৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে হাজারো জেলের মানববন্ধন

কাজী রাকিব
কাজী রাকিব, নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:০৯ পিএম, ২৭ জুন ২০২০

---
কাজী রাকিবঃ এক বঙ্গোপসাগরে দুই আইন বন্ধ, ভারত- বাংলাদেশের বঙ্গোপসাগরে এক সাথে মাছ ধরা, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা বন্ধ’সহ কয়েক দফা দাবি নিয়ে
শনিবার সকাল ১০ টায় বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পাথরঘাটার শেখ রাসেল স্কায়ারে জরো হন কয়েক হাজার মৎস্যজীবী।

পরে শেখ রাসেল স্কয়ার চত্বরে মানববন্ধনের আয়োজন করেন বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতি, বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়ন, পাথরঘাটা আড়তদার সমিতি। মানববন্ধন শেষে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুম আকন, বিএফডিসি আড়তদার সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর জোমাদ্দার, বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আ. মন্নান হাওলাদার, সাধারণ মো. দুলাল মিয়া, মৎস্য ব্যবসায়ী এসমে, এনামুল প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশি জলসীমায় প্রতি বছর ২০ মে থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। অথচ একই বঙ্গোপসাগরে ভারতের জেলেরা নিবির্ঘ্নে মাছ ধরে নিচ্ছে, তাছাড়া বাংলাদেশি জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে ভারতীয়রা মাছ ধরে নেয়। এ ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ২২দিন আমরা মাছ ধরা থেকে বিরত থাকি এসময় ভারতীয় জেলেরা মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এতে ভারতীয় জেলেরা সাবলম্বি হচ্ছে আর বাংলাদেশি জেলেরা অসহায় হয়ে পরছে।

মাবববন্ধনে বক্তারা দাবি করেন, বঙ্গোপসাগরে ১৫ জুন থেকে ভারতের জেলেরা মাছ ধরা শুরু করলেও বাংলাদেশি জেলেদের ৬৫ দিনের অবরোধ শেষ হবে ২৬ জুলাই। অার সমুদ্রে বাংলাদেশ ভারত সীমানা অতিক্রমে মাছের কোন বাধা নেই, তাই মৎস্য সম্পদ রক্ষায় বাংলাদেশের জেলেদের ত্যাগ কোন কাজেই অসছেনা।

জেলা মৎস্যজীবী নেতারা জানান দেশের এই মহামারী করোনার ক্লান্তি লগ্নে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সচল রাখতে ৬৫ দিনের মৎস্য অবরোধ প্রত্যাহার করে প্রাকৃতিক সম্পদ ইলিশ আহরণ সুযোগ করে দিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জনজীবন স্বাভাবিক করে দিতে সরকারের পদক্ষেপ নেয়া উচিত। মৎস্যজীবীদের দাবী তাদের আয়ের একমাত্র পথ বন্ধ হওয়ায় তারা দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছে।

বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, আমরা দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। মৎস্য অধিদপ্তরের দেয়া সকল আইন আমাদের দেশের জেলেরা মেনে চলে। ইলিশ প্রজননের ২২ দিন ও জাটকা রক্ষায় ৯ মাস নিষেধাজ্ঞা পালনের পর ৬৫ দিনের মৎস্য অবরোধ যেন আমাদের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মোস্তফা চৌধুরী আরও জানান, একই বঙ্গোপসাগরে দুই ধরনের আইনকে মেনে নিতে পারছে না এ দেশের জেলেরা। তাই ভারত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি এক করে একই সময়ে বঙ্গোপসাগরে দু’দেশের জেলেদের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)