পাথরঘাটা থানার একটি চাবি খুলে দিল রহস্যের জাল( ভিডিও)

কাজী রাকিব
কাজী রাকিব, নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪৭ এএম, ২৬ আগস্ট ২০১৯ | আপডেট: ০৯:৫০ এএম, ২৬ আগস্ট ২০১৯

বিষখালী নদীতে জেলেদের জালে উঠে আসে একটি লাশ। মাথাবিহীন শরীরে পচন ধরে। চিনতে পারছিলেন না কেউ। লাশটি নিখোঁজ ফারুকের দাবি করে নিয়ে দাফন করে তার পরিবার। এ ঘটনা জানতে পেরে দাফনের ১৪ দিন পর এক মা থানায় এসে দাবি করেনÑ লাশটি তার ছেলে সোহেলের। রহস্য দেখা দেয় পুলিশের মনেও। অবশেষে লাশের সঙ্গে পাওয়া একটি চাবি দিয়ে ওই নারীর বাড়ির সাইকেলের তালা খুলে গেলে পুলিশও বিষয়টি নিশ্চিত হয়। গতকাল রবিবার দুপুরে পাথরঘাটা থানা পুলিশের কাছে লাশের সঙ্গে আলামত মিলিয়ে শনাক্ত করেন সোহেলের মা লাইলি বেগম। নিহত মো. সোহেল খান বরগুনার সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামের আবদুর রহিম খানের ছেলে। সে বরগুনার গৌরিচন্না টেকনিক্যাল কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। লাইলি বেগম জানান, সোহেল গত ৩১ জুলাই কলেজ থেকে বাড়িতে আসে। দুপুরের ভাত খেয়ে পার্শ্ববর্তী ফুলঝুড়ি মাঠে ফুটবল খেলা দেখতে যায়। পরে আর বাড়িতে না আসায় ১ আগস্ট বরগুনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। এদিকে গত ১০ আগস্ট দুপুর আড়াইটার দিকে বিষখালী নদীর বরগুনা সদর থানার সীমানায় জেলেদের জালে লাশ জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পাথরঘাটা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে বরগুনা সদর থানাকে অবহিত করে। বরগুনা সদর থানার ওসি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ায় পাথরঘাটা থানার ওসি (তদন্ত) সাইদুল ইসলাম আমলে নিয়ে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ওইদিনই বরগুনা হাসপাতাল মর্গে পাঠান। এদিকে মাথাবিহীন ওই লাশের কাপড়চোপড় দেখে পাথরঘাটা উপজেলার রূপধন এলাকার মৃত হাতেম আলী আকনের ছেলে ফারুক আকনের (২৪) বলে দাবি করেন ভাবি রেহানা বেগম ও তার তিন বোন। সে অনুযায়ী পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিয়ে দাফন করেন তারা। ওসি (তদন্ত) সাইদুল ইসলাম বলেন, উদ্ধারের দিন যারা শনাক্ত করেছেন লাশের সঙ্গে পাওয়া আলামতের সঙ্গে তারা কোনো প্রমাণাদি দেখাতে পারেননি। তবে দেরিতে হলেও স্বজনরা সোহেলের লাশ শনাক্ত করেছেন। এ ব্যাপারে অনেকগুলো প্রমাণ দেখাতে পেরেছেন তার মা লাইলি বেগম। পাথরঘাটা থানার ওসি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, নিখোঁজের পর সোহেলের পরিবার বরগুনা সদর থানায় জিডি করেছে। এ কারণে লাশ পেতে তাদের সদর থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা আইন অনুযায়ী সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। নিহত সোহেলের ভগ্নিপতি শাহিন, চাচাতো ভাই রেজাউল কবির অভিযোগ করেন, লাশ পাওয়ার দিনই পাথরঘাটা থানা থেকে সদর থানাকে অবহিত করা হয়। কিন্তু বরগুনা সদর থানায় জিডি থাকার পরও ওসি বিষয়টি আমলে নেননি। বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবির মোহাম্মদ হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা যথাযথভাবেই এগুচ্ছি। কাজে কোনো গাফিলতি করিনি। লাশ দাবি করে দুই থানার দুটি পরিবার। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ করছি।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)