১৯ বছর স্কুলে অনুপস্থিত থেকেও বেতন তুলছেন তিনি!

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ১১:৩৬ এএম, ১৭ এপ্রিল ২০১৯

১৯ বছর স্কুলে অনুপস্থিত থেকেও বেতন তুলছেন তিনি!চাকরীর বয়স প্রায় ১৯বছর। বছরে গড়ে ১মাসও যাননি কর্মস্থলে। তবে কর্মস্থলে নিয়মিত উপস্থিত না থাকলেও বেতন-ভাতা উত্তোলন হয়েছে নিয়মিত। প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগসাজশ করে মাসে একবার অফিস কক্ষে গিয়ে স্বাক্ষর করে বেতন তুলছেন। এমন অভিযোগ উঠেছে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ফজলুল করিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখার ল্যাব এসিস্ট্যান্ট সুলতানা পারভীনের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, ২০০১ সালের ২৩মার্চ ছোটবাইশদিয়া ফজলুল করিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কারিগরি বিভাগের ল্যাব এসিস্ট্যান্ট পদে নিয়োগ পান সুলতানা পারভীন। নিয়োগের পর কয়েক মাস নিয়মিত কর্মস্থলে উপস্থিত ছিলেন। বছর খানেক পার হতে না হতেই বন্ধ করে দেন স্কুলে আসা। প্রভাবশালী পরিবারের পুত্রবধু হওয়ায় কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেননি। বছরের পর বছর কর্মস্থলে না গিয়েই তুলেছেন বেতন-ভাতা। তার স্বামী ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ফজলে আকবর লিটনের প্রভাবের কারণে প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও তার এই অনিয়মের প্রতিবাদ করেননি।

সরজমিনে গিয়ে পাওয়াযায় সুলতানা পারভীনের অনুপস্থিতির সত্যতা। শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইলে, সুলতানা পারভীন নামের কোন শিক্ষিকাকে তারা অনেকে চিনেইনা, আবার কেউ কেউ নাম শুনলেও কখনো দেখেননি বলে জানান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়ের কারিগরি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, শুনেছি আমাদের বিভাগে একজন ল্যাব এসিস্ট্যান্ট আছে। কিন্তু আমরা তাকে কখনো ক্লাসে দেখিনি। ল্যাবে কোন লোক না থাকায় প্রতিনিয়ত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। আমাদের শিক্ষাকার্য্যক্রম ব্যহত হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, সুলতানা পারভীনের স্বামী ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য। তাই সে কাউকে পরোয়া করেনা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকরাও তাদের কাছে অসহায়। তা নাহলে এতগুলো বছর অনুপস্থিত থেকে বেতন তুলতে পারতেননা। ক্লাস না করে ১৯বছর বেতন! এরকম অবস্থা কোন দেশেই নাই।

বিদ্যালয় গিয়ে না পেয়ে সুলতানা পারভীনের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এখন ছুঁটিতে আছি। আমার বিষয় আপনাদের জানার দরকার কি?’ জানতে চাইলে ছোটবাইশদিয়া ফজলুল করিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমি এবিষয় কিছু জানিনা। আপনারা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির সাথে আলাপ করেন।’

রাঙ্গাবালী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোকলেছুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি ইতিপূর্বে আমাদেরকে কেউ অবহিত করেননি। আমরা জানতে পারলে অনুপস্থিত থেকে এতগুলো বছর বেতন-ভাতা তুলতে পারতোনা। এখন যেহেতু জেনেছি, তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব।’ (তথ্য সূত্রঃ বরিশাল টাইমস)

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)