মঠবাড়িয়ায় ইউপি সদস্যের স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ

এ এস এম জসিম
এ এস এম জসিম, বার্তা সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৭:১৭ পিএম, ২১ জুন ২০২০ | আপডেট: ০৮:৫৫ পিএম, ২১ জুন ২০২০

ছবিঃ সংগ্রহীতমঠবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
মঠবাড়িয়ার দাউদখালী ইউনিয়ন আ‘লীগ নেতা ও নারী সদস্যের স্বামীকে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ উঠছে। উপজেলার দাউদখালী ইউপির (১,২ ও ৩নং ওয়ার্ড) সংরক্ষিত নারী সদস্য মোসাঃ খাদিজা বেগম রোববার (২১ জুন) দুপুরে তার বাস ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।

তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন- এলাকায় ত্রাণসহ সফলতার সাথে জনপ্রতিনিধির কার্যক্রম পরিচালনা করায় আমি ও আমার স্বামীর জনপ্রিয়তায় ঈর্শন্বিত হয়ে এবং আমার প্রতিপক্ষ স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে দুশ্চরিত্রা ও মামলাবাজ ৪ সন্তানের জননী ওই মহিলাকে ব্যবহার করে আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলা দিয়ে হয়রানী করছে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, তার প্রতিবেশী ও উপজেলার দেবত্র গ্রামের জাকির হোসেন তালুকদারের স্ত্রী রাবেয়া (৩৫) একজন চরিত্রহীন ও মামলাবাজ। সে এলাকার একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে। এলাকাবাসীকে হয়রানী করায় আমার স্বামী প্রতিবাদ করলে সে ক্ষিপ্ত হয়।

এলাকায় তার অপকর্মের প্রতিবাদ ও কতিপয় নিরিহ লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দেয়ার ব্যপারে তার পক্ষে না থাকায় এবং থানা হতে একটি মনোনীত শালিশ প্রধান করায় আমার স্বামীর ওপর ক্ষুব্ধ হয়। এর জের ধরে গত ১০ জুন সন্ধ্যায় আমার স্বামীর দ্বারা তিনি ধর্ষিতা হয়েছে মর্মে স্বামীকে প্রধান আসামী করে ওই নারী থানায় মামলা করে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও সাজানো। কেননা ওইদিন আমি ও আমার দু’পুত্র ও অনার্স পড়–য়া পুত্রবধূ বাড়িতে অবস্থান করেছিলাম। ওইদিন দুপুরের খাবার খেয়ে (১০ জুন) বেলা তিনটার সময় আমার স্বামী পাশের দাউদখালী গ্রামের নিকট আত্মীয় এনায়েত খাঁর মৃত্যুতে জানাযায় শরীক হয়ে রাত ৯টার সময় বাড়িতে ফেরেন।

এদিকে স্থানীয়রা জানান, মামলার বাদী দেবত্র গ্রামের ওই নারী দুশ্চরিত্র, মিথ্যা মামলা দিয়ে এলাকাবাসীকে হয়রানী করাই হল তার নেশা। দেবত্র গ্রামের জলিল জানান, গত ১০/১২ বছর পূর্বে স্বামী জাকির বিদেশ থাকাকালে স্ত্রী রাবেয়ার অনৈতিক সম্পর্কের কথা জানতে পেরে দেশে আসতে বাধ্য হন। স্থানীয় বাসিন্দা, মোঃ ইমরান, ইউসূফ জানান, তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে আমাদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা বাড়ি ভাংচুর ও লুটের মামলা দিয়ে হয়রানী করে আসছে।

মামলার বাদী রাবেয়ার আপন দেবর জাহাঙ্গীর তালুকদার (৪৫) বলেন, বড় ভাইয়ের স্ত্রীর অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। তার অশালীন চলাফেরা ও বিভিন্ন অপকর্ম বাঁধা দিলে আমাকেসহ বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে নির্যাতন ও একাধিক মামলায় আসামী করেছে। তার নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে আমার পিতা আঃ রশিদ তালুকদার (৭৫) স্ট্রোক করে মারা গেছে। উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের অবসর প্রাপ্ত এমএলএস ও ওই এলাকার বাসিন্দা মোঃ ছগির মিয়া (৬২) বলেন, সামান্য একটি বিষয়ের জের ধরে প্রতিবেশী রাবেয়া বেগম তিনি ও তার পুত্র শাহাদাৎ হোসেনকে মিথ্যা ছিনতাই মামলা দিয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

ওয়ার্ড চৌকিদার মোঃ রিপন খান বলেন, চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর করা একটি নোটিশ নিয়ে ঘটনার দিন (বাদীর উল্লেখিত ঘটনা ১০ জুন) বিকেল সাড়ে ৬টার সময় রাবেয়ার বসত ঘরে পৌছাই। নোটিশ পাওয়ার ১ ঘন্টা পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাবেয়া মহিলা ইউপি সদস্যের বাড়িতে গিয়ে ধর্ষিত হওয়ার বিষয়টি রহস্য জনক।

সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রবীণ আ’লীগ নেতা ফজলুল হক রাহাত ধর্ষণ মামলাটি মিথ্যা ও সাজানো দাবী করে বলেন, ওই মহিলার সাথে এলাকার কারো সাথে বনিবনা নাই। এলাকার নিরিহ লোকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর বিষয়ে পরিষদ থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে রেজুলেশন করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হবে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মঠবাড়িয়া থানার ইন্সপেক্টর আব্দুল হক বলেন- এ মামলার প্রত্যক্ষ কোন স্বাক্ষী নাই। অধিকতর তদন্তের পর বলা যাবে সে ধর্ষিতা হয়েছে কিনা?

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)