বরগুনায় ৭১ টেলিভিশনের প্রতিনিধি ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

এ এস এম জসিম
এ এস এম জসিম, বার্তা সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৫:২৫ পিএম, ২৮ জুলাই ২০২২ | আপডেট: ০৫:৩৩ পিএম, ২৮ জুলাই ২০২২

ছবিঃ সংগ্রহীতএকাত্তর টিভি ও রাইজিংবিডির বরগুনা প্রতিনিধি ও বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ইমরান হোসেন টিটুর নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের এর প্রতিবাদে বরগুনায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মামলার সঠিক তদন্তের জন্য ডিআইজি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বরগুনা সাংবাদিক সংগঠনগুলো।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় বরগুনার টাউন হল অগ্নি ৭১ এর সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ২ ঘন্টা ব্যাপী এ মানববন্ধনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানান সাংবাদিকরা।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার প্রধান বাঁধা হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এ আইন দূর্নীতিবাজদের এক শক্তিশালী হাতিয়ার। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগের ফলে অপরাধীদের বিচার না হয়ে উল্টো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। অতিবিলম্বে এ আইন বাতিলের দাবি জানান সরকারের কাছে।চলতি বছরের ১ মার্চ পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ইয়ার উদ্দিন খলিফার মাজারের দুর্নীতি নিয়ে বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ইমরান হোসেন টিটুর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার হয় একাত্তর টিভিতে। মাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও মির্জাগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মল্লিকের ভাগ্নে বাদল (বাক্স বাদল) প্রতিবেদনটি না করার জন্য একাত্তর টেলিভিশনের বরগুনা অফিসে এসে ঘুষ দিতে চায় ইমরান হোসেনকে। পরে ঘুষ দিতে চাওয়ার ভিডিওসহ প্রতিবেদনটি একাত্তর টিভিতে প্রচার হলে বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝড় ওঠে। এরপর এপ্রিল মাসের ৫ তারিখ বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন ঘুষ দিতে আসা বাদল ফকির। এরপর বরগুনা ও পটুয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলার সাংবাদিকরা ইমরান টিটুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে কর্মসূচির ডাক দেন।

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, সাংবাদিক ইমরান হোসেন টিটুকে হয়রানি করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলা করা হয়েছে। এর আগেও এই সাংবাদিক বিভিন্ন দুর্নীতিবাজদের মুখোশ উন্মোচন করেছেন। মামলা করে কখনোই সাংবাদিকদের লেখা বন্ধ করা যায়নি, যাবে না।

বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন ফসল বলেন, সাংবাদিকরা অনিয়ম, দুর্নীতি ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভূমিকা রেখে যাবেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। সরকার শিগগিরই এ আইন বাতিল করবেন বলে আশা করছি। এ আইন বাতিল না হলে বাদল বাক্সের মত দূর্নীতিবাজরা দূর্নীতি করেও পার পেয়ে যাবে।

বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের নিজস্ব প্রতিবেদক মুজিবুল হক কিসলু বলেন, সাংবাদিক টিটুর প্রতিবেদনটি কয়েকবার দেখেছি। প্রতিবেদনে দেখা যায় বাদল বাদল দেখা যায় বাদল টিটু ঘুষ দিতে চাচ্ছে। ঘুষ দিতে চাওয়ার ভিডিওটি প্রতিবেদনে দেখানোয় বাদল মিথ্যা অভিযোগ এনে টিটুর বিরুদ্ধে মামলা দেয়। বজি পুলিশের কাছে অনুরোধ করবো এঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করার।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার শিকার সাংবাদিক ইমরান টিটু বলেন, এই বাদল আমাকে প্রতিবেদন বন্ধ করার জন্য ঘুষ দিতে চেয়েছে, আমি ঘুষ না নিয়ে ঘুষ দিতে চাওয়ার কথোপকথনের ভিডিও যুক্ত করে প্রতিবেদন প্রচার করি। এটা কি আমার অন্যায়? তিনি ঘুষ দিতে চেয়েছেন এটা অন্যায় নয়? আমি তদন্তকারী পুলিশ, প্রশাসন, আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা রাখি। আমি আশা করি, পুলিশ সঠিক তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবে এবং এই মামলা থেকে আমি মুক্তি পাব।

মানববন্ধন শেষে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন সাংবাদিক ইউনিয়ন। বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়ন আয়োজিত এই কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে উপস্থিত ছিলেন বরগুনা রিপোটার্স ইউনিটি, বেতাগী প্রেসক্লাব, পাথরঘাটা উপজেলা প্রেসক্লাব, তালতলী প্রেসক্লাব, তালতলী সাংবাদিক ফোরাম, মির্জাগঞ্জ প্রেসক্লাব, পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সদস্যরা।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)