বাকেরগঞ্জে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীর দুই চোখ খুঁচিয়ে দেওয়ার অভিযোগ

এ এস এম জসিম
এ এস এম জসিম, বার্তা সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৭:০৯ পিএম, ৮ আগস্ট ২০১৮ | আপডেট: ০৭:১০ পিএম, ৮ আগস্ট ২০১৮

বাকেরগঞ্জ পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীর দুই চোখ খুঁচিয়ে দেওয়ার অভিযোগবরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরাদির সন্তোষদী গ্রামে স্ত্রী শাহিনুর বেগমের দুই চোখে চাকু এবং শলাকা দিয়ে দুই কান খুঁচিয়ে নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমের সন্দেহে ডাকাতির ঘটনা সাজিয়ে গত সোমবার (৬ আগস্ট) রাতে স্বামী মাওলানা আব্দুস ছাত্তার তার সহযোগীদের নিয়ে এই কাণ্ড ঘটায় বলে দাবি আহত শাহিনুর বেগমের।

এদিকে কথিত ডাকাতীর ঘটনা বিশ্বাসযোগ্য করতে মাওলানা ছাত্তার নিজের মাথা ফাঁটিয়েছে বলেও দাবি তার স্ত্রীর। মাওলানা ছাত্তার ওই উপজেলার চরাদী ইউনিয়নের সন্তোষদী বাজার জামে মসজিদের ইমাম। এ ঘটনায় শাহিনুরের বোনের দায়েরকৃত মামলায় গত মঙ্গলবার বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অভিযুক্ত মাওলানা ছাত্তারকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

শেরে-ই বাংলা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন শাহিনুর বেগম জানান, গত সোমবার গভীর রাতে ছাত্তার অচেনা একজন পুরুষকে নিয়ে ঘরে আসে। এ সময় ছাত্তারের হাতে থাকা চাকু দিয়ে তার দুই চোখে আঘাত এবং চিরতরে নষ্ট করে দেওয়ার জন্য চাকু দিয়ে তার দুই চোখে খুঁচিয়ে দেয়। অচেনা লোকটি তার হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে। তিনি যাতে কানে শুনতে না পারেন, সে জন্য একটা চিকন শলাকা দিয়ে তার দুই কানে খোঁচাখুঁচি করে। শাহিনুর অনেক আকুতি-মিনতি করার পর এই ঘটনা ডাকাতি বলে চালিয়ে দেওয়ার শর্তে তাকে প্রাণে রক্ষা করে মাওলানা ছাত্তার। এ সময় ছাত্তার নিজেই তার মাথা ফাঁটিয়ে ঘরের দরজা খুলে ডাকাত এসেছে বলে চিৎকার করে। পরে স্থানীয়রা শাহিনুরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এদিকে নিজের অপকর্ম ঢাকতে বাড়িতে ডাকাতির নাটক সাজিয়ে এলাকায় অপপ্রচার চালিয়ে মাওলানা ছাত্তার নিজেও হাসপাতালে ভর্তি হন।

শাহিনুরের বড় বোন হেলেনা বেগম জানান, আশংকাজনক অবস্থায় শাহিনুরকে শেরে-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। শাহিনুরের দুই চোখ ভালো হবে কিনা সে বিষয়ে চিকিৎসকরা তাদের নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, শাহিনুরের চোখে মারাত্মক আঘাত লেগেছে। এ ছাড়া তাকে শারীরিকভাবেও নির্যাতন করা হয়েছে।

অভিযুক্ত স্বামী মাওলানা আব্দুস ছাত্তার বলেন, সোমবার রাত আড়াইটার দিকে তিনজনের একদল ডাকাত তার ঘরে প্রবেশ করে। তিনি ওই সময় ঘরের সামনের কক্ষে ছিলেন। ডাকাতদের মধ্যে দুইজন তাকে বেঁধে মারধর করে। এতে তার মাথা ফেঁটে যায়। ঘরের ভেতরে স্ত্রীর কক্ষে কি হয়েছে তা তিনি দেখেননি।

মাওলানা ছাত্তারের অভিযোগ, তার স্ত্রীর সঙ্গে গত ২ বছর ধরে বাকেরগঞ্জের চরআইচা গ্রামের রাব্বির পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে প্রায়ই তাদের দাম্পত্য কলহ হতো। এ ঘটনার জের ধরে রাব্বি এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে উল্টো সন্দেহ করেন তিনি।

বাকেরগঞ্জ থানার ওসি মো. মাসুদুজ্জামান জানান, শাহীনুরের বক্তব্যে অনুযায়ী তার স্বামী এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এটা কোন ডাকাতির ঘটনা নয়। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার বিকেলে শাহীনুরের বড় বোন হেলেনা বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।

ওই মামলার আসামি আব্দুস ছাত্তারকে মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ প্রহরায় হাসপাতালে ছত্তারের চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হওয়ার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/৮ আগস্ট

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)