মনে হয়েছে হলিউডের কাজ করছি: অভিনেত্রী সাবিলা নূর

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ১১:০৪ এএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সাবিলা নূর
ছোটপর্দার অভিনেত্রী তুমুল জনপ্রিয় মুখ সাবিলা নূর। ২০১৪ সালে মডেলিং থেকে অভিনয় জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর অল্পদিনে দর্শকের প্রিয় অভিনেত্রীতে পরিনত হন। গেল রমজানের ঈদে তিনি কাজ করেছেন ১০ নাটকে। এরমধ্যে বেশির ভাগ নাটকই ছিলো দর্শক পছন্দের তালিকায়। গেল ঈদুল আযহাতেও এই তারকা অভিনেত্রীকে দেখা গেছে ১৫ টি নাটকে। ঈদ পরবর্তী ব্যস্ততা ও অভিনয় ক্যারিয়ার নিয়ে সোমবার দুপুরে সাবিলা নূর কথা বলেন

ঈদের পর নিশ্চয় আবার শুটিং শুরু করেছেন?
না, এখনও আমি শুটিং শুরু করিনি। কারণ আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডভাইজিং শুরু হবে। কোন সময় কোন ক্লাস এটা আগে দেখবো তারপর শুটিংয়ে শিডিউল দেব। এখন লেখাপড়ার মধ্যে আছি।
সাবিলা নূর
ঈদে আপনার ১৫ টি নাটক প্রচার হলো। নাটকগুলো দেখেছেন?
আমি নিজের কাজ কোনোটাই পুরোপুরি দেখিনি। তবে সবগুলো একটু একটু করে দেখা হয়েছে। কিন্তু আমার মা এবং বোন সবকাজ মোটামুটি পাঁচ-ছয়বার করে দেখেছেন। প্রতিটি কাজ তারা নিখুঁতভাবে দেখেছেন। আমার ভুল-ত্রুটি তারাই ধরিয়ে দিয়েছেন।

এরমধ্যে তারা কোন নাটকগুলোকে বেশি মার্কস দিলেন?
মাবরুর রশিদ বান্নাহ ভাইয়ের ‘কাঁদবো না’, অপূর্ব ভাইয়ার সঙ্গে ‘লাইফ ইজ বিউটিফুল’, আফরান নিশো ভাইয়ার সঙ্গে ‘সব গল্প রূপকথা নয়’, ‘আমার একটা গল্প বলার শখ’, ইরফান সাজ্জাদ ও শামীম হাসান সরকারের সঙ্গে ‘ফ্রেন্ডস উইথ বেনিফিট’ এই কাজগুলো বেশি ভালো বলেছেন। আমার পরিবার এবং দর্শক দু-দিক থেকেই পজিটিভ রেসপন্স পেয়েছি।

আপনি দর্শক নন্দিত ‘ফ্যাটম্যান ২’-তেও মোশাররফ করিমের সাথে কাজ করেছেন। প্রথম কিস্তি নাকি দ্বিতীয়, কোনটায় বেশি সাড়া পেয়েছেন?
‘ফ্যাটম্যান’-এর প্রথমটাতে ভালো রেসপন্স পেয়েছিলাম। এটা রোজার ঈদে প্রচার হয়েছিল। পরিচালক সাগর জাহান ভাই দ্বিতীয় কিস্তির শুটিং করেছেন অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিয়ে। প্রথমবার কক্সবাজার শুটিং হয়েছিল। টানা সাতদিন পুরো ইউনিট সেখানে ছিলাম। কাজের একটা গতি ছিল। টানা একসপ্তাহ একটা কাজের মধ্যে ছিলাম। দ্বিতীয় কিস্তির জন্য তিন-চারদিন ডেট দিয়েছিলাম, তাও গ্যাপ দিয়ে। এরফাঁকে অন্য নাটকে কাজ করেছি। এবার কাজে আগেরটার মতো গতি ছিলোনা। দোষ হলো, আমি এত কাজের মধ্যে সময় বের করতে পারিনি। ‘ফ্যাটম্যান ২’-তেও রেসপন্স ভালো পেয়েছি। তবে তুলনা করলে, এবারের চেয়ে প্রথমটায় বেশি সাড়া পেয়েছি।

দর্শকের কাছ থেকে পাওয়া কোন ‘নেতিবাচক মন্তব্য’-এ নিজের ভুল শুধরাচ্ছেন?
দর্শকদের কাছ থেকে জেনেছি আমার উচ্চারণে সামান্য কিছু সমস্যা আছে। পরে আমি নিজেও বিষয়টি অনুধাবন করেছি। তবে আমি চেষ্টা করছি এই ভুল শুধরে নেওয়া জন্য। শিগগির এটা কাটিয়ে উঠবো। তবে আগের চেয়ে আমার অভিনয় আরও অনেক উন্নতি হয়েছে এটা দর্শকদের কাছ থেকে জেনেছি।
সাবিলা নূর
এখনতো টেলিভিশনের পাশাপাশি ইউটিউব বা ওয়েবেও নাটক প্রচার হচ্ছে। কোন মাধ্যম থেকে সবচেয়ে বেশি সাড়া পান এখন?
অবশ্যই ইউটিউব থেকে বেশি সাড়া পাই। টেলিভিশনে প্রচার হলে ভালোমন্দ জানাতে পারেনা দর্শক। কিন্তু ইউটিউবে এলে নাটক দেখার পর তারা তাদের ভালো মন্দ জানাতে পারে মন্তব্যের ঘরে। দর্শক বলে দেন কোন কাজটা ভালো হয়েছে, কোথাও ত্রুটি আছে কিনা! সেজন্য ইউটিউবেও চোখ রাখি। কে কি বলছে সেটাও দেখি।

নাটকের ক্ষেত্রে এখন ‘ভিউ’ একটা ফ্যাক্ট। ‘ভিউ’কে কতোটা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন?
ভিউজ গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি না। ভালো কাজের ভিউজ হবে। আবার মন্দ কাজ বুস্ট করে ভিউ বাড়ানো হয়। আমি মনে করে, ভিউজ শুধু দর্শকদের উপর নির্ভর করে না। বিভিন্ন মাধ্যম দিয়েই ভিউজ বাড়ানো হয়।
সাবিলা নূর
আপনার একটা নতুন কাজের নাম বলুন যেটা থেকে নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন?
এটি একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। নাম ‘সাতশো টাকা’। নির্মাণ করেছেন নুহাশ হুমায়ূন। এখানে আমার সহশিল্পী গায়ক প্রীতম। সে আমার খুব ভালো বন্ধু। তার সঙ্গে কাজ করে খুব ভালো লেগেছে। এর গল্পটা খুব ফানি। যখন আমরা শুটিং করছিলাম, হাসি থামাতে পারছিলাম না। এটা গতানুগতিক কমেডি না। আমি একদিনই শুটিং করেছি। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর আইফ্লিক্স-এ এটি প্রকাশ হবে। এটাতে কাজ করে মনে হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের চিত্রনাট্যে কাজ করছি।
সাবিলা নূর
সেটা কেমন?
তাহলে বিস্তারিত বলি। প্রথমত, নূহাশ হুমায়ূনের পরিচালনায় কাজ করে নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে। কারণ, তার কাজের ধরন আমার কাছে অন্যরকম লেগেছে। দ্বিতীয়ত, এর চিত্রনাট্য আমাকে বেশি স্পর্শ করেছে। হলিউডে যে ফরম্যাটে চিত্রনাট্য তৈরি করা হয়, হুবহু ওই ফরম্যাটে ফলো করে চিত্রনাট্য তৈরি করেছিলেন নুহাশ হুমায়ূন। গতবছর আমি আমেরিকা ছিলাম, তখন হলিউডের চিত্রনাট্য দেখেছিলাম এবং এটা নিয়ে একটা কোর্স করেছিলাম। কাজ করতে গিয়ে মনে হয়েছে হলিউডের চিত্রনাট্যে কাজ করছি। এটা টোটালি আমার কাছে নতুন অভিজ্ঞতা।

গত বছর আপনি আমেরিকা ছিলেন কয়েকমাস, কাজ করেননি। এই আড়ালে থাকায় আপনার ক্যারিয়ারে কোনো প্রভাব পড়েছে?
আমি মনে করে আমার ক্যারিয়ারে কোনো প্রভাব পড়েনি। গতবছর কোরবানির ঈদের আগে ফিরেই আটটি নাটকে কাজ করেছিলাম। নিজের কাছে একটু নার্ভাস ছিলাম। আমি আবার পারবো তো! তখন একমাসেই এই কাজগুলো করেছিলাম। ভালো ভালো নির্মাতাদের সঙ্গ পেয়েছিলাম। তখন আমার মনে হয়েছিল, আমার দর্শকরা আমাকে আবার কীভাবে নেবেন! কিন্তু আমি ফিরেই ‘ওয়ার্ম ওয়েলকাম’ পেয়েছিলাম। শুধু দর্শক না, আমার কলিগদের কাছ থেকে ওয়েলকাম পেয়েছিলাম।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)