের

কাজী রাকিব
কাজী রাকিব, নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:১৮ পিএম, ২৪ জানুয়ারী ২০২২


পাথরঘাটা বরগুনা, প্রতিনিধি

বরগুনার পাথরঘাটায় প্রায় ৩ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার

ভরসা মাত্র ৩ জন চিকিৎসক। পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩১ জন চিকিৎসকের স্থানে মাত্র তিন জন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাক্তার সাইফুল হাসান।


পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানা যায়, ৩১ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও পাথরঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেজিস্ট্রার ভুক্ত চিকিৎসক রয়েছে ৯ জন। এর মধ্যে ৪ জন ঢাকায় সংযুক্ত রয়েছে গত আড়াইবছর ধরে। এর মধ্যে দুজনের করোনা আক্রান্ত হয় আইসোলেশনে রয়েছে।


বর্তমানে এ উপজেলার প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষের জন্য তিন জন চিকিৎসক রয়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এতে করে যেমন চিকিৎসকরা বিশ্রাম নিতে পারছে না অপর দিকে সেবা নিতে আসা রোগীরাও পাচ্ছে না তাদের কাংখিত সেবা। এ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কর্তা ব্যক্তিদের মধ্যে কোন ধরনের উদ্ভেক নেই বলে চিকিৎসা নিতে আসা অনেকে রোগীরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।


পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে আড়াই শ’ রোগী আউট ডোর ও জরুরী বিভাগে চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন। চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা পড়েছেন বিপাকে। চিকিৎসা নিতে আসা একাধিক রোগী জানান, চিকিৎসা নিতে এসে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও ডাক্তার দেখাতে পারিনি। কাউকে প্রাইভেট ভাবে দেখাবো হাসপাতালে এমন কেউও নেই। চিকিৎসা নিতে আসা আবিদা সুলতানা জানান, ‘একজন ডাক্তারের কাছে একদিনে এতো রোগী দেখালে তাতে তো চিকিৎসা হবে না। ডাক্তারদের বিশ্রামের প্রয়োজন আছে’। চরদুয়ানী এলাকার সত্তোরোর্ধ্ব রহমান মুসল্লি জানান, ‘এতো বড় হাসপাতালে মাত্র তিন ডাক্তার! এটা কি স্থানীয় নেতারা দ্যাহেনা। খালি ভোটের সময় মুখসুন্দর কথা কয়!’


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক প্রতিবেদককে জানান, আমাদের দুই সহকর্মী করোনা আক্রান্ত। এর মধ্যেও ঝুঁকি নিয়ে আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি। প্রতিদিন রোগী সংখ্যাও বাড়ছে। তবে পাথরঘাটায় দীর্ঘদিন চিকিৎসক সংকট থাকায় জরুরী বিভাগ, বহির্বিভাগ, ইনডোর সব মিলিয়ে দায়িত্ব পালনে হিমসিম খেতে হচ্ছে।


পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য মির্জা শহিদুল ইসলাম খালেদ জানান, চারজন চিকিৎসক অন্যত্র সংযুক্ত থাকলেও পাথরঘাটা থেকে তাদের বেতন-ভাতা উত্তোলন করছে। তারা পাথরঘাটায় কর্মস্থল না থেকে স্থান দখল করে থাকবে আর একারণে নতুন চিকিৎসক সংযুক্ত হবে না, এটা হতে পারে না। তিনি তাদের সংযুক্তি বাতিল চেয়ে পদ খালি করার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানাবেন বলে জানান। এবিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির জানিয়েছেন অতিশীঘ্রই তারা সমস্যা সমাধানের জন্য জরুরী মিটিং করবেন।


পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাক্তার সাইফুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক সংকট রয়েছে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ঢাকায় সংযুক্ত চারজন  চিকিৎসকের সংযুক্ত বাতিলের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে কয়েক দফা আবেদন করা হয়েছে। তবে করোনা কালীন সময়ে সারাদেশে চিকিৎসক সংকট থাকায় সমস্যা হচ্ছে।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)