আমতলী- তালতলী সড়কের বেহাল দশা, দুর্ভোগে পথচারীরা

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০৫:৪৮ পিএম, ২৭ জুলাই ২০২০

ছবিঃ সংগ্রহীতআমতলী প্রতিনিধিঃ
সংষ্কারের অভাবে আমতলী- তালতলী সড়কের মানিকঝুড়ি থেকে কচুপাত্রা ব্রীজ পর্যন্ত বর্তমানে সড়কের অবস্থা এতটাই শোচনীয় রূপ নিয়েছে যে সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে যায়। হঠাৎ কেহ এটিকে দেখলে মনে হবে সড়ক নয় যেন মিনি পুকুর।

খানাখন্দে ভরা ও ভাঙ্গাচোরা এই সড়কে চলাচলরত যানবাহন, চালক, যাত্রী, পথচারী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদেরও দুর্ভোগের শেষ নেই। সড়কটির বেশ কয়েকটি স্থানে বড়বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় বৃষ্টির কারনে সেখানে পানি জমে পুকুরের আকার নেয়ায় তখন তা পরিণত হয় মৃত্যু ফাঁদে। প্রায় এক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে আমতলী- তালতলী রুটে চলাচলরত যাত্রীবাহী বাস।

উপজেলা শহর তালতলীর সাথে আমতলীর সড়কপথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই সড়কটি। ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য আমতলী- তালতলী সড়কটি গত ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে সর্বশেষ নামমাত্র (পুনঃনির্মাণ) সংস্কারের কাজ সম্পূর্ন করেন উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগ। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে দুর্ভোগের অপর নাম মানিকঝুড়ির সাতধারা, আড়পাঙ্গাশিয়া বাজার ও মধ্য তারিকাটা কালভার্ট। আড়পাঙ্গাশিয়া বাজারের মধ্যের পুরো সড়কটির কার্পের্টিং ও খোয়া উঠে বালু মাটি বের হয়ে যাওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে একেকটি বড় বড় গর্তের। দেখে মনেহয় এটি যেন সড়ক না মিনি পুকুর। এছাড়া সাতধারা ও মধ্য তারিকাটা কাললভার্ট এলাকায়ও রাস্তার কার্পেটিং ও খোয়া উঠে সৃষ্টি হয়েছে বেশ কয়েকটি বড় ধরনের গর্তের। বৃষ্টির পানিতে এসব গর্তে পানি জমে থাকায় দুর্ভোগের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনার কবলে পড়ছেন যানবাহন ও সাধারণ মানুষ। প্রায় এক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে অভ্যান্তরিন রুটের বাস চলাচল। দূরপাল্লার বাসগুলো চলাচল করলেও প্রায় সময় সেগুলো সড়কটি খানাখন্দে আটকে ঘন্টার পর ঘন্টা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আজ রবিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে রয়েছে আমতলী- তালতলী খানাখন্দে ভরা সড়কটির অধিকাংশ। দূর্ঘটনার ভয়ে বড় বড় যানবহনগুলো তেমন একটা চলাচল না করলেও ছোট ছোট গাড়ীগুলো ধীরে ধীরে যাতায়াত করছে। বৃষ্টির পানিতে মিনি পুকুরে পরিণত হওয়ায় এ সড়ক দিয়ে পথচারীদের চলাচল করতেও সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক সময় গাড়ীর চাকায় পানি ছিটে পথচারীদের জামা কাপড় নষ্ট হয়ে যায়।

আড়পাঙ্গাশিয়া বাজারের সরোয়ার হোসেন, মিলন মিয়া নামের দু’জন ব্যবসায়ী বলেন, দু’উপজেলার সেতু বন্ধন এ সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন অভ্যান্তরিন ও দূরপাল্লার বাস- ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রো, মাহেন্দ্রাসহ হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। দু’বছর পূর্বে রাস্তাটি সংস্কার করা হলেও নি¤œমানের খোয়া দিয়ে সংস্কার করায় বর্তমানে সড়কটি বেহালদশায় পরিনত হয়েছে। মাঝেমধ্যে বাস মালিক সমিতির লোকজন ভাঙ্গাচোরা স্থানে নি¤œমানের ইঁট ও পিক বিছিয়ে দিয়ে কোনো রকমে সড়কটির সচল রাখার চেষ্টা করে। তা সপ্তাহ ঘুরে না যেতেই আগের অবস্থার চেয়েও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।

এই সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের একাধিক চালক যাত্রীরা জানান, প্রতিদিন গাড়িতে যাতায়াত করতে ও গাড়ী চালাতে গিয়ে ঝাঁকুনিতে কোমর ব্যাথায় ধরে যায়। জরুরী ভিত্তিতে তারা সড়কটি সংস্কার করার দাবি জানান।

মাহেন্দ্রা চালক বেল্লাল ও কালাম বলেন, দূর্ঘটনার ঝুঁকি মাথায় নিয়েই মিনি পুকুরে পরিণত হওয়া এ সড়কটি দিয়ে আমাদের চলাচল করতে হয়।

যাত্রীবাহী বাস ড্রাইভার আঃ সালাম বলেন, খানাখন্দে ভরা এ সড়কটি দিয়ে গত এক মাস পূর্বে যখন গাড়ী চালাচল করতো তখন প্রায় সময় সড়কের ভাঙ্গা স্থানে গাড়ীগুলো আটকে যেত।

বরগুনা জেলা বাস মিনিবাস মালিক গ্রুপের সভাপতি গোলাম হোসেন কিচলু বলেন, খানাখন্দে ভরা এ সড়কটি সংস্কার করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার মৌখিকভাবে আবেদন জানিয়েছি।

সদ্য যোগদান করা আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমি যেহেতু এখানে নতুন এসেছি। সড়কটির বর্তমান অবস্থা আমার জানা নেই। আমি সবকিছু যেনে নির্বাহী প্রকৌশলীর স্যারের সাথে আলোচনা করে জরুরী ভিত্তিতে সড়কটির সংস্কার করার পরবর্তী ব্যবস্থা নেবো।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)