বামনায় নৌকার পাল ছিড়তে বেপরওয়া আওয়ামী নেতারা

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০৭:১৩ পিএম, ২৪ মার্চ ২০১৯

দুই প্রতিদন্ধি প্রার্থী৫ম উপজেলা পরিষদের চতুর্থ ধাপের নির্বাচন আগামী ৩১ মার্চ। এ নির্বাচনে ঘিরে বরগুনার বামনায় চলছে নানান রকমের কৌশল। বর্তমান আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে হারাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতারা মরিয়া হয়ে উঠেছেন। প্রকাশ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী সভায় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়ে বক্তব্য রাখছেন ও গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন।

বরগুনার বামনায় উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্য ৫৪৯৫৩ জন। এই ভোটারদের উপর ভিত্তি করে এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম লিটু মৃধা।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দোয়াত কলম প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বামনা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সৈয়দ মানজুরুর রব মতুর্যা আহসান।

দুজন প্রার্থীর ইতিপূর্বে অনেক নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভের ইতিহাস রয়েছে। আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাইতুল ইসলাম লিটু এক নাগারে তিনবার উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছারাও তিনি বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।

অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যক্ষ সৈয়দ মানজুরুর রব মতুর্যা আহসান প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তাই পঞ্চম উপজেলা পরিষদের চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে বামনা উপজেলায় দুই প্রার্থী বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে। দুজনেরই জনসমর্থনের ঘাটতি নেই। তাই নির্বাচনী ফলাফলে কে জিতে আর কে হারে এ এই পরিসংখ্যান মিলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ভোটার ও কর্মীরা।

তবে এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে আওয়ামী লীগের একাংশ সহ উপজেলার চারটি ইউনিয়নের তিনটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এখন একাট্টা হয়েছে। নৌকা ডুবাতে তারা এখন মরিয়া হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে সভা ও গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। ফলে সরকার দলীয় সাধারণ ভোটাররা পরেছেন বিপাকে। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিভিন্ন সভায় দলীয় স্লোগান দেয়ায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রীয়া জানিয়েছেন সরকার দলীয় প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকরা।

সরকার দলীয় প্রার্থীর এক সমর্থক মো. হেলাল হাওলাদার বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী তিনি একসময় বিএনপি করতেন। এই প্রার্থীর পক্ষে আওয়ামী লীগের কিছু নেতা বক্তব্য দিতে উঠে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দেয়। এটা মেনে নেয়া যায়না। প্রার্থী যদি দলীয় বিদ্রোহী হতো তাহলেও মানা সম্ভব হতো। একজন বিএনপির আদর্শের প্রার্থীর মঞ্চে দলীয় শ্লোগান দেওয়াকে আমি প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

এদিকে কেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে হারাতে প্রকাশ্যে নৌকার বিপক্ষে দোয়ত কলম প্রতীকে ভোট চাইছেন তিন ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের একাংশের নেতারা এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি মোশাররফ হোসেন জমাদ্দার এক সভায় বলেন, আওয়ামীলীগ প্রার্থী দুর্নীতি গ্রস্থ্য, তিনি জনগনকে টিউবঅয়েল দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছেন কিন্তু দেয়নি। তাই জনগনকে ন্যায্য পাওনা দেয়ার জন্য তারা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

এব্যাপারে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মানজুরুর রব মতুর্যা আহসান বলেন, সরকার দলীয় প্রার্থী বিভিন্ন সময়ে নির্বাচনী আচারণ বিধি লঙ্ঘন করে আসছেন। আমার সমর্থক ও ভোটারদের ভয়ভীতী প্রদর্শন করছেন এবং প্রকাশ্যে তারা আমাকে ও আমার সমর্থকদের নিয়ে বিভিন্ন সভায় অশালিন বক্তব্য দিচ্ছে।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাইতুল ইসলাম লিটু বলেন, আওয়ামী লীগের যে নেতারা দোয়াত কলমের পক্ষে নেমেছেন তারা কখনো আওয়ামীলীগ করতে পারেনা। এরা সব সময়ই সুবিধাবাদী শ্রেণীর লোক। জনগণ তাদের ভালো করে চিনেন। এদেরর বিরুদ্ধে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী ৩১ তারিখ নির্বাচনে সকল ষরযন্ত্র ভেঙ্গে নৌকার বিজয় হবে আশা করি।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)