পটুয়াখালীতে শিক্ষকের পা কেটে দিল সন্ত্রাসীরা

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০৭:১৯ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০১৮

পটুয়াখালীতে শিক্ষকের পা কেটে দিল সন্ত্রাসীরা, গ্রেপ্তার ৫
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় শাহ আলম হাওলাদার (শাহ আলম মাস্টার) নামের এক শিক্ষকের বাম পা কেটে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের মোস্তফাপুর গ্রামে শনিবার (২৫ আগস্ট) সকালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ এ পর্যন্ত পাঁচ জনকে আটক করেছে।
গ্রামের লোকজন সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত শাহ আলম মাস্টারকে প্রথমে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। শাহ আলম বরিশাল শের-ই বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
শিক্ষকের পা কেটে দিল সন্ত্রাসীরা

পুলিশ ও আহতের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে- শনিবার সকালে শাহ আলম মাস্টার তাঁর ছেলে আফ্রিদিকে (৮) নিয়ে পূর্ব মোস্তফাপুর গ্রামে ভগ্নিপতি মো. মকবুল হোসেনের বাড়িতে ঈদের দাওয়াত খেতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে মোস্তফাপুর গ্রামের দরবেশ বাড়ির সামনের সড়কে ১০-১২ জন সশস্ত্র ব্যক্তি তাঁর ওপর হামলা চালায়।

ওই সময় তাঁরা শিশু আফ্রিদির সামনেই শাহ আলম মাস্টারের বাম পায়ের গোড়ালির ওপর দিয়ে কেটে দু’ভাগ করে দেয়। এ ছাড়া তাঁর ডান পা, দুই হাত ও মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে।

পুলিশ আহত শাহ আলম মাস্টারের বরাত দিয়ে বরিশালটাইমসকে বলেন- সন্ত্রাসীরা ১০-১২ মিনিট ধরে তাঁর ওপর এই হামলা চালায়। এ সময় শাহ আলম মাস্টার ও তাঁর শিশুপুত্রের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা সটকে পড়ে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহ আলম মাস্টার বরিশালটাইমসকে বলেন- নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নজরুলের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ওই হামলায় অংশ নেয়। হত্যার উদ্দেশ্যেই এ হামলায় চালানো হয় বলে শাহ আলম মনে করছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা শংকর কুমার পাল বলেন, এলোপাতাড়ি কোপে শাহ আলম মাস্টারের বাম পায়ের হাঁটুর নিচ থেকে ৯০ ভাগ কেটে গেছে। ফলে বাম পার কাটা অংশ ঝুলে আছে। এ কারণে পা রক্ষা করা অসম্ভব। শরীরেও ধারালো অস্ত্রের কোপের একাধিক জখম রয়েছে।
এদিকে খবর পেয়ে কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একই এলাকার রহিম খোকন, সাঈদুর রহমান, মাহাদী হাসান, তাইফুল ইসলাম ও মো. হোসাইনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় শত শত মানুষ পুলিশের সামনে বিক্ষোভ করে এই হামলার বিচার দাবি করেন। এ ঘটনার জের ধরে পাল্টা হামলার শঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। বর্তমানে ওই এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে শাহ আলম মাস্টারদের সঙ্গে আরেকটি পক্ষের বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে এর আগে একাধিকবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়।

কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বরিশালটাইমসকে বলেন, স্থানীয় বাদশা মেম্বার-আইয়ুব আলী গ্রুপের সঙ্গে শাহ আলম মাস্টার গ্রুপের দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছরে ধরে প্রচন্ড বিরোধ রয়েছে। এর আগে একে অপরের ওপর অন্তত ১২ থেকে ১৩ বার সশস্ত্র হামলা-পাল্টা হামলা করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদেরও আটকের চেষ্টা চলছে।

ওসি আরও জানান, কলাপাড়া থানাসহ আদালতে আহত শাহ আলম মাস্টারের বিরুদ্ধে অন্তত দেড় ডজন মামলা রয়েছে।’’

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)