নান্দাইলে নারী ইউপি সদস্যকে পেটানোর অভিযোগ

এ এস এম জসিম
এ এস এম জসিম, বার্তা সম্পাদক
প্রকাশিত: ০১:১০ এএম, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ | আপডেট: ০৮:২৮ এএম, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

---
ময়মনসিংহের নান্দাইলে মোসা. রোকেয়া (৪৫) নামের এক নারী ইউপি সদস্যের স্বামীকে পেটানোর এক মাস পর জামিনে এসে এবার ওই ইউপি সদস্যকে পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে জামিনপ্রাপ্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সিংরুইল উদং মধুপুর গ্রামে।

গুরুতর আহত অবস্থায় সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজন রোকেয়াকে ভর্তি করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন, রোকেয়ার গলা চেপে ধরায় ও শরীরের বিভিন স্থানে আঘাতের কারণে ব্যাথা ও জ্বর এসেছে।

ঘটনার শিকার মোসা. রোকেয়া উপজেলার সিংরুইল ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর সংরক্ষিত আসনের সদস্য।

ইউপি সদস্য মোসা. রোকেয়া জানান, তার ৪৫ শতক ফসলি জমির মালিকানা দাবি করে প্রতিবেশী মৃত হোসেন আলী ভূঁইয়ার ছেলে মুসা মিয়া, মামুন মিয়া ও আরমান মিয়াসহ তাদের লোকজন। এ ঘটনাটি নিয়ে বেশ কয়েকটি গ্রাম্য সালিসে তাদেরকে ওই জমিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়। কিন্তু সালিস না মেনে দফায় দফায় জমি দখলের চেষ্টা করে তারা। এতে বাধা দিতে গেলে গত ২০ জানুয়ারি তার স্বামী আব্দুল আজিজ ভূঁইয়াকে ব্যাপক মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়। পরে আশঙ্কাজনক তাকে অবস্থায় প্রথমে ময়মনসিংহ ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ অবস্থায় থানায় মামলা হলে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। এ অবস্থায় রোকেয়া আটজনকে অভিযুক্ত করে নান্দাইল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ দুইজনতে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠালে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠান। পরে অভিযুক্তরা সবাই জামিনে মুক্তি পেয়ে ফের ওই জমি দখলের চেষ্টা করে এবং হুমকি-ধমকি দেয়।

শুক্রবার সকালে ওই দখলদাররা জমিতে হাল চাষ করতে গেলে তাতে বাধা দেন রোকেয়া। এতে রোকেয়াকে তারা পিটানো শুরু করে। একপর্যায়ে তার গলায় গামছা লাগিয়ে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়। এই অবস্থায় তার মেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

রোকেয়ার মেয়ে আমেনা বেগম জানান, তার বাবা হাসপাতাল থেকে বাড়িতে এসে এখনো শয্যাশায়ী। এই সুযোগে আরমান মিয়া, মুসা মিয়াসহ অন্যদের নিয়ে জমি দখলে নামে। এ সময় তাদেরকে তার মা বাধা দিলে টেনেহিচঁড়ে ক্ষেতে ফেলে ব্যাপক মারধর করে। মাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তাকেও মারধর করে তারা। এক সময় তার মা ক্ষেতের কাদামাটিতে পড়ে চিৎকার করলে মুসা মিয়া একটি ক্যামারা দিয়ে ভিডিও করে বলে, ‘প্রমাণ রেখে দিলাম, আমরা মারছি এই কথা যাতে বলতে না পারে।’

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মুসা মিয়া জানান, তারা ওই নারীকে মারধর করেননি। ওই নারী তাদের জমি দখলের চেষ্টা করলে বাধা দেওয়ার সময় নিজেই শরীরে কাদামটি মেখে নাটক তৈরি করে। এ ঘটনাটি তারা ক্যামেরায় ধরে রাখা হয়েছে। গত এক মাস আগে নারী সদস্যের স্বামীকে আহত করার ব্যাপারে তিনি বলেন, ওই সময় একটু ধাক্কা দেওয়া হয়েছিল। তবে ব্যাপক কিছু না।

এ ব্যাপারে নান্দাইল থানার ওসি মো. ইউনুস আলী বলেন, ‘ওই নারী সদস্য অভিযোগ দায়ের করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)