সাংসদের বিরুদ্ধে মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুরের অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবিতে পাথরঘাটায় মানববন্ধন

কাজী রাকিব
কাজী রাকিব, নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৩৬ পিএম, ১৪ জানুয়ারী ২০২০

সাংসদের বিরুদ্ধে মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুরের অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবিতে পাথরঘাটায় মানববন্ধন
বরগুনা-২ আসনের সংসদ শওকাত হাসানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুরের মিথ্যা অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সর্বস্তরের জনগণের সাথে পাথরঘাটা উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটি, হিন্দু বৌদ্ধ, খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ।

উপজেলার চরদুয়ানি বাজারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয় এতে কয়েক হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এর আগে পাথরঘাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করে তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানি ইউনিয়নে খালের পাড়ে সরকারি জমি দখলের উদ্দেশ্যে নির্মিত শ্রী শ্রী দুর্গা পূজা মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুরের যে অভিযোগ উঠেছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বরগুনা-২ আসনের সংসদ শওকাত হাসানুর রহমান রিমন হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘনিষ্টজন, হিন্দুদের সম্মান, সম্পত্তি রক্ষায় তার পৃষ্ঠপোষকতা আমাদের চরম সন্তোষ্টি রয়েছে দাবি করে পাথরঘাটা করেন উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটি, হিন্দু বৌদ্ধ, খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য শওকত হাসানুর রহমান রিমনকে নিয়ে মিথাচার করা হচ্ছে। প্রিয়ংকা মিত্র নামে এক অসাধু নারী সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্টের চেষ্টা করছে।

অভিযুক্ত প্রিয়াংকা মিত্র চরদুয়ানি ইউনিয়নে মৃত অমূল্য মিত্রের মেয়ে।

এতে বক্তব্য রাখেন, জাহাঙ্গীর জোমাদ্দার, গোলাম মাওলা মিলন, মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, অমল শংকর রায়, পাথরঘাটা উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অরুন কর্মকার, সহসভাপতি বাসুদেব শীল, সাধারন সম্পাদক রাজীব মৃধা বিটুল, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রফুল্ল চন্দ্র মিত্র, সুনিল হালদার সহ নেতৃবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা জানান, পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী ইউনিয়নের চরদুয়ানী বাজারের কাছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ি বাঁধের স্লুউজগেট নির্মানের উদ্যোগ নিলে প্রিয়ংকা মিত্র তার পৈত্রিক সম্পত্তি দাবি করে রাতারাতি প্রতিমা স্থাপন করে মন্দির নির্মাণ করে । সেখানে নির্মিত মন্দির ভাংচুরের অভিযোগ তুলে কাজে বাধা দেন। প্রকৃত পক্ষে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মালিকানা জমি দখলের উদ্দেশ্যে পিয়ংকা মিত্র নানা ফন্দি করছে। সেখানে পূর্ব থেকে কোন মন্দির না থাকলেও একটি ছাপড়া ঘর তুলে একটি প্রতিমা স্থাপন করে। জমিতে তার কোন সত্ব না থাকলেও সে তার মন্দির ভাংচুর করা অভিযোগ করে স্থানীয় সাংসদ শওকত হাসানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে প্রিয়াংকা মিত্র বিভিন্ন সংবাদ পত্রে ভুল ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে হয়রানি করছে বলেও অভিযোগ করেন।

বক্তারা আরো জানান, আমরা ঘটনা স্থল পরিদর্শন করে সেখানে কোন ভাংচুরের আলামত দেখতে পাইনি। সংসদ সদস্য শওকত হাসানুর রহমান রিমন হিন্দুদের মন্দিরের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তিনি কোন মন্দির ভাঙ্গেনি বা কাউকে হেনস্তা করার অভিযোগ সত্য নয়।

সংবাদ সম্মেলনে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ দাবি করেন, সরকারি জমিতে একদা প্রিয়ংকা মিত্র এক সপ্তাহের জন্য উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে সেখানে পূজা অনুষ্ঠান করে। কিন্তু অনুষ্ঠানের পরে সে আর দখল করা জমি ছাড়তে চচ্ছে না। এব্যপারে উপজেলা প্রশাসন ও পূজা পরিষদ সহ হিন্দু সম্প্রদায় অবগত আছে।

এব্যাপারে ‌স্থনীয়‌ স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য সুনিল হালদার জানান নির্মিত মন্দিরকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে তার পাশে চলে মাদকসেবন ও দেহ ব্যবসা বলে অভিযোগ করেন। তিনি আরো জানান, সেখানে পূর্ব থেকে কোন মন্দির না থাকলেও একটি ছাপড়া ঘর তুলে শ্রী শ্রী দুর্গা পূজা মন্ডপ নাম দিয়ে একটি প্রতিমা স্থাপন করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করে আছে। সেই মন্দিরকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে প্রিয়ংকা মিত্র সেখানে দেহ ব্যবসা ও মাদকসেবীদের আড্ডার আসর হিসেবে গড়ে তুলেছে। একই অভিযোগ করেন স্থানীয় সোবহান, আলাউদ্দিন ও ইউনুস।

এব্যপারে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রিয়ংকা মিত্র জানান, সংসদ সদস্য আমাকে ধাক্কা দিয়েছে ও মন্দির ভাংচুর করেছে। তবে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাবউদ্দিন জানান, প্রতিমা ভাংচুর বা অপ্রীতিকর ঘটনার খবর তাদের জানানেই অথবা প্রিয়ংকা মিত্র বা তার কোন স্বজন পাথরঘাটা থানায় কোন রকম অভিযোগ দেননি।

বরগুনা -২ (পাথরঘাট,বামনা ও বেতাগী) এলাকার সংসদ সদস্য শওকত হাসানুর রহমান রিমন জানান, গত রবিবার একটি অনুষ্ঠান শেষে ওই এলাকা দিয়ে উপজেলা সদরে ফেরার সময় তার কাছে স্থানীয় জনগন স্লইজগেট নির্মানে বাধা দেয়ার অভিযোগ দেন ও প্রিয়ংকার উঠান ছাপড়া ঘরে অসামাজিক কার্যকলাপের আসর বসে বলে দাবি করেন। সাংসদ রিমন বলেন এসময় তার সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলমঙ্গীর হোসেন, সাধারন সম্পাদক মো. জাবির হোসেন সহ দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিল। প্রিয়ংকা মিত্রের কোন মন্দির বা প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেনি

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)