আমতলীতে স্ত্রীকে এসিড মেরে হত্যার হুমকি

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০৯:৫৪ এএম, ১৩ আগস্ট ২০১৮

সংবাদ সম্মেলনে স্ত্রী রিনা বেগমবরগুনার আমতলীতে স্ত্রী রিনা বেগমকে এসিড মেরে হত্যার হুমকি দিয়েছেন স্বামী কাওসার সিকদার।

কাওসার সিকদার আমতলী উপজেলার রায়বালা গ্রামের সোনা মিয়া সিকদারের ছেলে ও রিনা বেগম পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার ছৈলাবুনিয়া গ্রামের জব্বার হাওলাদারের মেয়ে।

রিনা বেগম স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের দাবিতে মারধর করে গর্ভজাত সন্তান নষ্ট করার অভিযোগ এনে মামলা করেন। এখন মামলা তুলে না নিলে এসিড মেরে হত্যার হুমকি দিয়েছেন স্বামী কাওসার সিকদার।

রোববার আমতলী রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে এমন তথ্য জানান রিনা বেগম ও তার পরিবার।

স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ এক লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র দেয়। বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই স্বামী কাওসার স্ত্রীকে তার বাবার বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল ক্রয়ের জন্য ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন।

টাকা অস্বীকার করেন রিনার বাবা জব্বার হাওলাদার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী কাওসার সিকদার স্ত্রী রিনাকে প্রায়ই মারধর করেন।

গত ২২ জুলাই আবারও টাকার জন্য চাপ দেন কাওসার সিকদার। পরে রিনা টাকা এনে দিতে অস্বীকার করায় কাওসার সিকদার ও তার পরিবারের লোকজন রিনাকে বেধড়ক মারধর করে।

একপর্যায়ে কাওসার রিনার পেটে লাথি দিলে তার রক্তক্ষরণ হয় এবং চার মাসের গর্ভজাত সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। পরে রিনাকে চিকিৎসা না করে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে।

রিনার স্বজনরা খবর পেয়ে ওই দিন গভীর রাতে পুলিশের সহযোগিতায় রিনাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

এ ঘটনায় রিনা বাদী হয়ে আমতলী থানায় স্বামী কাওসারকে প্রধান আসামি করে ৭ জনের নামে নারী নির্যাতন দমন ও যৌতুকের দাবিতে মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়েরের পর থেকে কাওসার ও তার পরিবারের লোকজন রিনা ও তার পরিবারকে মামলা তুলে নিতে অব্যাহতভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।

মামলা তুলে না নিলে এসিড মেরে হত্যার হুমকি দেয় তারা। সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন রিনা ও তার স্বজনরা।

পুলিশকে জানালেও তারা কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। উল্টো পুলিশ এ মামলার আসামিদের সঙ্গে সখ্য করে তাদের সহযোগিতা করেছে। আসামিরা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘোরাফেরা করলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ রিনার পরিবারের।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মো. হারুন অর রশিদ বলেন, রিনাকে রাতে রক্তক্ষরণাবস্থায় ভর্তি করা হয়। রিনাকে মারধরে গর্ভজাত সন্তান নষ্ট হয়ে গেছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাদবচন্দ্র দে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। আমি আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।

আমতলী থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন মিলন বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার বিজয় বসাক পিপিএম বিপিএম বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। বাদী আমার কাছে আসলে মামলার বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/১৩ আগস্ট

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)